যৌতুকের মিথ্যা অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করায় স্ত্রী ইসরাত জেরিন খান প্রথমাকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১ জুন) ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত এ রায় দেন। তবে আপিলের শর্তে তিনি জামিন পেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে যৌতুকের মামলা করায় গত ২৪ মে আসামি ফরিদকে খালাস দেওয়া হয়। ওই দিন ইসরাত জেরিন খান প্রথমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। রবিবার (১ জুন) তিনি জবাব দাখিল করেন। তবে জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আদালত মামলার বাদীকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। একই সময়ে বাদী আপিল দায়েরের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে তাকে জামিন দেন।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ইসরাত জেরিন খান প্রথমা স্বামী ফরিদ আহমদকে আসামি করে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদ ও প্রথমা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের সময় প্রথমার পরিবার ১০ লাখ টাকার স্বর্ণ এবং আসবাবপত্র বাবদ নগদ ১০ লাখ টাকা আসামিকে প্রদান করে। চাকরির সুবাদে ফরিদ আহমদ ফ্রান্সে চলে যান। প্রথমাকে বাবার বাড়িতে রেখে যান। কাজী নিপা নামে এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় ফরিদ। পরে বিষয়টি প্রথমা তার শ্বশুর আমিনুল হককে জানান। তখন তার শ্বশুর বিশেষ প্রয়োজনে ৫০ লাখ টাকা চান। কীসের টাকা জানতে চাইলে বলেন, যৌতুকবাবদ টাকা। প্রথমা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমিনুল হক তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন।
বিষয়টি প্রথমা তার স্বামীকে জানান। ফরিদও তার বাবার পক্ষ নেন। টাকা না দিলে নিপাকে বিয়ের হুমকি দেন। প্রথমা তার শ্বশুর বাড়িতে ফিরতে চান। তবে টাকা না দিলে ফিরতে পারবেন না মর্মে জানিয়ে দেন তার শ্বশুর এবং স্বামী।
২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি ফরিদ বাংলাদেশে আসেন। প্রথমা তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চান। তবে ফরিদ অস্বীকৃতি জানান। পরে প্রথমার খালার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া বাসায় তারা দেখা করেন। সেখানে এসে ফরিদ প্রথমার কাছে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। না হলে অন্যত্র বিয়ে করার হুমকি দেন। প্রথমা যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফরিদ তাকে মারধর করে সেখান থেকে চলে যান।