ময়মনসিংহের ত্রিশালের পৌর এলাকায় ট্রাকের চাপায় গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা শিশুকে আপাতত ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকা দিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে একমাস সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বোর্ডের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রফিকুল ইসলাম। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।
এর আগে গত ১৬ জুলাই আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ময়মনসিংহের ত্রিশালের পৌর এলাকায় যান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (২৬)। সঙ্গে ছিল স্বামী ও মেয়ে। এদিন দুপুরে ত্রিশালের পৌর এলাকার দরিরামপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ময়মনসিংহগামী মালবাহী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিন জন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন—ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), তার স্ত্রী রত্না বেগম (২৬) ও আড়াই বছর বয়সী মেয়ে জান্নাত আরা।
ট্রাকের চাপায় রত্নার গর্ভে থাকা সন্তান বের হয়ে আসে। নির্মমভাবে জন্ম নেওয়া শিশুটির অবস্থাও আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে তার বৈধ অভিভাবক দাদার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে সরকারি শিশু নিবাসে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত ১৮ জুলাই ট্রাকের চাপায় গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা শিশুর জীবনযাপনের সারা জীবনের খরচ রাষ্ট্র বহন করবে- এমন নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন এই রিট দায়ের করেন।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ জুলাই শিশুর পরিবারকে আপাতত ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিশুটিকে দেখাশোনার জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন আদালত।
পরে গত ৪ আগস্ট শিশুকে আপাতত ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকা দিতে তিন মাস সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড।