ভারতীয় মৎস্যজীবীদের নির্যাতন ও লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ করেছেন, তা ভিত্তিহীন বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের কারা কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদ লিপিতে কারা অধিদফতরের সহকারী মহাপরিচালক মো. জান্নাত-উল-ফরহাদ এ কথা বলেন।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় ‘ভারতীয় মৎস্যজীবীদের লাঠি দিয়ে মেরেছে বাংলাদেশ, বলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়’ শিরোনামে প্রচারিত সংবাদের প্রতি কারা অধিদফতরের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। এই সংবাদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। যেখানে তিনি বক্তব্যে কয়েকজনের খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা, মোটা লাঠি দিয়ে মারধর করা, দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা এবং চিকিৎসা না করানোর কথা উল্লেখ করেছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, গত ২ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা কারাগার থেকে ৩১ জন এবং বাগেরহাট জেলা কারাগার হতে ৬৪ জন জেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়। জেলেদের মুক্তি পাওয়ার ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। হস্তান্তরকালে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় নাগরিকরা কারাগারে নির্যাতনের কোনও অভিযোগ করেননি। সব বন্দিকে কারাগার থেকে হস্তান্তরকালে সুস্থ অবস্থায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সহকারী সার্জনের মাধ্যমে তাদের সুস্থতার উপযুক্ত সনদ প্রদান করা হয়। কারাগারে তারা ভালো ব্যবহার, সুচিকিৎসা পেয়েছেন এবং বাংলাদেশি বন্দিদের সঙ্গে সমঅধিকারে ছিলেন মর্মে জানিয়েছেন। এমনকি অনেকে এক পোশাকে আগমন করায় কারা কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শীত বস্ত্রসহ সব ধরনের পোশাক সরবরাহ করেছে। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘নিউজবাংলা’ মিডিয়ায় প্রচারকালে সাক্ষাৎকারে একজন বন্দি জেলে জানান, কারাগারে তাদের কোনও নির্যাতন করা হয়নি। সুতরাং, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উত্থাপিত অভিযোগ সত্য নয়।
প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ জেল সব সময় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব বন্দির প্রতি সমান আচরণ করে থাকে। বিদেশি বন্দিদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে বিশেষ খেয়াল রাখা হয়। কারাগারে সব ধর্মের বন্দিদের যার যার ধর্মীয় উৎসব ও রীতি পালনের সুযোগ দেওয়া হয় এবং বিশেষ উৎসবে সব বন্দিকে বিশেষ খাবারও পরিবেশন করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের একটি সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কারা অধিদফতর প্রকাশিত সংবাদে উত্থাপিত অসত্য অভিযোগের জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা আশা করছি, সবদায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান সংবেদনশীল বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে তাদের উত্থাপিত তথ্য বা বক্তব্যের সঠিকতা নিশ্চিত করবেন, যা দু'দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।