তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বর্তমান বিশ্বের যে দেশ দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে পারবে না, তারা আগামী দিনে পিছিয়ে পড়বে। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি) ওয়ার্ল্ড ফাইনালসের ‘স্পন্সর নাইট’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইসিটি বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহিদুল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
জাপান কিংবা দক্ষিণ কোরিয়া খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তোলার কারণে বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সেই লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প পূরণের পর নতুন একটি রূপকল্প দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্বোধনী, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে। যে বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম সমস্যা সৃষ্টিকারী না হয়ে সমাধানকারী প্রজন্ম হবে। সে জন্যই আমরা দেশে একটি উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং কনটেস্ট শুরু করেছি।
আগামী ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবসে আরও পাঁচ হাজার ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আইসিপিসি ঢাকার চূড়ান্ত পর্বে পৃষ্ঠপোষকতার জন্য করপোরেট প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান পলক।
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল কবির। তিনি জানান, আগামী ৬ থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় বসবে এবারের আসর। এই আসরে বাংলাদেশের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্বের ৭৫টিরও বেশি দেশ থেকে ১ হাজার ৪০০ বিদেশি শিক্ষার্থী অংশ নেবেন বলে আশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ ও বাংলাদেশ কম্পিউার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার। এ ছাড়া আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. বিল পাউচার অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
অন্যদের মধ্যে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করা হয় বাংলাদেশে আইসিপিসির প্রবর্তক খ্যাতিমান প্রকৌশলী প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরীকে।
উল্লেখ্য, আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের সহযোগিতায় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ‘ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’ (আইসিপিসি) ফাইনালস বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা হলো বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দ্বারা পরিচালিত একটি বৈশ্বিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। বৈশ্বিক এই প্রতিযোগিতা আইসিপিসি ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত হয়, যার সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বেইলর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত। ১৯৭০ সালের পর থেকে গত চার দশকের বেশি সময় ধরে আইসিপিসি একটি পটপরিবর্তনকারী বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা প্রোগ্রামে পরিণত হয়েছে, যা গণিত, কম্পিউটিং বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলে বিশ্বের সমস্যা সমাধানকারীদের আকাঙক্ষা এবং কর্মক্ষমতা অনেক গুণে বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ১৯৯৮ সাল থেকে আইসিপিসিতে অংশ নিচ্ছে এবং গত বছর এশিয়া ওয়েস্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল। বাংলাদেশই এখন এশিয়ার চতুর্থ দেশ, যারা এই ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার ইভেন্টের আয়োজক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
