বিদ্যার দেবীর আরাধনায় উৎসবমুখর পরিবেশে নানা আয়োজনে পুরান ঢাকায় উদযাপিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব সরস্বতী পূজা। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাচ্ছেন পুরান ঢাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সরস্বতী পূজার আনুষ্ঠানিকতা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে হিন্দুপ্রধান এলাকা শাঁখারীবাজার, বাংলাবাজার ও তাঁতীবাজারের মণ্ডপগুলোতে ভিড় করতে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিদ্যা-বুদ্ধি বিকাশের জন্য দর্শনার্থীরা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
এ বছর শাঁখারীবাজারে ১৬টি, তাঁতীবাজারে ১০টি ও বাংলাবাজারে ৮টি মণ্ডপ স্থাপন করা হয়। পুরান ঢাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়েছে। যাদের পূজা আয়োজনের জায়গা সংকট ছিল, তারা রাস্তায় মণ্ডপ বসিয়ে আরাধনা করেন। প্রতিটি মণ্ডপে দেবীর অর্চনা, পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন মণ্ডপে দেবীর সামনে অঞ্জলি দিয়ে ছোট শিশুদের বিদ্যাচর্চার হাতেখড়ি হয়।
শাঁখারীবাজারে একটি মণ্ডপের আয়োজক শুভ রায় বলেন, 'শাঁখারীবাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় আচারের জন্য সবসময় বিখ্যাত। পুরান ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অনেক মানুষ মণ্ডপ দেখতে আসছেন।'
শাঁখারীবাজারে মণ্ডপ দেখতে আসা অনিক ব্যাণার্জি বলেন, 'সরস্বতী বিদ্যার দেবী, দেবীর কৃপা পেলে আমাদের জ্ঞান বাড়বে, তাই দেবীর সন্তুষ্টির জন্য প্রার্থনা করছি।'
পুরান ঢাকায় সবচেয়ে বড় আয়োজন করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিভিন্ন বিভাগের আয়োজনে মোট ৩৬টি মণ্ডপ বসেছে। দিনভর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার পর সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস এলাকায় ঢল নামে দর্শনার্থীদের। সন্ধ্যা থেকে পা ফেলার জায়গা ছিল না ক্যাম্পাস এলাকায়।
মণ্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা হয়েছে। ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল বিভিন্ন এলাকায়।