X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

রবিবার শেষ হচ্ছে আবেদন, ফেব্রুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন

এমরান হোসেন শেখ
৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৫৫আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:১০

 

নির্বাচন কমিশন নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে রবিবার (৩১ ডিসেম্বর)। জানা গেছে, নিবন্ধন পেতে অর্ধ-শতাধিক রাজনৈতিক দল আবেদনপত্র সংগ্রহ করলেও এখনপর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেড় ডজনের মতো দল ইসিতে আবেদন জমা দিয়েছে। রবিবার শেষ দিনে বাকিদের আবেদন পড়তে পারে বলে আশা করছে ইসি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য গত ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। এতে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ডিজিটাল পার্টি (বিজিডিপি), বাংলাদেশ মানবতাবাদী দল, কৃষক প্রজা পার্টি,  বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও স্মৃতি পাঠাগার, জাগো বাহে, বাংলাদেশ সত্য ব্রত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ সাধারণ পার্টি, শরীয়াহ আন্দোলন বাংলাদেশ, মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ বেকার সমাজ,  ট্রুথ পার্টি, স্বদেশ পার্টি, বাংলাদেশ জালালী পার্টি, সোনার বাংলা উন্নয়ন লীগ, রেড স্টার পার্টি, বাংলাদেশ আলোকিত পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি; বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি;  তৃণমূল বাংলাদেশ,  বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি), ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক পার্টি (এনডিপি),  বাংলাদেশ লেবার পার্টি,  বাংলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেস, বাংলাদেশ তৃণমূল কংগ্রেস, বাংলাদেশ পিপলস ডেমক্রেটিক পার্টি (বিপিডিপি),  বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, ভাসানী ন্যাপ,  আম জনতা খেদমত পার্টি, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ),  বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, কংগ্রেস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলন, তৃণমূল জনতা পার্টি,  বাংলাদেশ সমাজ উন্নয়ন পার্টি, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন, বাংলাদেশ সৎ ও সংগ্রামী ভোটার পার্টি, ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স,  বাংলা শিল্প শ্রমিক এলায়েন্স (বিশা),  লিবারেল পার্টি, এমপিপি, বাংলাদেশ নিউ সংসদ লীগ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল (বিডিপি), বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), বাংলাদেশ ইসলামি পার্টি,  বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ও তৃণমূল ন্যাশনাল পার্টি (টিএনপি)সহ অর্ধ-শতাধিক দল আবেদন সংগ্রহ করেছে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেড় ডজন দল তাদের আবেদন ইসিতে জমা দিয়েছে বলে ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা গেছে।

জানা গেছে, ইসি নতুন দলের নিবন্ধনের বিধিবিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করবে। ‘এক দল এক নেতা’—এমন কোনও রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া হবে না বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে তিনি সতর্কও করেছেন। এক্ষেত্রে নামসর্বস্ব দলগুলো ফাঁক গলিয়ে কোনোমতেই যেন নিবন্ধন না পায়, সেজন্য সতর্ক রয়েছে ইসি। নিবন্ধনে প্রত্যাশিত দলগুলোর মাঠ পর্যায়ে অফিসসহ কার্যক্রম রয়েছে কিনা, নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তা যাচাই করবে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় অর্ধশতকের মতো দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছে। এরমধ্যে কয়েকটি দল আবেদনপত্র জমা দিয়েছে। রবিবার পর্যন্ত সময় রয়েছে। নিশ্চয়ই আরও কিছু দল আবেদনপত্র জমা দেবে। রবিবার জানাতে পারবো, কয়টি দল আবেদন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন করবো। এগুলো যাচাই-বাছাই করলে তা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন বলেন, ‘আরপিও এর বিধানের আলোকেই আমরা যাচাই করবো। দলগুলো যেসব তথ্য দিয়েছে, তার সত্যতা আমরা আমাদের মাঠ প্রশাসনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যাচাই করে দেখবো।’

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী আবেদিত দলগুলোর আবেদন যাচাই করে আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর মার্চ মাসে সেগুলোর তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, ইসির নিবন্ধন ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। নতুন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, তিনটির মধ্যে একটি শর্ত পূরণ হলেই তারা নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। শর্তগুলো হলো—দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেকোনও জাতীয় নির্বাচনে আগ্রহী দলটির যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকে।  যেকোনও একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেওয়া আসনগুলোয় মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পায় এবং  দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সংবলিত দলিল থাকে।

ইসি সূত্র জানায়, এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগ্রহী নতুন ৪৩টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। এরমধ্যে ৪১টি দলই ইসির কাছে নিজেদের ‘যোগ্যতার’ প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়।

মাত্র দু’টি দল শর্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কার্যালয় ও কমিটি থাকার তথ্য দিয়েছিল। এরপর তাদের নিবন্ধন দেয় কমিশন। দল দুটি হলো—বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালুর প্রথম বছর ১১৭টি দল ইসির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। সেখান থেকে শর্ত পূরণ হওয়ায় ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয় এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন। এরমধ্যে স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। আর আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে ইসির নিবন্ধনে ৪০টি রাজনৈতিক দল রয়েছে।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা