হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার রাজধানীর অন্যতম জনপ্রিয় গরুর হাট আফতাবনগর হাট বসছে না। আগে এই হাটটি বিশাল এলাকায় জমে উঠতো, যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত থাকতো পুরো এলাকা। তবে এবার সেই চিত্র ভিন্ন। বিকল্প হিসেবে মেরুল বাড্ডার কাঁচাবাজারের পাশে সীমিত পরিসরে কোরবানির পশুর হাট বসেছে, কিন্তু এখনও তেমনভাবে জমে ওঠেনি। অল্পসংখ্যক গরু এলেও বিক্রেতারা রয়েছেন ক্রেতার অপেক্ষায়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে মেরুল বাড্ডা কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে গরুর সংখ্যা কম এবং ক্রেতাও খুব একটা চোখে পড়ছে না।
নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী শামিম ১৭টি গরু নিয়ে এসেছেন। এখনও একটি গরুও বিক্রি হয়নি বলে তিনি জানান। কিছুটা হতাশার সুরে তিনি বলেন, ‘আগে আফতাবনগর হাটে গরু বিক্রি করেছি, ভালোই ব্যবসা হয়েছিল। এবার পরিবেশ একেবারেই আলাদা। তবে এখনই হাল ছেড়ে দিচ্ছি না, সময় তো আছে।’ দেড় থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে দামের গরু এনেছেন তিনি।
অন্যদিকে, কুমিল্লার আনোয়ারা ডেইরি ফার্ম থেকে তিনটি বড় গরু নিয়ে এসেছেন নুরুল আমিন। তার গরুগুলোর দাম ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে। এখনও কেউ সরাসরি দাম বলেনি, তবে তিনি আশাবাদী—সবগুলো গরুই বিক্রি হবে। তিনি জানান, ‘আমরা অনলাইনেও প্রচার চালাচ্ছি। কিছু প্রস্তাব পেয়েছি, কিন্তু মনমতো দাম না হওয়ায় এখনো গরু বিক্রি করিনি।’
জামালপুর থেকে আসা বিক্রেতা রবিউল ইসলাম জানান, তিনি ১৫টি গরু এনেছেন, কিন্তু এখনও কোনও গরু বিক্রি হয়নি। মাঝারি আকৃতির এসব গরুর দাম ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে। ‘আগের হাট থাকলে হয়তো বিক্রি হতো, এখন শুধু অপেক্ষায় আছি’, বলেন তিনি।
একই এলাকা থেকে এসেছেন জামাল বাদশা। তিনি জানান, গত রবিবার (১ জুন) ২০টি গরু নিয়ে এসেছেন, কিন্তু এখনও একটিও বিক্রি হয়নি।
হাটে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। বনশ্রী থেকে আসা সেলিম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এখনও গরু কেনা হয়নি, দেখছি—পছন্দ হলে কিনবো।’ আগে হাট অনেক বড় জায়গাজুড়ে বসতো, এখন জায়গা ছোট হওয়ায় গরুর সংখ্যাও কম। তবে সব আকৃতির গরুই রয়েছে বলে জানান তিনি। তার মতে, গরুর দামও খুব একটা বেশি নয়, সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।
হাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও সন্তোষজনক। পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নজরদারিতে রয়েছেন।
হাটের ইজারাদার মাহমুদুল হাসান শাহিন বলেন, ‘এখানে জায়গা তুলনামূলকভাবে কম, তবে আমরা চেষ্টা করেছি ব্যাপারিদের থাকার মতো ব্যবস্থা করতে। আরও গরু আসছে হাটে। ছোট, মাঝারি ও বড়—সব ধরনের গরুই আছে। সময় যেহেতু হাতে আছে, আশা করছি সব গরুই বিক্রি হয়ে যাবে।’