X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেই চলেছে: আসক

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩১ মার্চ ২০২৩, ১৪:৫২আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৪:৫২

প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। শুক্রবার (৩১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করে সংগঠনটি।

আসকের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান সই করা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতির পরিসংখ্যানগত পর্যালোচনায় দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, জোরপূর্বক অপহরণ ও রহস্যজনক নিখোঁজ, রাজনৈতিক সহিংসতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নির্যাতন, সীমান্তে হত্যা, সাংবাদিক নিপীড়নসহ বহুল সমালোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে মুক্তচিন্তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা প্রদানের মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হামলা ও বাধা প্রদানের ঘটনা ঘটেছে। এর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা ছিল উল্লেখ করার মতো। বিশেষত গত ১২ ফেব্রুয়ারি (২০২৩) কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে গণরুমে নেত্রীদের কথা না শোনার অভিযোগ তুলে এক শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন চালানোর ঘটনা ছিল নিষ্ঠুর ও অমানবিক।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার দুই ছাত্রকে হাসপাতালের আইসিইউতে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের এক ছাত্রকে হলের একটি কক্ষে আটকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি, মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা গুরুতর। ছাত্রলীগের মতো প্রাচীনতম একটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের এমন ন্যাক্কারজনক আচরণ সংগঠনের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে।

র‌্যাব ও সুলতানা জেসমিন

এ সময়ে র‌্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা ছিল বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার নিকৃষ্ট উদাহরণ। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বেআইনি আটক, নির্যাতনের অভিযোগগুলোর যথাযথ প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে জনমানুষের মধ্যে সৃষ্ট ধারণা বিস্তৃত হচ্ছে।

গণমাধ্যম ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা হামলা মামলার শিকার হচ্ছেন। বিশেষত প্রথম আলোর সাভার প্রতিনিধি শামসুজ্জামানকে সিআইডি পরিচয়ে ভোর রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং দিনভর তাকে আটকের ঘটনা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে অস্বীকার করার মধ্যে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায়োগিক আচরণ যে অসঙ্গত ও বেআইনি তা প্রতীয়মান হয়েছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদককে ভোর রাতে বিনা পরোয়ানায় তুলে নিয়ে আটক রাখার মতো অপতৎপরতা এই ধরনের হয়রানিমূলক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে। এ ধরনের নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের অভিযোগ সাতক্ষীরা জেলায় কর্মরত সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে আটকের সময়ও পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছিল। রঘুনাথ খাঁকে আটকের পর পুলিশ দিনভর অস্বীকার করে, প্রায় ৯ ঘণ্টা পরে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখায়। এছাড়াও গুলশানের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ সংগ্রহকালে দৈনিক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক জহিরুল ইসলামকে গুলশান থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করে।

বহুল আলোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নিরোধ করে তুলতে প্ররোচিত করবে। এ ধরনের পদক্ষেপ প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত করবে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এখানে আইনমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা গ্রহণের পূর্বে বিশেষ সতর্কতা বজায় রাখার যে অঙ্গীকার করেছিলেন, তার প্রতিফলন এ ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না। বরং উচ্চ পদস্থ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রথম আলোর প্রতিবেদক এবং সম্পাদক সম্পর্কে নানা মন্তব্য এ ধরনের মামলা দায়ের করতে অতিউৎসাহীদের অনুপ্রাণিত করছে বলে মনে হচ্ছে। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের আটক ও সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা হতে যাচ্ছে। এ খবর আমরা পেয়েছি।  এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত লক্ষ করা যায়। যা আমাদের বিস্মিত করেছে।

আসকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাংবাদিক ও সকল মুক্তচিন্তা চর্চাকারীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হোক। ইতোমধ্যে এই আইনটি নিবর্তনমূলক আইন হিসেবে সকলের কাছে প্রতিপন্ন হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) শুরু থেকেই বিতর্কিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করার জোর দাবি জানিয়ে আসছে।

সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানি

গত তিন মাসে ৫৬ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।

পঞ্চগড়

অন্যদিকে, এ সময়কালে, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আলোচনা সভায় হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার মতো ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তুলে মোট জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে কমপক্ষে ১০৩টি বাড়ির ২৫৯টি ঘর হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের হামলা অবিবেচনা প্রসূতই নয় অগ্রহণযোগ্যও বটে।

নারায়ণগঞ্জ

বিগত তিন মাসে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে র‌্যাবের গুলিতে আবুল কাসেম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে এবং অভিযোগ নিষ্পত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি রাখে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে অনেক সময় বলা হয় বাহিনীতে কর্মরত যে কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উত্থাপন হলে তা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হয়। এ ধরনের বিষয়ে যদি যথাযথ তদন্ত করা হয় তাহলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে কিংবা ইতোপূর্বে নিয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য কিন্তু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। নিজ বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিজেদের তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য কিংবা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে না। কাজেই প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা আবশ্যক।

অন্যদিকে এ সময়কালে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবা-মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর ও গাজীপুর জেলায়। রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কিংবা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার কারণে যারা আটক বা গ্রেফতার হচ্ছেন, তাদের প্রতি এ ধরনের আচরণ শিষ্টাচারবহির্ভূত। একই সাথে মানবাধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থি।

রাজনৈতিক সহিংসতা

জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে, বিগত তিন মাসে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১০২টি। এতে নিহত হয়েছেন ৬ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩৭৪ জন।

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে মৃত্যু

গত তিন মাসে দেখা গেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ জন পুলিশের হাতে এবং ২ জন র‌্যাবের নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে র‌্যাব ও পুলিশের শারীরিক নির্যাতনে ২ জন এবং র‌্যাবের গুলিতে ১ জন নিহত হন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ

পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ অনুযায়ী, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ৪ জনকে অপহরণ করার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে পরবর্তী সময় ৪ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবরের মতো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন

বছরের এ সময়কালে ৫টি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩টি বাড়িঘরসহ ১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ১৫টি প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ জন নিহত ও কমপক্ষে ৬২ জন আহত হয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় ১০৩টি বাড়ি ও ৩৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।   

নারীর প্রতি সহিংসতা

গত তিন মাসে যৌন হয়রানিকেন্দ্রিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১০৫ জন নারী-পুরুষ। যাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৪০ জন নারী ও ৬৫ জন পুরুষ। এর মধ্যে বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত ২৮ জন, বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ৬৪ জন। যাদের মধ্যে যৌন হয়রানির কারণে ৮ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটের হাতে ২ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১ জন নারী ও ১ জন পুরুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১২৪ নারী।

ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১২ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১ জন নারী। এছাড়া ৩৪ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ১১৬ জন নারী। এর মধ্যে ৬৮ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩০ জন নারী। এছাড়া শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮ জন নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৩২ জন নারী। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ১৩ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১ জন নারী। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮ জন। এ সময়কালে মোট ৮ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ধর্ষণের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের প্রায় সবকটি জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বগুড়ায় ১০। এরপরই রয়েছে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ, যেখানে ঘটেছে ৯টি করে ঘটনা।

শিশু নির্যাতন ও হত্যা

দেশের বিভিন্নস্থানে গত তিন মাসে মোট ৩৫৩ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ৫২ শিশু এবং ১ জন ছেলে শিশুকে বলাৎকারের পর হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ২৫ শিশু। বিভিন্ন সময়ে মোট ৪৫ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৩ শিশুর। এছাড়া বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৭ ছেলে শিশু এবং বলাৎকারের চেষ্টা করা হয়েছে ৩ জন শিশুকে।

সীমান্ত সংঘাত

সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলি ও নির্যাতনে নিহত হয়েছেন ৫ বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছেন ৬ জন। 

কারা হেফাজতে মৃত্যু

এই সময়কালে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ২৬ জন। এর মধ্যে কয়েদি ১১ জন এবং হাজতি ১৫ জন।

গণপিটুনিতে নিহত

গত তিন মাসে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হন মোট ১১ জন। এরমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন করে এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন নিহত হন।

আসক মনে করে, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যকীয়। অন্যথায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। আসক রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সাথে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

/জেইউ/এমএস/
সম্পর্কিত
মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ চলছেই: আসক
বিএসএফের গুলিতে কিশোর নিহতের ঘটনায় আসকের নিন্দা
তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে কারাদণ্ড: আসকের উদ্বেগ ও নিন্দা
সর্বশেষ খবর
শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
বায়ার্নের নজরে থাকা নাগেলসমানের সঙ্গে জার্মানির নতুন চুক্তি
বায়ার্নের নজরে থাকা নাগেলসমানের সঙ্গে জার্মানির নতুন চুক্তি
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!