দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা সেবা নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি সারা বিশ্বে নজির সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবহিতকরণ ও মতবিনিময় কর্মশালায় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এই কার্মসূচি অত্যন্ত গর্বিত কার্যক্রম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর কাছে পুস্তক পৌঁছে দিচ্ছেন, যা সারা বিশ্বে গর্বিত নজির সৃষ্টি করেছে। এই স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচিও সারা বিশ্বের কাছে এ রকম গর্বিত নজির সৃষ্টি করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে এ ধরনের সুরক্ষা কর্মসূচি চালু করা দ্বিতীয় দেশ হিসেবে উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘আমার জানামতে শুধু যুক্তরাজ্য ছাড়া এই কর্মসূচি সারা বিশ্বে আর কোনও দেশে নেই। ইউকে-তে ইউনাইটেড ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অধীনে যেকোনও বয়সের মানুষ এই স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে উন্নত বিশ্বের কোথাও সর্বজনীনভাবে সব জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় নিয়ে আসা হয় না। সেটা সারা বিশ্বে নজিরবিহীন। বাংলাদেশ দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নজির সৃষ্টি করতে যাচ্ছে।’
স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস কারার কারণে সরকারি হাসপাতাল হোক বা বেসরকারি হাসপাতাল হোক, তাদের সেই আর্থিক সচ্ছলতা নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার মতো কোনও সক্ষমতা নেই। সেই অক্ষম, দুর্বল জনগোষ্ঠী যাতে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পায়, সে জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। সে জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য সামনে রেখে নতুন করে তালিকা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি চালুর লক্ষ্যে আপনারা আড়াই লাখ লোকের তালিকা প্রস্তুত করেছেন। আপনারা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হয়তো এই তালিকা প্রণয়ন করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি, প্রস্তুতকৃত তালিকা কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য অনুযায়ী করা হয়নি। সে জন্য প্রকৃত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে আপনারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের কাউন্সিলরদের এই কাজে সম্পৃক্ত করুন। কাজ আপনাদের লোকই করবে কিন্তু কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করলে যথাযথ লোককে আমরা তালিকাভুক্ত করতে পারবো। এ ছাড়া জাতীয় গণশুমারির তথ্য থেকে প্রকৃত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য নিন। তাহলেই কেবল কর্মসূচি প্রকৃত উদ্দেশ্য যথাযথভাবে সফল হবে।’
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পরিচালক (গবেষণা) ড. সৈয়দা নওশীন পর্ণিনী, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের উপপরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি বিষয়ক উপস্থাপনায় অংশ নেন।
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে করপোরেশনের কাউন্সিলররা, সচিব আকরামুজ্জামান ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা অংশ নেন।