লক্ষ্মীপুরের মো. তসলিম উদ্দিন নামক এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকের চেক ডিজঅনারের মামলা দায়েরের ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে এ কমিটি গঠন করে আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সাকিব মাহবুব। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রাফিউল ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
এর আগে গত ৩ জুলাই ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা সিসি লোনের বিপরীতে ৪৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার দাবি নিয়ে লক্ষ্মীপুরের ব্যবসায়ী মো. তসলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকের ৮টি চেক ডিজঅনারের মামলা দায়ের করার ঘটনা তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর আবেদন করা হয়। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তসলিম উদ্দিনের মেয়ে তাসলিমা আক্তার এ আবেদন করেন।
ওই আবেদনে বলা হয়, আমার বাবা মো. তছলিম উদ্দিন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর শাখা থেকে মেসার্স সালাউদ্দিন ট্রেডার্সের নামে বিনিয়োগের জন্য আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৯ মে ৪০ লাখ টাকা মঞ্জুরি অনুমোদন করা হয়। লক্ষ্মীপুর বিনিয়োগ শাখার কর্মকর্তার কাছে সিকিউরিটি হিসেবে চেক বইয়ের (আইবিইউ) ১০টি পাতা জমা রাখা হয়। এই ৪০ লাখ টাকার মধ্যে আমার বাবা ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এই টাকা ছাড়া আর কোনও টাকা উত্তোলন করেননি। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্মীপুরের বিনিয়োগ শাখার কর্মকর্তার কাছে জমা রাখা চেকের পাতা ৪টি ডিজঅনার দেখিয়ে আমাদের ঠিকানায় আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তারা ৪৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাওনা দাবি করেন। বিনিয়োগ শাখার কর্মকর্তা অনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে একের পর এক মিথ্যা কাল্পনিক ঘটনা দেখিয়ে ৭টি মামলা দায়ের করে।
আবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে ইসলামী ব্যাংকের, লক্ষ্মীপুর শাখার বিরুদ্ধে ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা সিসি লোনের বিপরীতে ৪৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দাবি নিয়ে ৭টি নিরাপত্তা বা সিকিউরিটি চেক ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর শাখার ব্যাংক ম্যানেজার কর্তৃক মেসার্স সালাউদ্দিন ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ৭টি মামলা দায়ের করে ৪৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার দাবির বিষয়টি তদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আবেদন করেছি।
তবে ওই আবেদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগীর মেয়ে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিলেন।