আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে নাগরিকদের প্রতি বেশকিছু নিরাপাত্তা পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঈদে যারা বাড়ি যাবেন, তারা ঈদের আগে ও পরে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে পারেন। এতে ট্রেন, বাস, লঞ্চ ও ফেরিঘাটের শেষ মুহূর্তের ভীড় এড়ানো সহজ হবে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও স্টিমারের ছাদে এবং ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে এবং হাইওয়েতে নসিমন, করিমন, ভটভটি ইত্যাদি যানবাহনে চলাচল পরিহার করতে বলা হয়।
চালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ না দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালক যাতে গাড়ি না চালায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়।
দুর্ঘটনাকবলিত নৌযান শনাক্ত করার লক্ষ্যে নৌযান মালিকরা নৌযানগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট লম্বা দড়ি সংবলিত বয়া এবং লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
হাইওয়েতে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি না চালাতে এবং যাত্রাপথে অপরিচিত কারও সঙ্গে কোনও যানবাহনে শেয়ারে চড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
যাত্রাপথে বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও লঞ্চ ঘাটে অপরিচিত কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে কোনও খাবার গ্রহণ না করা এবং হকার বা ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কোমল পানীয়, ডাব, শরবত বা অন্য কোনও খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
যাত্রাপথে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ প্রতারক চক্রের বিষয়ে সতর্ক থাকাসহ কাউকে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি বা প্রতারক চক্রের সদস্য সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ পুলিশকে খবর দিতে কিংবা ৯৯৯ এ কল করতে বলা হয়েছে।
আশেপাশের যাত্রীদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা এবং কেউ কোনও বিপদে পড়লে তাকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে।
ট্রাক, লঞ্চ, নৌকায় বা ট্রলারে অতিরিক্ত পশু বোঝাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহাসড়কের ওপর এবং রেললাইনের পাশে কোরবানির পশুর হাট বসাতে নিষেধ করা হয়েছে।
পশুর হাটে নির্ধারিত হারে হাসিল পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। কেউ অতিরিক্ত হাসিল অথবা চাঁদা দাবি করলে নিকটস্থ পুলিশকে জানাতে হবে।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পশুর চামড়াবাহী যানবাহন সীমান্তমুখী হলে সেগুলো পাচার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ধরনের সন্দেহজনক ক্ষেত্রে বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানাতে বা ৯৯৯ এ কল করতে বলা হয়।
পশুবাহী পরিবহনের সামনে পশুর গন্তব্যস্থান, পশুর হাটের নাম লিখে ব্যানার টানিয়ে রাখতে বলা হয়। পশুর হাটে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
বড় অঙ্কের নগদ অর্থ বহনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা (মানি এস্কর্ট) নিতে বলা হয়।
জাল টাকা সংক্রান্তে সতর্ক থাকতে এবং এ সংক্রান্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। কোনও নোট জাল সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্ত পুলিশকে জানাতে বলা হয়।
বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, নগদ ইত্যাদিতে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে এবং কোনও অবস্থাতেই এ ক্ষেত্রে গোপন পিন নম্বর কারও সঙ্গে শেয়ার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
শপিংমল ও মার্কেটের নিরাপত্তায় সিসিটিভি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরসহ অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বলা হয়।
প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুম ০১৩২০০০১৩০০, ০১৩২০০০১২৯৯, হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৮২৫৯৮, রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৭৭৫৯৮, নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৬৯৫৯৮, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ০১৭৭৭৭২০০২৯ নম্বরে এবং জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়।