বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টসহ সব আদালতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপনের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইনি নোটিশটি পাঠান ঢাকা জজকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ঢাকা শহরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করছে। তাপপ্রবাহ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের শরীরও গরম হয়ে যায়। এর ফলে রক্তনালীগুলো খুলে যায়। এর জের ধরে রক্তচাপ কমে যায়, যে কারণে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করা হৃদপিণ্ডের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কারণে মৃদু কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে ত্বকে ফুসকুড়ি পড়া, চুলকানি এবং পা ফুলে যাওয়া, যা রক্তনালী উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে শরীরে তরল পদার্থ ও লবণের পরিমাণ কমে যায়। গুরুতর ক্ষেত্রে দেহে এ-দুটি জিনিসের মধ্যে যে ভারসাম্য আছে তাতেও পরিবর্তন ঘটে। এসব কিছু একসঙ্গে মিলিয়ে গরমে শরীর পরিশ্রান্ত হয়ে যেতে পারে এবং তার লক্ষণগুলো হচ্ছে- মাথা চক্কর দেওয়া, বমি বমি ভাব, নিস্তেজ হয়ে পড়া, মূর্ছা যাওয়া, কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়া, পেশি সংকুচিত হওয়া, মাথাব্যথা, প্রচণ্ড ঘাম হওয়া, ক্লান্তি, আর রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এসব কারণে ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’(সিডিসি) মানুষকে বিভিন্ন গাইডলাইন দেওয়ার পাশাপাশি যথাসম্ভব শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
বর্তমানে এই তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী ও বিজ্ঞ বিচারকরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। ঢাকা জজকোর্টের কোর্টগুলোর আয়তন খুবই ছোট এবং বিপুল সংখ্যক বিচার প্রার্থীদের ভিড়ে অধিকাংশ কোর্টের এজলাস গিজগিজ করে। একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ, অপরদিকে ছোট আয়তনের কোর্টের এজলাসে বিপুল সংখ্যক বিচার প্রার্থীর ভিড়, সবমিলিয়ে বিজ্ঞ আইনজীবী ও বিজ্ঞ বিচারকরা অত্যন্ত কষ্টে তাদের আইনি দায়িত্ব পালন করেন।
এমতাবস্থায় এই তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী ও বিজ্ঞ বিচারকদের জীবন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য ঢাকা জজকোর্টের সব আদালতে অবিলম্বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপন করা অত্যাবশ্যক। যদিও ঢাকা জজকোর্টের মাত্র কয়েকটি কোর্টে যেমন বিজ্ঞ সিএমএম, জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও মহানগর দায়রা আদালত কোর্টে এসি আছে। তথাপি এই তীব্র তাপপ্রবাহে ঢাকা জজকোর্টের সব আদালতে অবিলম্বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপন করা আবশ্যক।
নোটিশে আরও জানানো হয়, উক্ত আইনি নোটিশ পাওয়ার ৩ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা জজকোর্টের সব আদালতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) লাগানোর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।