X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘আমার জীবনের কিছু অংশ আছে এতে’

লুবা খলিলি
০৭ নভেম্বর ২০১৭, ২২:১৭আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ২২:২০

‘আমার জীবনের কিছু অংশ আছে এতে’ প্রথমবারের মতো নাটক পরিচালনায় এসে তুমুল সাড়া পেয়েছিলেন নুহাশ হুমায়ূন। ‘হোটেল অ্যালবাট্রস’ দর্শকদের কাছে হয়েছে যেমন প্রশংসিত ঠিক তেমনই এনে দিয়েছে আরও নাটক পরিচালনার অনুপ্রেরণা। তারই ধারাবাহিকতায় পরিচালক নুহাশ এবার নিয়ে আসছেন শর্টফিল্ম ‘পেপারফ্রগ’। এ বছর ঢাকা লিট ফেস্টে তার প্রদর্শনী হবে।

পেপারফ্রগ তৈরি করা হয়েছে নুহাশের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে। এই ধরনের গল্পে আগে কখনও কোনও ফিল্ম তৈরি হয়নি বাংলাদেশে, কিন্তু কেউ না কেউ জীবনে গল্পটি অনুভব করেছে। কি আছে এর মধ্যে? চলুন শোনা যাক নুহাশের মুখে।

পেপারফ্রগের কাজের শুরুটা কেমন ছিল?

নুহাশ: যখন আমি প্রথম ড্রাফটটি লেখা শুরু করলাম তখন সবচেয়ে বেশি যেটা পেলাম তা হলো প্রতিক্রিয়া। কিন্তু তা শুধু অন্যান্য লেখক কিংবা পরিচালকের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। সবচেয়ে বেশি ছিল আমার ভাগ্নীদের। তারা অনেক সহায়তা করেছে স্ক্রিপ্ট লেখার পেছনে।

আমি চাচ্ছিলাম ‘সাজবাতির’ চরিত্রটি তরুণদের প্রতিচ্ছবি হিসেবে আসলরূপে ফুটিয়ে তুলতে। একজন বাঙালি তরুণী যেমনটা হয় আর কি, কারণ এটাই আমার গল্পের প্রধান চরিত্র। ফিল্মটিতে হারানোর বেদনা আছে, হতাশা আছে আবার সঠিক পথ খোঁজার গল্পও আছে। আমাদের দেশের তরুণরা বাস্তবে অনেকরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় কিন্তু আমরা মিডিয়াতে সবকিছু দেখি না। তরুণ মানেই আমরা দেখতে পারি অনেক হাস্যোজ্জ্বল, উচ্ছ্বসিত একটা প্রজন্ম। কিন্তু তাদের অন্য একটা দিক আছে যা আমরা সহজে দেখতে পাই না।

এই কাজের মধ্যে ভিন্নতা কোন কোন জায়গায়?

 নুহাশপেপারফ্রগে আমার কিছু স্বকীয়তা আছে, কারণ অ্যালবাট্রস একটি বড় বাজেটের কাজ ছিল। তাতে নামকরা অভিনয়শিল্পী ছিলেন। পেপারফ্রগ শুধু মাত্র আমার ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই এটার সাথে ঘনিষ্ঠতাও আমার বেশি। প্রযোজক এবং নির্বাহী প্রযোজক আমার কাছের বন্ধু। এর মধ্যে বিশেষত্ব হলো গল্পটা আমাদের একান্ত এবং এতে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ নেই। কারও কোনও নির্দেশনা ছাড়াই বলতে গেলে এটা আমার একান্ত নিজের কাজ।

কিভাবে পেপারফ্রগ বাস্তবায়ন হলো?

নুহাশআমার মাথায় পরিকল্পনা ছিল যেটা কখনই আমাকে ছেড়ে যেত না, বছরের পর বছর ধরে রেখেছিলাম। মাথা থেকে ছাড়ানোর একটাই উপায় ছিল, তা হলো ফিল্ম বানানো। পেপারফ্রগ তারই একটি।

যখন আমি প্রথম ড্রাফট লেখা শেষ করলাম, যেই পড়তো একটা কথাই বলতো ‘ তোমার এটা নিয়ে কাজ করা উচিত এবং আমি এর সঙ্গে কাজ করতে চাই।’ এত সাড়া পাবার একমাত্র কারণ হলো গল্পের সঙ্গে অনেক মানুষের জুড়ে যাওয়া। কখনওই ভাবিনি আমরা বানিয়ে ফেলতে পারবো। আমাদের সাথে ছিল বরকত হোসেন পলাশ ছিল যে কিনা খুব ভালো মানের সিনেমাটোগ্রাফার এবং আমাদের নির্বাহী প্রযোজকরাও বেশ ভালো।  

 এতে দেখার মতো কি আছে বলে মনে করেন ?

নুহাশআমি মনে করি আমাদের মানকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশে আমরা বেশিরভাগ  সময় বলে থাকি ‘এটা বাংলা সিনেমা হিসেবে খারাপ না’। আমি নিজেই স্ব-সমালোচক, তাই আমি যাই তৈরি করতে চাই এর বাইরে গিয়ে চিন্তা করি। আমি যা কিছুই তৈরি করি না কেন আমার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় আমার দর্শকের বুদ্ধিমত্তা এবং রুচি। বর্তমানে বাংলাদেশের যে কেউ নেটফ্লিক্স ব্যবহার করতে পারেন। আমরা সবকিছুর ভেতরেই আছি, তাই খারাপ কিছু তৈরির পেছনে কোনও অজুহাত দেওয়ার সুযোগ নেই।

পেপারফ্রগ নিয়ে আমি মনে করি, যদি আসন্ন সময়ের গল্প আপনার মনের মতো হয় তাহলে আপনি তার সঙ্গেই থাকবেন। এর মধ্যে কিছু একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার রয়েছে যা সহজেই মানুষকে যুক্ত করে। 

গল্পটি আপনার ব্যক্তিগত, এ বিষয়ে আরও বিশদ জানতে চাই...

নুহাশগল্পটি যখন লিখছিলাম তখন আমি ভীষণ হতাশায় ভুগছিলাম। আমি তখন এর কোনও নামও দিতে পারিনি, কিন্তু এটা নিরাশ হওয়ার গল্প, একটি অচলাবস্থার কাহিনি। এমনকি এই গল্পের চিত্রায়ন ছিল এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার ওষুধের মতো। প্রত্যেকে নির্মাতারই কিছু বড় এবং ছোট কাজ থাকে, কিন্তু একটা জিনিস দিয়ে অবশ্যই শুরু করা যায়। আর তা হলো পরিবার এবং বন্ধুদের সাহায্য। পেপারফ্রগ আমার কাছে এমনই একটা বিষয়। আমাদের প্রফেশনাল নন প্রফেশনাল মিলিয়ে একটি ভালো সমন্বয় ছিল। যেমন আমাদের সাথে কাজ করতো প্রফেশনাল ক্রু কিন্তু সবার জন্য রান্না করতেন আমার মা।

সবশেষে আমি বলতে পারি পেপারফ্রগ একটি শর্টফিল্ম। আমি চাই মানুষ দেখুক এবং উপভোগ করুক। আমার মনে হয়না এটা শুধুমাত্র ডিপ্রেশন নিয়ে বানানো। আমি মানুষকে অনুপ্রেরণা দিতে চাই নতুন সৃজনশীল কাজ করার জন্য আরও বেশি করে। কারণ এটা প্রমাণিত যে, কম বাজেটেও অনেক ভালো কিছু তৈরি করা সম্ভব। ‘আমার জীবনের কিছু অংশ আছে এতে’

আপনার মতে ইন্ডাস্ট্রিতে তরুণ নির্মাতাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী?

নুহাশআমার মতে সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার হলো সঠিক দিক খুঁজে না পাওয়া। কিন্তু যখন খুঁজে পাওয়া যায় তখন দেখা যায় চারপাশে অনেক ভালো এবং অভিজ্ঞ লোকজনের ছড়াছড়ি। সেই মুহূর্তে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো নিজেকে ঠিক রাখা এবং নিজের সঙ্গেই থাকা।

সবাই আপনাকে উপদেশ দিতে চাইবে, বলবে কি করা উচিত, কি নয়। কিন্তু আপনার একটি ভিশন আছে, আপনি বাংলাদেশের চতুর্দিকে ঘুরছেন তা বাস্তবায়নের জন্য। প্রয়োজন শুধু একান্ত নিজের মতো থাকা আর কিছু না। নিজের আইডিয়ায় অটল থাকা এবং মনস্থির করা যে ‘না, আমি এটাই বানাবো।’ নিজের প্রতি অটল থাকা- এই জিনিসটাই অনেক কঠিন আমার মতে।  

 

এফএএন
সম্পর্কিত
রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ঢাকা লিট ফেস্টের
পর্দা নামলো ঢাকা লিট ফেস্টের
ডিএসসি দক্ষিণ এশীয় সাহিত্য পুরস্কার পেলেন শ্রীলঙ্কার আনুক আরুদপ্রাগাসাম
সর্বশেষ খবর
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!