অর্থ আত্মসাতের মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দিন নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামিদের জামিনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। অন্যদিকে, দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনসহ ডেসটিনি গ্রুপের ২২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দু’টি মামলা করে দুদক। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ (এমএলএম) ও ট্রি-প্ল্যানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দু’টি করা হয়। বর্তমানে এ মামলায় রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেন কারাগারে রয়েছেন।
২০১৬ সালের ২০ জুলাই শর্তসাপেক্ষে এই দুজনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে দুদক আপিল করলে হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগ। এ আবেদনের শুনানির এক পর্যায়ে আত্মসাৎ করা টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেন সর্বোচ্চ আদালত।
সেই অনুসারে ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ডেসনিটির পক্ষ থেকে গাছ বিক্রি করে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। ওইদিন হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানানো হয় যে, তাদের (ডেসটিনি) কাছে ৩৫ লাখ গাছ আছে। প্রতিটি গাছ আট হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে পারবে তারা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জামিনের শর্ত পূরণে আপিল বিভাগ দুই আসামি যে কারাগারে আছেন, সেখানে তাদের সঙ্গে গাছ বিক্রির সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর ও আলোচনার সুযোগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যান্টেশনের সিইও ড. শামসুল হক ভূঁইয়া এমপির তত্ত্বাবধানে সব কাজ সম্পন্ন হবে। যদি গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে না পারে, তাহলে নগদ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেবে ডেসটিনি। এর অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে। এরপর যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যাচাই করে তাদের কাছে টাকা হস্তান্তরের পর জামিনে মুক্তি পাবেন এই দুই কর্মকর্তা।
কিন্তু ওই শর্ত সংশোধন চেয়ে তারা ২০১৭ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। সেই আবেদন ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর খারিজ হয়ে যায়। তবে শর্ত না মেনে পুনরায় তারা জামিন চেয়ে আবেদন করায় তা খারিজের পক্ষে আবেদন জানায় দুদক। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আদেশের দিন নির্ধারণ করেন।
