রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে ভুয়া সাংবাদিকসহ নয় অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার ও সোমবার দুদিনে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আসামিরা হচ্ছে- জাহাঙ্গীর ওরফে এরশাদ আলী (৪৫), শরীফ ওরফে দেলোয়ার হোসেন (৩৫), মিন্টু মিয়া (৪৬), বাচ্চু মিয়া (৪৫), তমিজ উদ্দিন (৪৮), হোসনে আরা বেগম (৪৫), আসমা বেগম (২০), শারমীন আক্তার (১৮) ও আকাশ চৌধুরী রনি (৩২)।
র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানান, গত ২০ জুলাই ওয়াজিউল ইসলাম (৬১) নামে এক ব্যক্তি কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসেন। মালিবাগ সুপার মার্কেটে ব্যক্তিগত কাজ শেষে রিকশাযোগে মালিবাগে তার ভাইয়ের মেয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। আনুমানিক দুপুর সোয়া ১২টার দিকে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টারের কাছে পৌঁছা মাত্র ৮/১০ ব্যক্তি তার রিকশার গতিরোধ করে। তাকে টেনে হিঁছড়ে একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে চোখ মুখ বেঁধে ফেলে। পরবর্তীতে তাকে একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে নিয়ে আটক রেখে নির্যাতন করে। তার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ভিকটিমের মেয়ের জামাই বিষয়টি র্যাব-৩ কে অবহিত করলে মেজর ফাহিমের নেতৃত্বে একটি দল এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। গত ২১ জুলাই অপহরণকারীদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে খিলগাঁওয়ের পশ্চিম মেরাদিয়ার ২৫৭/১ নম্বর বাসার ৩য় তলায় র্যাব অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অপরাধীরা পালাতে থাকে। এ সময় সিরাজ উদ্দীন ওরফে খোকন (৫৭) ও আফতাব উদ্দীন ওরফে মিলন (৫০) নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে র্যাব। ভিকটিম ওয়াজিউল ইসলামকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অন্যান্য অপহরণকারীদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-১৫। ২৪ জুলাই পৃথক একটি অভিযান চালিয়ে রামপুরা এলাকা হতে অপহরণকারী চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী এরশাদসহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের খোয়া যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
অপহরণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মুফতি মাহমুদ জানান, সংঘবদ্ধ এই চক্রটি কৌশলে নিরীহ মানুষকে একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে নিয়ে জিম্মি করে। পরবর্তীতে হত্যার হুমকি দিয়ে আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে।
তাদের কাছ থেকে ১৫টি মোবাইল সেট, ২২টি সিমকার্ড, ১টি ল্যাপটপ, ১টি ক্যামেরা, জাতীয় পরিচয়পত্র ৪টি, ২টি ভুয়া সাংবাদিক কার্ড, ৭টি চেক বই এবং মুক্তিপণ হিসাবে আদায় করা ৪৬ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, এই চক্রটি ইমরুল আহসান ওরফে পিকুলকে গত ১৯ জুলাই অপহরণ করে চল্লিশ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। ১৫ জুলাই শাহজাহানকে অপহরণ করে ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেয়। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি। এরশাদ একটি ধর্ষণ মামলায় ১২ বছর সাজা খেটে সম্প্রতি জেল থেকে বের হয়েছে বলেও জানান তিনি।
/এআরআর/ এপিএইচ/
আরও পড়ুন:
নড়াইলে খালেদার বিরুদ্ধে সমন জারি