X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের নজরে আনা হলো বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৬ মে ২০১৯, ২০:২৪আপডেট : ০৬ মে ২০১৯, ২০:৩৫

বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদন

রায় অনুসারে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন না হওয়ায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে ‘যৌন হয়রানি রোধে আদালতের রায় বাস্তবায়ন হয়নি খোদ সুপ্রিম কোর্টেও’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানিকালে সোমবার (৬ মে) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিকালে প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

রিটের শুনানিকালে আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আদালতকে বলেন, ‘ ২০০৯ সালের ১৫ মে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞাসহ যৌন হয়রানি রোধে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়ে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। কিন্তু আদালতের সে রায় এখনও শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে সারা বিশ্বে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালে এ রায় দিয়েছিলেন। তাই এ রায়ের বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে একটি তালিকা দাখিলের বিষয়ে রুল জারির আর্জি করছি। ’

শুনানির জবাবে হাইকোর্ট বলেন, রায়টি হয়েছে আরও অনেক বছর আগে। কিন্তু রায়টি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আপনারা আদালত অবমাননার মামলা করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে কেন আরেকটি রিট করেছেন? এভাবে বারবার আমরা (হাইকোর্ট) আদেশ দেবো আর আপনারা আসতেই থাকলে তো সমস্যা। আমরা বারবার রুল দেবো আর তারা বার বার রায় ভঙ্গ করবে?’

এ পর্যায়ে আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বাংলা ট্রিবিউনে ‘যৌন হয়রানি রোধে আদালতের রায় বাস্তবায়ন হয়নি খোদ সুপ্রিম কোর্টেও’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের দুইটি প্রিন্ট কপি বিচারপতিদের নজরে এনে বলেন, ‘অন্যদের মতো হাইকোর্টের আদেশ সুপ্রিম কোর্ট নিজেও বাস্তবায়ন করেনি। তাহলে আমরা কোথায় আছি?‘

এরপর বিচারপতিরা প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে বলেন, ‘আমরা বারবার আদেশ দেবো কিন্তু তার বাস্তবায়ন হবে না, এটা মেনে নেওয়া হবে না।‘

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার আদালতকে বলেন, ‘‘বর্তমান অবস্থা ভয়াবহ। রাষ্ট্রের দায়িত্ব আসামিদের বিচার করা। তা করাও হচ্ছে। তাই এ রিটটি ‘দোবারাদোষে’ (পূর্বে নিষ্পত্তি হওয়া মামলা) চলমান থাকতে পারে না।’’

এ সময় রিটকারী আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘এ রিটটি দোবারাদোষের মধ্যে পড়বেনা। কারণ, আমরা একই বিষয়ে আদালতে আবেদন করিনি। আমরা আমাদের রিট আবেদনে হাইকোর্টের পূর্বের রায়টি কারা প্রতিপালন করেছেন তাদের তালিকা চেয়েছি।’

তখন আদালত বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকে এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনে কেন অবহেলা, এটা হতাশাজনক।’ এরপর আদালত এ মামলার শুনানি আগামী এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি রাখার আদেশ দেন।

পরে আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের রায় অনুসারে সুপ্রিম কোর্টেও কমিটি না হওয়ায় আমরা সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছিলাম। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রতিবেদনও হাইকোর্টের নজরে এনেছি যে, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুপ্রিম কোর্টও কমিটি করেনি। যাদের চিঠি দিয়েছিলাম ওই প্রতিবেদনে তাদের বক্তব্যও উঠে এসেছে। তাহলে এটা বোঝায়, স্বয়ং সুপ্রিম কোর্টও এ কমিটি করেনি। আমরা (আইনজীবীরা) হয়তো অনেকেই অনেক সুন্দর ব্যবহার করি। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ থাকতে পারে। যারা এধরনের কমিটি করছেন না তারা ভয়ে এটা করতে চাচ্ছেন না। শুধু নারী নয় পুরুষেরাও যৌন হয়রানির শিকার হতে পারে। বিশ্বের অনেক বড় বড় অফিস-আদালতে এ ধরনের যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি ভারতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।

আদালতের আদেশ মেনে এ ধরনের কমিটি গঠন করা হলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে জীবন দিতে হতো না। কারণ, পুলিশের কাছে গিয়ে সে কোনও প্রতিকার পায়নি। এ ধরনের কমিটি থাকলে নুসরাত সেখানে অভিযোগ করতে পারতো। আর সে অভিযোগ অনুসারে কমিটির সদস্যরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে তাকে আর অগ্নিদগ্ধ হতে হতো না বলেও মন্তব্য করেন এ আইনজীবী।

 

/বিআই/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না