X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘অ্যাকটিভ লার্নিংকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৪৬আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৪৬

‘উচ্চশিক্ষার মান ও অ্যাকটিভ লার্নিং’ শীর্ষক বৈঠকিতে আলোচকরা ‘দেশে হাতেকলমে কাজ শেখা বা অ্যাকটিভ লার্নিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এটি জোরেশোরে শুরু করেছে, আবার অনেক জায়গায় এর প্রয়োগ সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। এটি নিয়ে আরও কাজ করার প্রয়োজন আছে।’ বলেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) উপাচার্য আব্দুর রব। শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ‘উচ্চশিক্ষার মান ও অ্যাকটিভ লার্নিং’ শীর্ষক বৈঠকিতে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকালে (১৪ জানুয়ারি) সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিওতে শুরু হয় সাপ্তাহিক এই আয়োজন।

আব্দুর রব উপাচার্য আব্দুর রব বলেন, ‘আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শিক্ষা মানে ধরে নিয়েছিলাম জ্ঞান অর্জন করা। সম্প্রতি এই ধারণা থেকে আমরা একটু বের হয়ে বুঝেছি যে, জ্ঞান অর্জন শেষ কথা নয়, এর প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবে প্রয়োগ করতে হলে শুধু জ্ঞান অর্জন করলেই হবে না, বাস্তবে চর্চা করতে হবে। এর প্রয়োগ হতে হবে কর্মক্ষেত্রে এবং জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয়ে, ল্যাবে কিংবা মাঠে যখন একজন শিক্ষার্থী হাতেকলমে ওই থিওরিকে প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন, তখন আমরা বলছি “অ্যাকটিভ লার্নিং” হচ্ছে।’

এইচএম জহিরুল হক বৈঠকিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) উপাচার্য প্রফেসর এইচএম জহিরুল হক বলেন, ‘অ্যাক্টিভ লার্নিং এখন আর শুধু একটি শব্দ নয়। এটি এখন চর্চার মধ্যে চলে এসেছে। উচ্চশিক্ষায় অ্যাক্টিভ লার্নিং শুরু হয়ে গেছে। আজ থেকে ৩০ বছর আগে আমরা অ্যাক্টিভ লার্নিং শব্দটি জানতাম না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাকটিভ লার্নিং চর্চা দারুণভাবে হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আমাদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার এখন অনেক বাজেট দিচ্ছে, ল্যাব তৈরি করছে। অ্যাকটিভ লার্নিং চর্চা করার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি দরকার তার জোগান সরকারও দিচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে ইউল্যাব উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে ধারণগত শিক্ষার যে প্রচলন ছিল, সেটা থেকে বেরিয়ে এসে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে হাতেকলমে এবং গবেষণার মাধ্যমে শেখাকেই আমরা সাধারণত অ্যাকটিভ লার্নিং বলি। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে অ্যাক্টিভ লার্নিং কথাটি সরাসরি সম্পৃক্ত। উদাহরণ দিয়ে বলি, আমাদের ইউল্যাবে একটি বিভাগ আছে, মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম। সেখানে হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়ার জন্য টেলিভিশন চ্যানেল আছে। যারা টিভি রিপোর্টিং শিখতে চায় তারা স্টুডিওতে কাজ করছে। আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে পত্রিকা বের করা হয়, এতে শিক্ষার্থীরা রিপোর্ট লেখা শিখছে।’ 

মো. সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘অ্যাকটিভ লার্নিংয়ের প্রক্রিয়ায়  লার্নারকে ক্ষমতাশীল করতে হবে। শিক্ষা একটি শিক্ষণীয় প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলবে। যেকোনও বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাজটি করেই শিখবেন। বর্তমান বিশ্বে জীবন ধারণ করা এবং জীবনকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াটাও কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় যারা পড়ালেখা করছেন, তাদের স্কিল এমপাওয়ারড হতে হবে। শিক্ষার্থীর ক্ষমতায়ণ করতে হবে এবং কীভাবে সেটি সম্ভব­– এই দুই জায়গায় কাজ করতে হবে। এখানে যারা শিক্ষাদান করছেন, তারা মূল বিষয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের সমস্যা সমাধানে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা অবশ্যই করছি, এটি একটি বিশাল কাজ। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু স্ব স্ব ক্ষেত্রে এই জায়গাগুলো নিয়ে ভাবতে পারেন। ডিপার্টমেন্ট কিন্তু আমরা তৈরি করে দিই না, অনুমোদন দিই। আমাদের জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি করতে হবে। অনেক ডিপার্টমেন্ট খোলা হয়ে গেছে বিভিন্ন কারণে। অনেক কিছু হয়ে গেছে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী যাতে সম্পদ হিসেবে কাজ করে সেভাবেই কিন্তু আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা। এমপাওয়ারড করার শক্তি আমাদের নেই, এটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই করবে। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু তার মধ্যেও আমাদের ভালোভাবে কাজ করার পরিকল্পনা আছে।’    

মোস্তফা মল্লিক চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তফা মল্লিক বলেন, ‘অ্যাকটিভ লার্নিংয়ের ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। চীনে ভিডিও এডিটিং নিয়ে আলাদা ইউনিভার্সিটি আছে। অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বিষয়ে কোনও বড় অধ্যায়ও নেই। যদিও বলা হচ্ছে আমরা তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছি, পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশও কি পিছিয়ে যাচ্ছে? নিশ্চয়ই না। তার মানে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পৃথিবীর কোনও দেশের পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এখন হাতেকলমে শিক্ষা নিয়ে কিছু কাজ শুরু হয়েছে। যেমন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। এটি একটি বড় উদ্যোগ। তাদের ল্যাব ইদানীং আধুনিক হয়েছে। কিন্তু তাদের একাধিক ব্যাচ বেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে গিয়ে দেখেছে তাদের ল্যাবের মেশিনের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের মেশিনের মিল নেই। তার মানে এখানে আমরা পিছিয়েই ছিলাম।’

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে গিয়ে একটি শব্দের সঙ্গে পরিচয় হওয়া একজন পড়ুয়া সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীর জন্য বিব্রতকর। এই সরকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হচ্ছে মাধ্যমিক পর্যায়ে আইসিটি অন্তর্ভুক্ত করা। এখন আমাদের প্রায় ৩২ হাজার ল্যাব হয়ে গেছে। এর মধ্যে সাত-আটটি ব্যাচ ল্যাবে কী কী জিনিসপত্র থাকতে হয়ে তা না জেনেই বেরিয়ে গেছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, উচ্চ শিক্ষার বিষয়গুলো। এখন টেলিভিশন চ্যানেল অনেক কিন্তু জার্নালিজম বলতে আমরা শুধু রিপোর্টারকেই বুঝি। ক্যামেরাপারসনরা চাইলেই আলাদা বিষয় নিয়ে পড়তে পারেন না।’

মুন্নী সাহা এ বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচার করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজ। পাশাপাশি বাংলা ট্রিবিউনের ফেসবুক ও হোমপেজে লাইভ দেখা গেছে এ আয়োজন। বৈঠকিটি অনুষ্ঠিত হয় ইউল্যাবের সহযোগিতায়।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

 

/এসও/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুকি চিনকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা: নুর
কুকি চিনকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা: নুর
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
সর্বাধিক পঠিত
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা   
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা