২০১৯ সালে দেশের গণপরিবহনে ৫২টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৯ নারী। দেশের সড়ক, রেল ও নৌপথে এসব ঘটনা ঘটে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়ক পথে ৪৪টি , রেলপথে ৪টি ও নৌপথে ৪টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৬টি ধর্ষণ, ১২টি গণধর্ষণ, ৯টি ধর্ষণচেষ্টা, ১৫টি যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৪টি মামলা হয়েছে। ৯৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে গণপরিবহনে চাঞ্চল্যকর রূপা গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদের মুখে স্বল্পতম সময়ে বিচার সম্পন্ন হয়। ওই ঘটনায় ৪ পরিবহন শ্রমিককে ফাঁসি ও ১ জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলে এ ধরনের ঘটনা কিছুটা কমে আসে। তবে বর্তমানে নিপীড়নকারী, ধর্ষক, হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
এছাড়াও গণপরিবহনে যাতায়াতকালে নারীরা অসম্মানজনক আচরণ, নিপীড়ন, হেনস্তা, যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শুধুমাত্র পরিবহন শ্রমিক, চালক, হেলপার নয় কখনও কখনও পুরুষযাত্রীদের দ্বারাও এ ধরনের যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী মনে করেন, এক বছরে এই পরিমাণ সংবাদপত্রে প্রকাশিত ঘটনা শুধুমাত্র প্রতীকি চিত্র। প্রকৃতপক্ষে ঘটনার ভয়াবহতা অনেক বেশি। সংগঠনটি গণপরিবহনে নারী নির্যাতন বন্ধে কিছু সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো:
১. গণপরিবহনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
২. চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের আলাদা আলাদা নেম প্লেটসহ পোষাক বাধ্যতামূলক করা।
৩. চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের নিয়োগপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি নিয়ে ডাটাবেজ তৈরি করা।
৪.গাড়ির ভিতরে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের হটলাইন নাম্বার, ফোন নাম্বার ও গাড়ির নাম্বার সাঁটানোর ব্যবস্থা করা।
৫.গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ানো।
৬. বাস মিনিবাসে নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন দরজার আসে পাশে রাখা।
৭. গণপরিবহনে অস্বচ্ছ ও বিজ্ঞাপনে মোড়ানো কাচেঁর ব্যবহার বন্ধ করা।
৮. গণপরিবহনে যৌন সহিংসতার মামলার বিচার দ্রুত শেষ করা।
