X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইলেকট্রিক গণপরিবহনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কথা বললেন সাঈদ খোকন

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:২৩আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৫

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক রাজধানী ঢাকায় ইলেকট্রিক গণপরিবহনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কথা বললেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির প্রধান মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যে সময়ে ঢাকায় গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি ঠিক একই সময়ে উন্নত শহরগুলো আরও অ্যাডভান্স চিন্তা করছে। যেখানে আমরা শৃঙ্খলা আনার জন্য কাজ করছি সেখানে তারা পরিবেশ রক্ষার জন্য অকটেন বা ডিজেলচালিত বাস পরিবর্তন করে ইলেকট্রিক বাস ব্যবহারের জন্য কাজ করছে। তাদের কর্মপরিকল্পনা ৭ থেকে ১০ বছর মেয়াদি।’
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের যৌথ আয়োজনে ‘গণপরিবহনে শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। আইইবি’র হলরুমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সাঈদ খোকন বলেন, ‘সি-৪০ নামে মেয়রদের একটি ফোরাম রয়েছে। এটি বিশ্বে মেয়রদের সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচাইতে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী ফোরাম। এটি জাতিসংঘের বসতি বিষয়ক সংস্থা ইউএন হ্যাবিটেটের আওতায় রয়েছে। ১০৪টি দেশের মেয়র এই সংস্থার সদস্য যার ১১ সদস্যবিশিষ্টি একটি কমিটি রয়েছে। লন্ডন, টোকিও, জাপানের মেয়র এই কমিটিতে আছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে আমি এই ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান। আমরা যখন এই ফোরামের সদস্যরা একত্রিত হই, তখন অ্যাডভান্স যেসব শহর রয়েছে তাদের ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম নিয়ে কথা বলি।’
ইলেকট্রিক বাসের কথা বলার কারণ উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘বর্তমানে বিদ্যুতে আমাদের দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুধু তাই নয়, পর্যাপ্ত সরবরাহের নেটওয়ার্ক না থাকায় আমাদের বেশ কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে। আমরা যদি এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারি তাহলে একদিকে বিদ্যুতের যে দাম রয়েছে সেটা কমিয়ে আনা সম্ভব এবং বাড়তি বিদ্যুৎ বা যেটা অপচয় হচ্ছে- আমরা ঢাকা শহরে ইলেকট্রিক বাস কিংবা ইলেকট্রিক মোটরগাড়ি চালু করতে করতে পারি। এর সম্ভাব্যতা যদি আপনারা যাচাই করেন তবে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারি। এছাড়া তেল ও ডিজেলের কারণে যে কার্বন দূষণ হয় সেটার পরিমাণও অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে। পরিবেশ দূষণের কারণে জাতিসংঘের সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা রয়েছে সেখান থেকে বেশ কিছু ফান্ডও আমরা পেতে পারি। এটার অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা ইতিবাচক বলে আমি মনে করি। সংশ্লিষ্ট দাতাদের বিশেষজ্ঞ রয়েছেন তারা এর সম্ভাব্যতা ভেবে দেখবেন।’
মেয়র বলেন, ‘বাসযোগ্য শহরগুলোকে নিয়ে যে জরিপ প্রকাশ করা হয় সেখানে দেখা যায় কখনও ঢাকা ১৪২তম, কখনও ১৩৯তম। বর্তমানে এটা ১৩৭তম। অর্থাৎ বসবাসের অযোগ্য শহর হিসেবে ঢাকা ১৪২টি শহরের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। একই তালিকায় আমরা যখন দেখি সেখানে কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহর পরপর সাতবার বাসযোগ্য শহরের প্রথম স্থানে ছিল। আমরা গত দুই বছর ধরে দেখছি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহর বাসযোগ্য শহরের সর্বপ্রথমে রয়েছে। কথাগুলো এজন্য বলছি- যখন আমরা ভিয়েনা বা মেলবোর্নের কথা বলি তখন আমরা বলি বাসযোগ্য শহরের শীর্ষে অবস্থান করছে। আর যখন ঢাকার কথা বলি তখন বলি বসবাসের অযোগ্য শহরের তৃতীয় কিংবা পঞ্চম স্থান। একই জরিপে কেউ প্রথমে আছে কেউ শেষে আছে। তাহলে আমরা এটাকে এভাবে বলি না কেন- ভিয়েনা শহর বসবাসের অযোগ্য শহরের ১৪২তম অবস্থানে রয়েছে। ঢাকার কথা যখন বলি তখন বলি বসবাসের অযোগ্য শহরের শেষে রয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি কেন? আমরা বিষয়টাকে কীভাবে দেখবো, কীভাবে উপস্থাপন করবো সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের মানসিকতার দৃষ্টিভঙ্গি সর্বপ্রথম পরিবর্তন করতে হবে। হয় বলবো বসবাসের অযোগ্য তালিকায় ঢাকা শহর পঞ্চম, ভিয়েনা ১৪২। না হয় বলবো বাসযোগ্য শহরের তালিকায় ভিয়েনা ১ নম্বরে, ঢাকা শহর ১৪২ নম্বরে।’
মেয়র বলেন, পৃথিবীতে কমপক্ষে ৫০ লাখ শহর, উপশহর রয়েছে। আমরা এভাবেও বলতে পারি- এই শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা শহর ১৪২তম। এই যে প্রচারণা, এটার কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সারাবিশ্বে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আজ বিশ্বকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্নভাবে দেখবার উপায় নেই। তিনি বলেন, আমরা গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দুই বছর সময় চেয়েছিলাম। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করেছি। ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পাবেন। ১০ উদ্যোগ নিলে সবগুলো যে সফল হবে তা নয়, দুই-একটা বিফলও হতে পারে।

আইইবি’র পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক, পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল, সাধারণ সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

 

 

/এসএস/ওআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন-রামাফোসার ফোনালাপ
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন-রামাফোসার ফোনালাপ
ভিসা-পাসপোর্ট হারিয়ে প্রবাসী অজ্ঞান, ৯৯৯-এ কলে উদ্ধার
ভিসা-পাসপোর্ট হারিয়ে প্রবাসী অজ্ঞান, ৯৯৯-এ কলে উদ্ধার
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো