X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আধুনিক মিরপুর

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৯ মার্চ ২০২২, ১৯:০৪আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ২২:১৯

মিরপুর মাজার রোডে অবস্থিত শত বছরের পুরনো মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র উপল। একদিন সে তার মাকে বললো– মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্সে, সে তার বন্ধুদের সঙ্গে সেটি দেখতে যাবে। শুনে উপলের মা একটু ভড়কে গেলেন। তিনি ছেলেকে এতদূর গিয়ে সিনেমা দেখতে দিতে নারাজ! তার ভড়কে যাওয়া দেখে উপল হাসতে হাসতে জানালো, ‘মা, সিনেপ্লেক্স এখন মিরপুরে, আমাদের বাসার পাশেই।’

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিরপুরের নাম পরিচিতি পেয়েছে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাধ্যমে। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত যেকোনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হলেই দেশ-বিদেশে শোনা যায় মিরপুরের কথা। ক্রিকেটের অনেক রেকর্ডের সঙ্গে জুড়ে আছে মিরপুরের নাম, যা আজীবন থেকে যাবে আইসিসি’র রেকর্ড বুকে এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে।

মিরপুর এখন আধুনিকতায় অন্যতম। কী নেই মিরপুরে! তুরাগ নদীর পাড়েই মিরপুরের অবস্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য– চিড়িয়াখানা, ঐতিহ্যবাহী বেনারসী পল্লী, টাকা জাদুঘর, জাতীয় বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ অনেক কিছু। এছাড়া আছে নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল, বিভিন্ন করপোরেট অফিস, আন্তর্জাতিক চেইন খাবারের দোকানসহ অনেক আধুনিক সুবিধা। স্কলাসটিকা, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হারমান মাইনর স্কুলের মতো অনেক প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে মিরপুরে। আরও আছে কমার্স কলেজসহ অনেক খ্যাতিসম্পন্ন কলেজ এবং অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। হাসপাতাল, ব্যাংক, কাঁচাবাজার ইত্যাদিসহ দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি প্রয়োজন মেটাতে এখন মিরপুরবাসীকে ঢাকায় অন্য কোথাও যেতে হয় না। ধানমন্ডির মতো আধুনিক জীবনধারার সব সুবিধা এখন মিরপুরে।

রাজধানী ঢাকার মিরপুর (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

সময়ের স্রোতে নগরায়নের সঙ্গে মিরপুর হয়ে উঠেছে আবাসনের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় জায়গা। পল্লবী ও কাফরুল মিলেই বৃহত্তর মিরপুর। আবাসনের বাড়তি চাহিদা পূরণ করতে মিরপুরে সরকারি-বেসরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে কল্যাণপুর ইকো পার্ক, মিরপুর ইন্টিগ্রেটেড টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট সেক্টর ৯-১১, গাবতলী নবীনগর পিপিপি রোড, মেট্রোরেলের অনেক স্টেশন, ৪-লেন এক্সপ্রেসওয়ে, মাটিকাটা-ইসিবি চত্বর-মিরপুর ডিওএচএস রোড এক্সটেনশনসহ বেশকিছু সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প। ফলে মিরপুর এখন আরও বিস্তৃত।

বিভিন্ন বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের প্রয়োজন ও সুবিধার কথা ভেবে মিরপুরে আবাসন চাহিদা মেটাতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। মিরপুরে বসবাস করার সব সুবিধা নিয়ে বিটিআই, শান্তা, সেলটেক, কনকর্ড, নাভানাসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠান আধুনিক প্রজেক্টের কাজ হাতে নিয়েছে। এসব শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠান নিজেদের প্রজেক্ট গুলশান-ধানমন্ডির আদলেই তৈরি করছে। ফলে দিনে দিনে মিরপুর হয়ে উঠবে তিলোত্তমা নগরী।

মিরপুরে চলবে মেট্রোরেল (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর ছোঁয়ায় সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন মিরপুরের জমির মালিকেরা। কেননা আগে বাড়ির যে ভ্যালুয়েশন ছিল তা আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট হওয়ার পর কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। একটু উত্তরার দিকে ঘুরে তাকালে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। উত্তরা এখন ঢাকার আধুনিক শহর। উত্তরা আধুনিক হয়েছে এসব শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠানের অগ্রগামী ভূমিকার সুবাদে। উত্তরায় আগে বাড়ির ভ্যালুয়েশন এবং ভাড়া যা ছিল তা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে অ্যাপার্টমেন্ট হয়ে যাওয়ার কারণেই। ঠিক একই হাওয়া বইতে শুরু করেছে মিরপুরে। এখনই মিরপুর ঢাকার আধুনিকতার দোরগোড়ায়। আবাসন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মিরপুরের জমির মালিকেরা আধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণ করতে পারবেন খুব সহজেই। আগে যে পুরাতন বাড়ি তিন-চার তলা ছিল এবং সেখানে যে ভাড়া আসতো তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আসবে আধুনিক বহুতল এ্যাপার্টমেন্ট হলে। একইসঙ্গে বেড়ে যাবে সোশাল স্ট্যাটাস।

রাজধানী ঢাকার মিরপুর (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

তবে যৌথ উদ্যোগে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের ক্ষেত্রে অবশ্যই জমির মালিকদের দেখে ও জেনে নিতে হবে সেই আবাসন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে। সেই প্রতিষ্ঠানের পূর্বের অভিজ্ঞতা কতদিনের, মানসম্মত নির্মাণ করে কিনা, কথা অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার হয় কিনা ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় বিষয় সঠিক সময়ে প্রজেক্ট হস্তান্তর করে কিনা। আবাসন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মাণে অংশীদারিত্ব বন্টনের সময় জমির মালিককে অবশ্যই লাভ-ক্ষতি হিসাবের আগে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, আবাসন প্রতিষ্ঠান কিছুটা নির্মাণ করে রেখে দিয়েছে। তখন জমির মালিক না পারবেন চুক্তিপত্র বাতিল করতে, না পারবেন নিজে নির্মাণ করতে। তাই অংশীদারিত্ব বন্টনের সময় লাভ-ক্ষতির আগে মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সঠিক সময়ে প্রজেক্ট হস্তান্তর করে কিনা তা খোঁজ নিয়ে নিন।

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশ ব্যক্তি উদ্যোগে এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো মাধ্যমে মিরপুর হয়ে উঠবে তিলত্তমা শহর। পুরানো বাড়িবদলে হয়ে যাবে ঝকঝকে এ্যাপার্টমেন্ট, পুরানো বাজার বদলে হয়ে উঠবে আন্তর্জাতিক মানের শপিং মল। দিনে দিনে বদলে যাবে মিরপুরবাসীর লাইফস্টাইল। 

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
ঈদের পরও চলছে রঙচটা বাস, আবার সময় দিলো বিআরটিএ
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
সর্বশেষ খবর
সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, ব্যতিক্রম থাকতেই পারে
মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, ব্যতিক্রম থাকতেই পারে
জন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
৩৫তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসবজন্ম আর মৃত্যুর সুরেলা মেলবন্ধনের প্রতিধ্বনি
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
দারুণ সেঞ্চুরিতেও রাব্বির কাছে ম্লান সাকিব
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ