X
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
১২ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবারের সাক্ষাৎকার

সুযোগ পেলে এমপি হতে চাই: ব্যারিস্টার সুমন

বাহাউদ্দিন ইমরান
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:১৬আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৫:৪২

সুযোগ পেলে জনপ্রতিনিধি হতে চান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, ‘এটা কোনও স্বপ্ন না, এটা বাস্তবতা। স্বপ্ন আমার জনপ্রতিনিধি হওয়ার না। স্বপ্নটা হচ্ছে মানুষের হৃদয়ে বসবাস করা। যেকোনও প্রতিনিধিই তো আপনার কপালে থাকতে হবে। আপনার দল, আপনার কাজ সবকিছু মিলিয়ে যদি তারা মনে করে, তবে আপনাকে রাখবে। কিন্তু আমার কাজ করার যে জায়গাটা বা যোগ্যতা, তা আমি চালিয়ে যেতে চাই।’

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার সুমন এসব কথা জানান। সম্প্রতি তার বাসায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে নিজের ব্যস্ততা, ক্রীড়াভিত্তিক সংগঠকের ভূমিকা, ফেসবুক লাইভসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। ব্যাখ্যা করেছেন কেন ফিরে এসেছেন দেশে।

নিজের পরিবার সম্পর্কে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় ১৯৭৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আমার জন্ম। ছয় ভাই-বোনের মাঝে আমি সবার ছোট। আমরা দুই ভাই ও চার বোন। আমার ভাই আমার থেকে বড় এবং তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। আর বোন একজন কানাডায় স্থায়ী ও দুই বোন আমেরিকায় স্থায়ী। আরেক বোন দেশে আছেন, তিনি একটি কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক। তিনিও আমেরিকায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টায় আছেন।’

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ‘আমার বাবা সৈয়দ এরশাদ আলী। তিনি বেঁচে নেই। মূলত তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। আমাদের ধান, ট্রাক্টর ও স’মিলের ব্যবসায় ছিল। আমার মা আম্বিয়া বেগম চৌধুরী। তিনি বর্তমানে আমেরিকায় থাকেন। এছাড়া আমার স্ত্রী শাম্মী আক্তার ও সন্তানরা প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে আমেরিকাতেই আছে। মেয়েটি বড়, নাম সৈয়দা রামিসা হক এবং ছেলের নাম সৈয়দ শায়ন হক। আমার বিয়ে হয় ২০১০ সালের ডিসেম্বর’, বলছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। তার ভাষ্য, ‘আমি ঢাকা কলেজ এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ-এমবিএ সম্পন্ন করে ব্রিটিশ এলএলবি করি। এরপর লন্ডনে চলে যাই। লন্ডনে গিয়ে বার-এট-ল সম্পন্ন করে ২০০৯ সালের জুন-জুলাইয়ের দিকে দেশে ফিরে আসি। দেশে এসে আমার যাত্রা এবং জীবনযুদ্ধ শুরু হয়।’

আপনি নিজেকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ হিসেবে লাইভে পরিচয় দিয়েছেন। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) পদে নমিনেশন দিলে আপনি গ্রহণ করবেন কিনা? জবাবে সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘অবশ্যই। আমাদের দেশে দালাল শব্দটি নেগেটিভ অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কী ধরনের দালাল, তা হলো আদর্শের দালাল। বলতে পারেন, আমি মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর দালাল, আমি মুসলমান হিসেবে মহানবীর (সা.) ও মুসলমানদের আদর্শ ধারণ করি এবং আমার সন্তানদের মাঝে সেটি প্রবাহিত করার চেষ্টা করি, বলতে পারেন আমি এই আদর্শের দালাল। আমি আওয়ামী লীগের দালাল কখন বলি জানেন? আওয়ামী লীগের নামে যারা দুর্নীতি করে, দেশের ক্ষতি করে, তাদের সঙ্গে থেকে কিন্তু না।’

ট্রফি হাতে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ব্যাখ্যা করে ব্যারিস্টার সায়েদুল উল্লেখ করেন, ‘আওয়ামী লীগের দালাল মানে হচ্ছে—বঙ্গবন্ধু যে জিনিসের ওপর দলকে তৈরি করে গেছেন, যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জন্য কাজ করবে, দেশের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াবে—এই ধারণার ধারক আমাকে বলতে পারেন। বিভিন্ন সময় আমাকে মানুষ এক্সাইটেড করে, তখন বিভিন্ন পর্যায়ে গিয়ে আমি বলি—আমি আওয়ামী লীগের দালাল। এরপরও যদি আমার কাজ ভালো লাগে তবেই আমাকে ফলো করেন। ’

ব্যারিস্টার সুমন সুযোগ পেলে বাংলাদেশের মাত্র একজন মানুষের সঙ্গেই দেখা করতে চান। তিনি হলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ভেতর ও বাইরের সব কাজকর্ম ব্যারিস্টার সুমনকে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত যত শক্তিশালী কাজ করেছি, তার পেছনে অনুপ্রেরণা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুপ্রেরণা জায়গাটা এমন যে আমাদের নেত্রী পদ্মা সেতু বানিয়ে ফেলেছেন, আর আমি এলাকায় মাত্র কয়েকটা ছোট ছোট ব্রিজ বানাতে পারবো না!’

প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে সুমনের মন্তব্য, ‘তিনি আরেকটি উদাহরণ তৈরি করেছেন যে পরিবারের সবাইকে হারানোর পরেও বাংলাদেশের মতো জায়গায় একজন নারী হয়ে ১৮ কোটি মানুষ কন্ট্রোল করাটা। এমনকি আওয়ামী লীগের মতো দলকেও কন্ট্রোল করে চলেছেন। তাই মনে হয়েছে, তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তাই কখনও সুযোগ হলে তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক বাহাউদ্দিন ইমরান প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেলে তাকে কোনও অভিযোগ করা হবে কিনা জানতে চাইলে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘না। তার সঙ্গে দেখা করতে পারলে আমার একটা কথাই থাকবে যে আমি বঙ্গবন্ধুর রক্তের না। রক্তের হলে আমি আপনার ভাই বা অন্য কিছু হতে পারতাম। কিন্তু আপনি দোয়া করে দিয়ে যান যে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন আমি আমার জীবদ্দশায় বঙ্গবন্ধুকে সম্মানিত করতে চাই। পরিবারের একজন  সদস্য হিসেবে যে চেষ্টা করতে পারে, সে চেষ্টা করবো। তাই বঙ্গবন্ধুর পরিবারের না হয়েও আমি আদর্শকে ধারণ করে তাদের (বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে) সম্মানিত করতে চাই।’ 

পছন্দের স্মৃতির কথা তুলে ধরে ব্যারিস্টার বলেন, ‘আমি ফুটবল খেলতে যাই। খেলা শেষে যে যার মতো চলে যায়। খেলতে ঠাকুরগাঁও, সিলেট, মৌলভীবাজার, তাড়াইল, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় গিয়েছি। খেলা শেষেও দেখা যায়, ৫০ হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। পুলিশ দিয়েও কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না, আমাকে কোনও রকমে লুকিয়ে চলে আসতে হয়েছে। এই স্মৃতি আমাকে আরও কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়। আমার মনে হয়েছে, তারা আমাকে পছন্দ করে মানে বাংলাদেশকে পছন্দ করেন।’

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

/এসটিএস/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বাংলা ট্রিবিউনকে আমির খসরু মাহমুদ‘দুই নেতা ছিলেন উষ্ণ, বৈঠক ভবিষ্যৎ রাজনীতি গড়ে তোলার মাইলফলক’
একান্ত সাক্ষাৎকারে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু৭২-এর সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের, দেশের মানুষ ইতিহাসের বিকৃতি মানবে না
সাক্ষাৎকারএকাত্তর ইতিহাস নয়, রাজনৈতিক চর্চায় পরিণত হয়েছে: আফসান চৌধুরী
সর্বশেষ খবর
হলের ছাদ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাফ
হলের ছাদ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাফ
ঘরে ভ্যাপসা গন্ধ? দূর করার ৬ উপায় জেনে নিন
ঘরে ভ্যাপসা গন্ধ? দূর করার ৬ উপায় জেনে নিন
খাগড়াছড়িতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারিসহ ৬ নির্দেশনা
খাগড়াছড়িতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারিসহ ৬ নির্দেশনা
দিনের শুরুতে এবাদতের বিদায়ে পড়লো নবম উইকেট
দিনের শুরুতে এবাদতের বিদায়ে পড়লো নবম উইকেট
সর্বাধিক পঠিত
যে কারণে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী টিটুকে সরিয়ে দিলেন ট্রাইব্যুনাল
যে কারণে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী টিটুকে সরিয়ে দিলেন ট্রাইব্যুনাল
রাইস কুকারে রান্না করতে গিয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু
রাইস কুকারে রান্না করতে গিয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু
বছরে ৯৬০ কোটি টাকা সুদ দিতে হয়, চলছে না আইসিবি: অধ্যাপক আবু আহমেদ
বছরে ৯৬০ কোটি টাকা সুদ দিতে হয়, চলছে না আইসিবি: অধ্যাপক আবু আহমেদ
আটকের পর অধ্যক্ষ বললেন ‘আ.লীগ করায় দোষ হলে যেকোনও শাস্তি মেনে নেবো’
আটকের পর অধ্যক্ষ বললেন ‘আ.লীগ করায় দোষ হলে যেকোনও শাস্তি মেনে নেবো’
ইশরাক বললেন ক্ষমা চাইতে, আসিফ দিলেন ‘কড়া বার্তা’
ইশরাক বললেন ক্ষমা চাইতে, আসিফ দিলেন ‘কড়া বার্তা’