রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের যে কনসেপ্ট, সেটাতো আমরা মেনে নেইনি। রাষ্ট্র বা সরকার বা আমাদের অফিস এটাকে মেনে নেয়নি। এজন্যই আমরা রিভিউ’র প্রস্তুতি নিচ্ছি।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অ্যাটর্নি জেনারেল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ সব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ উঠেছে, তাতে তার শপথ ভঙ্গ হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যখনই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এবং সেই অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তখনই তার শপথ ভঙ্গ হয়ে যায়।’
এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের প্রয়োজন আছে কি, এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের যে কনসেপ্ট সেটাতো আমরা মেনে নেইনি। রাষ্ট্র বা সরকার বা আমাদের অফিস এটাকে মেনে নেয়নি। এজন্যই আমরা রিভিউ’র প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘ওনার (প্রধান বিচারপতির) বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তা যদি সত্য না হতো, তাহলে দেশের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এসব কথা বলা সম্ভব হতো?’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি আমরা হাতে নিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় যেভাবে ইনস্ট্রাকশন (পরামর্শ) দেবেন সেভাবে কাজ করবো ।’
নিয়ম অনুযায়ী রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে রিভিউ দায়ের করতে হবে।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি গত ১ আগস্ট প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর গত ১৬ আগস্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল সাংবাদিকদের জানান, রায়ের পূর্ণাঙ্গ সার্টিফায়েড কপি (সত্যায়িত) চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
এরপর থেকেই বিচার বিভাগের অভিভাবক প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা- সমালোচনা।
এরপর গত ১০ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
গত ১৮ আগস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘রায়ের সত্যায়িত কপির জন্য আবেদন করা হয়েছে। রায় ভালোভাবে পড়া হচ্ছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই রিভিউ আবেদন করা হবে।’
এরমধ্যে সুপ্রিমকোর্টে শরৎকালীন অবকাশ শুরু হয়ে গেলে প্রধান বিচারপতি চলে যান দেশের বাইরে। গত ২২ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু ২ অক্টোবর তিনি হঠাৎ করেই এক মাসের ছুটির বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। অনেক জল্পনা -কল্পনা শেষে তিনি শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন:
দেশে ফিরে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ সুদূর পরাহত: অ্যাটর্নি জেনারেল