তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হোটেল ও রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোন রাখার বিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিভাগের হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিকরা।
রবিবার (২৯ জুন) বিকালে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় শতভাগ ধূমপানমুক্ত হোটেল–রেস্তোরাঁ নিশ্চিতকরণে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তারা এই দাবি জানান।
আরও জানায়, হোটেল-রেস্তোরাঁয় নারী-শিশুসহ অধূমপায়ীদের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে আইন শক্তিশালীকরণের কোনও বিকল্প নেই।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আজমল হোসেনসহ ঢাকার শতাধিক হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিক ও প্রতিনিধিরা।
এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান।
মূল প্রবন্ধে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম জানান, গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের (গ্যাটস) তথ্যমতে ১ কোটি ৯২ লাখ মানুষ ধূমপান করে এবং প্রায় ৪ কোটি মানুষ ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। গ্যাটসের তথ্যমতে, শুধুমাত্র রেস্তোরাঁয় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। পরোক্ষ ধূমপানের ফলে অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
তিনি জানান, বিদ্যমান আইনের ৫ ধারায় সব ধরনের বিজ্ঞাপনের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকলেও ঢাকা শহরের ৭৩ শতাংশ রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোনে বিজ্ঞাপন সামগ্রী প্রদর্শিত হচ্ছে।
বক্তারা জানান, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপানের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্যান্সারের ব্যাপকতা, বাড়ছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তাই পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির থেকে সবাইকে বাঁচাতে রেস্তোরাঁতে স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করতে হবে।
পাশাপাশি, রেস্তোরাঁয় একটি জায়গা ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও সেখান থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ায় পরোক্ষ ধূমপানের কবলে পড়ছেন অধূমপায়ীরা। পাবলিক প্লেসে স্মোকিং জোন রেখে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষা করা কখনোই সম্ভব নয়। তাই রেস্তোরাঁয় স্মোকিং জোন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত বলেও জানান বক্তারা।
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের মাধ্যমে আইন শক্তিশালী করে স্মোকিং জোন নিষিদ্ধের দাবি জানায় হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা।