X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

তিন মাসে বজ্রাঘাতে মৃত্যু ১৩৬, নিরাপদ বলয় তৈরির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

উদিসা ইসলাম
০৫ জুন ২০২০, ১১:৩০আপডেট : ০৫ জুন ২০২০, ১১:৩৫

তিন মাসে বজ্রাঘাতে মৃত্যু ১৩৬, নিরাপদ বলয় তৈরির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের গত তিনমাসে বজ্রাঘাতে ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের মৃত্যু ঠেকাতে বজ্রপাত বেশি হয় এমন এলাকা সুনির্দিষ্ট করে সেখানে নিরাপদ বলয় তৈরি করতে হবে। বজ্রপাত সংকুল এলাকায় লাইটেনিং এরেসটার লাগিয়ে সেটি করা সম্ভব বলে মত দেন তারা।

গত কয়েক বছর ধরে বজ্রপাতের হার এবং বজ্রপাতের সময়সীমা বেড়েছে। ফলে বেড়েছে বজ্রাঘাতে মৃতের সংখ্যাও। প্রতিবছর মার্চ থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণের কোনও উপায় নেই। কিন্তু কিছু পদক্ষেপ নিয়ে নিরাপদ থাকা যেতে পারে। বজ্র ধরতে তালগাছকে একটি উপায় ধরে তালবীজ লাগানোর পরিকল্পনার সমালোচনা করে তারা বলছেন, তালগাছ বড় হতে অন্তত দুই দশক সময় লাগে। সে পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিল বাড়বে। ফলে সেই দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের ভেতর একটি আশু সমাধানের রাস্তা বের করে মৃত্যুহার কমানো যেতে পারে।

২০২০ এর মে পর্যন্ত তথ্যমতে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন ১৩৬ জন। এরমধ্যে কেবল এপ্রিলেই মারা গেছেন ৭০ জন। মে মাসে ৬০ জন। ডিজাস্টার ফোরাম গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে এ তথ্য সংগ্রহ করেছে।

ডিজাস্টার ফোরামের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত বজ্রাঘাতে মোট ৭৩ জন মারা গেছেন এবং ২৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৪ শিশু, পাঁচ নারী ও ৫৪ জন পুরুষ। এর মধ্যে ২১ এপ্রিল থেকে ১৮ মে’র মধ্যে নিহত হয়েছেন ১৮ জন। ২০১৮ সালে বজ্রাঘাতে নিহতের ঘটনা ঘটে ২৭৭টি।

মাস

শিশু

নারী

পুরুষ

মোট

মার্চ

০২

০৪

  ০৬

এপ্রিল

১০

০৩

৫৭

  ৭০

মে

১২

১০

৩৮

  ৬০

সর্বমোট

২২

১৫

৯৯

১৩৬

 

শিক্ষক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ নঈম গওহার ওয়ারা বলেন, প্রশ্ন হলো যে মানুষগুলো প্রতিবছর এই সময়টায় (বর্ষার আগে পরে) বজ্রপাতের কারণে মারা যাচ্ছে তারা আদৌ আমাদের চিন্তায় (এজেণ্ডায়) আছেন কিনা। ঝড় বজ্রপাতের শঙ্কা নিয়ে ফসল কাটার এই সময়ে মানুষগুলোকে হাওরে বাওরে মাঠে কাজ করতে হয়। একটা সময়ের মধ্যে ধান কাটতে না পারলে ধান পানিতে তলিয়ে যায়। বজ্রপাত সংকুল এলাকায় লাইটেনিং এরেসটার লাগিয়ে নিরাপদ বলয় তৈরি করা সম্ভব। নেপাল সেটা করেছে। তারা মৃত্যু কমাতে চেয়েছে, তারা পেরেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নির্ধারণ করে যদি এখনই এই জীবন রক্ষাকারী সাশ্রয়ী উদ্যোগ নেওয়া যায় তাহলে ফল পাওয়া যাবে।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মুরাদ আহমেদ ফারুক মনে করেন, যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, সেহেতু যতভাবে সম্ভব সচেতন হওয়া ও সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকারের উদ্যোগে তালগাছ লাগানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সেগুলো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। একটি তালগাছ পরিপূর্ণ হতে ২৫ বছর সময় লেগে যায়। ফলে নারিকেল সুপারির মতো দ্রুত যে লম্বা গাছগুলো লম্বা হয় সেসব গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এর আগে কোন এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেটি নির্ধারণ করে নিতে হবে।

তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ যেসব এলাকায় বেশি হতাহত হচ্ছে সেসব এলাকায় কিছুদূর অন্তর অন্তর ইটের অস্থায়ী ঘর তৈরি করতে হবে। যেখানে কৃষক ও মাঠে কাজ করা মানুষ কিছু সময় সুরক্ষার জন্য দাঁড়াতে পারেন। বজ্রঝড় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটের বেশি থাকে না। মাঠে যারা কাজ করেন তারা যদি ওই সময়টা পাকা ঘরে আড়াল করতে পারেন তাহলে মৃত্যুহার কমানো যাবে।

/ইউআই/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘সেফ জোনে’ ২৩ নাবিক, নিরাপত্তায় ইতালির যুদ্ধ জাহাজ
‘সেফ জোনে’ ২৩ নাবিক, নিরাপত্তায় ইতালির যুদ্ধ জাহাজ
‘আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪’
‘আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪’
টিভিতে আজকের খেলা (১৮ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৮ এপ্রিল, ২০২৪)
আর্সেনালকে হতাশায় ভাসিয়ে সেমিফাইনালে বায়ার্ন
চ্যাম্পিয়নস লিগআর্সেনালকে হতাশায় ভাসিয়ে সেমিফাইনালে বায়ার্ন
সর্বাধিক পঠিত
‘ভুয়া ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’
‘ভুয়া ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’
হজ নিয়ে শঙ্কা, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে ‍দুষছে হাব
হজ নিয়ে শঙ্কা, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে ‍দুষছে হাব
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
এবার নায়িকার দেশে ‘রাজকুমার’ 
এবার নায়িকার দেশে ‘রাজকুমার’ 
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫