X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘নিও নরমাল’ পরিস্থিতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় চলবে যেভাবে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৫০আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৫২

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিদ্যালয় খোলার পর ‘নিও নরমাল’ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিদ্যালয় চালুর সিদ্ধান্ত হলে নিরাপদ এলাকা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক বিদ্যালয় চালু করা হবে। একটি বড় বেঞ্চে সর্বোচ্চ দুজন শিক্ষার্থী বসতে পারবে। অবকাঠামো এবং শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বিবেচনা করে একাধিক শিফট কিংবা সপ্তাহের একেক দিন একেক শ্রেণি বা একাধিক শ্রেণির পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে। অসুস্থ বা অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকারা বিদ্যালয়ে যাবে না।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশিকায় এসব তথ্য জানানো হয়। জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয় সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিদ্যালয় পুনরায় চালু করার জাতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়।  এই নির্দেশিকাটি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশিকায় সাতটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। এসব গাইডলাইন অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিচে গাইডলাইন ও সেই অনুযায়ী কার্যক্রম তুলে ধরা হলো:

গাইডলাইন-১

বিদ্যালয় আবার চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার নানাবিধ মাত্রা সম্পর্কে সুস্পষ্ট সরকারি নির্দেশনা দেওয়া হবে।

কার্যক্রম

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারিকৃত নির্দেশনা ও গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও প্রাথমিক অধিদফতর থেকে পাঠানো সকল নির্দেশনা ও পরামর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

বিদ্যালয় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে নিরাপদ এলাকা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক বিদ্যালয় চালু করা যেতে পারে। করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় কোনও এলাকা সরকার রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করলে সে এলাকায় বিদ্যালয় খোলা রাখা যাবে না।

গাইডলাইন-২

বিদ্যালয় কার্যক্রম পুনরায় চালু করার আগে বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয়

কার্যক্রম

প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বাজেট প্রণয়ন ও অর্থায়নের পরিকল্পনা করতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আগাম অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।

গাইডলাইন-৩

বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত সুস্পষ্ট, সহজবোধ্য ও শিশুবান্ধব ভাষায় প্রোটোকল প্রণয়ন করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বাজায় রাখা, হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি বিষয়ক শিষ্টাচার, সুরক্ষা সরঞ্জামের ব্যবহার, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং নিরাপদ খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করার অভ্যাস গড়ে তোলা বিষয়ক তথ্য ও নির্দেশনা থাকবে।

কার্যক্রম

৩) বিদ্যালয় অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা ও জীবাণুমুক্তকরণ, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি বিষয়ক শিষ্টাচার, সুরক্ষা সরঞ্জামের ব্যবহার, অসুস্থদের জন্য করণীয় এবং নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুতকরণের অভ্যাস গড়ে তোলার বিষয়ে শিক্ষক/শিক্ষার্থী/কর্মচারী ও অভিভাবকদের জন্য তথ্য ও নির্দেশনা সংবলিত পোস্টার, লিফলেট প্রস্তুত, বিতরণ করতে হবে। এসব নির্দেশনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। শিশুদের স্কুলে আনার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

কোভিড-১৯ সংক্রমণ, লক্ষণ, জটিলতা ও প্রতিকারের উপায়গুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, এসএমসি, পিটিএ ও সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ অনুমোদিত স্বাস্থ্যবিধি, পোস্টার/লিফলেটের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।

প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহি নিশ্চিত করাসহ কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের করণীয় সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করে তা ছাপিয়ে বিতরণ করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে প্রশাসনিক কর্মী ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। এছাড়া পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জীবাণুমুক্তকরণ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং যথাসম্ভব ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করতে হবে।

গাইডলাইন-৪

৪) নিরাপদ বিদ্যালয় পরিচালনার লক্ষ্যে বিদ্যালয় খোলার আগে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। সে লক্ষ্যে বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান শুরু হওয়ার অন্তত ১৫ দিন আগে বিদ্যালয়গুলো শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

কার্যক্রম

৪) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ও কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক হাত ধোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হাত ধোয়ার সময় যাতে শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের জটলা না তৈরি হয় সেভাবে বিদ্যালয়ভিত্তিক পানির ট্যাপের অবস্থান ও সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।

৪.১) যেখানে সম্ভব হবে সেসব জায়গায় রানিং ওয়াটারের ব্যবস্থা করতে হবে। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচাগার স্থাপন বা সম্প্রসারণ করতে হবে। মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঋতুকালীন সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৪.২) বিদ্যালয় খোলার অব্যবহিত পূর্বে অবশ্যই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ শ্রেণিকক্ষ  ও টয়লেটগুলো স্বাস্থ্যসম্মত ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জীবাণুনাশক, সাবানসহ অন্যান্য পরিচ্ছন্নতা উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে।

৪.৩) বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষ, শ্রেণিকক্ষ, সর্বসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হয় এমন জায়গাসহ অন্যান্য জায়গার মেঝে ও ঘরের দরজার হাতল, সিঁড়ির হাতল, বেঞ্চ, এবং যেসব বস্তু বারবার ব্যবহৃত হয় সেসব বস্তুর তল/পৃষ্ঠ পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান ও সচেতন করতে হবে।

৪.৪) প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চত্বরের আবর্জনা পরিষ্কার এবং আবর্জনা সংরক্ষণকারী পাত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই সাবান দ্বারা হাত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান ও সচেতন করতে হবে।

৪.৫) অসুস্থ শিক্ষক/শিক্ষার্থী/কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা শিক্ষিকাদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি থেকে বিরত থাকতে হবে। অসুস্থ সন্তানকে বিদ্যালয়ে না পাঠানোর জন্য অভিভাবকগণকে অনুরোধ করতে হবে। অসুস্থতাজনিত অনুপস্থিতির কারণে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী যেন শ্রেণি মূল্যায়নে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশেষভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

৪.৬) শিক্ষক, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এ সকল বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। লিফলেট/পোস্টার/সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সচেতন করতে হবে।

৪.৭) যাদের পক্ষে সম্ভব তারা যেন সহজভাবে কাপড়ের তৈরি মাস্ক (৩ লেয়ার কাপড়ের) বানাতে পারেন তার সচিত্র বিবরণ দেওয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত তথ্যাদি ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভাষায় এবং ব্রেইলের মাধ্যমে সহজলভ্য করে তুলতে হবে এবং অবশ্যই ব্যবহৃত ভাষা শিশুবান্ধব হতে হবে। প্রয়োজনবোধে এ সকল বিষয়ে ছোট ছোট তথ্যচিত্র নির্মাণ করে প্রচার করা যেতে পারে।

৪.৮) বিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু, সমাপ্তি ও মিড-ডে মিল এর সময়সূচি এমনভাবে সাজিয়ে নিতে হবে যাতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জটলা না তৈরি হয়। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো এবং শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বিবেচনা করে একাধিক শিফট কিংবা সপ্তাহের একেকদিন একেক শ্রেণির বা একাধিক শ্রেণির পাঠদানের ব্যবস্থা রেখে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থানীয়ভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন, যাতে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যায়। পাঠ পরিকল্পনায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। মাঠ পর্যায়ে উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা উপরোক্ত পরিকল্পনা অনুমোদন করবেন এবং  উপজেলা/থানা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের বিদ্যালয়গুলোর পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা ও বাস্তবায়নের তদারকি করবেন।

গাইডলাইন-৫

বিদ্যালয় চলাকালীন পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত সুস্পষ্ট, সহজবোধ্য ও শিশুবান্ধব ভাষায় প্রোটোকল প্রণয়ন করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি বিষয়ক শিষ্টাচার, সুরক্ষা সরঞ্জামের ব্যবহার, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত পরিবেশ পরিষ্কার রাখা এবং নিরাপদ খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতের অভ্যাস গড়ে তোলা।

কার্যক্রম

৫.১) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং বহিরাগতদের শারীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিদ্যালয় খোলার আগেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক নন-কন্টাক্ট থার্মোমিটার সংগ্রহ করতে হবে। যাদের তাপমাত্রা বেশি পাওয়া যাবে তাদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ থেকে বিরত রাখেতে হবে।

৫.২) হোস্টেলে থাকাকালীন শিক্ষার্থীরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখবে। খাদ্য গ্রহণের সময় দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কমপক্ষে ১ মিটার শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে খাবার গ্রহণ এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব থালা বাসন বা ওয়ানটাইম থালা বাসন ও পানির পাত্র ব্যবহার করতে হবে। থালা বাসন এবং পানির পাত্র পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রতিবার পরিবেশনের পর পুনরায় ব্যবহারযোগ্য থালা-বাসন ও পানির পাত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৫.৩ স্বাভাবিক অবস্থা না আসা পর্যন্ত কোনও প্রকার অভ্যন্তরীণ জমায়েত আয়োজন করা যাবে না। যেকোনও বদ্ধ বা  জনবহুল স্থান বা অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। করোনাকালীন লম্বা বেঞ্চে ২ জন করে শিক্ষার্থী বসবে। শিক্ষার্থীরা যাতে গলাগালি কিংবা একে অপরকে জড়িয়ে না ধরে সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। বিদ্যালয়ের বাইরেও যেন শিক্ষার্থী ওে তাদের অভিভাবকরা এ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন করতে হবে।

৫.৪ শিক্ষক/শিক্ষার্থী/কর্মচারীদের করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা মেনে চলতে হবে এবং সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কিনা তা মনিটরিং করতে হবে।

৫.৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজের সীমিত ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে। শিক্ষকদের পারস্পরিক শারীরিক যোগাযোগ কমানো এবং দূর-শিক্ষণ বা অনলাইন শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৫.৬ বিদ্যালয় চলাকালীন শিক্ষক, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের বহির্গমন কমিয়ে দিতে হবে। অত্যাবশ্যক না হলে কেউ বাইরে যাবে না।

৫.৭ শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। বিদ্যালয়ে শিশুদের জন্য আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের সক্রিয় রাখতে হবে।

৫.৮ শিক্ষক/কর্মচারী/শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর সন্দেহভাজন কোনও উপসর্গ পাওয়া গেলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। আক্রান্তরা যাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে এসেছে তাদের দ্রুত শনাক্ত ও কোয়ারেন্টিনের  ব্যবস্থা করতে হবে।

৫.৯ কোয়ারেন্টিনে অবস্থানরত শিক্ষক/কর্মচারী/শিক্ষার্থীদের পিতামাতার স্বাস্থ্যের অবস্থা জানা এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।

৫.১০ কোনও নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচল ব্যবস্থা পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ব্যবহার উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত এটির পুনরায় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫.১১ সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে চলমান প্রাথমিক পাঠ কার্যক্রম  ‘ঘরে বসে শিখি’ সম্প্রচারের রুটিন সম্পর্কে সকলকে যথারীতি অবহিতকরণ, বাড়ির কাজসহ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। যেসব স্থানে মোবাইল ফোন/অনলাইন/ফেসবুক পেজ/ক্যাবল টিভির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে নিজেদের উদ্যোগে পাঠ কার্যক্রম সম্প্রচার করা হচ্ছে সেসব স্থানে ‘ঘরে বসে শিখি’ –এর মাধ্যমে প্রচার অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৫.১২ সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত ‘ঘরে বসে শিখি’ পাঠ দেখতে ও শুনতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে পাঠ শুরুর আগে ভয়েস/বার্তা পাঠানো যেতে পারে।

৫.১৩ কোনও শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের করণীয় কী হবে, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য মনিটর কো, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে যাদের সাহায্য দরকার হবে তাদের নাম ও মোবাইল সম্বর তালিকা করে সংরক্ষণ করতে হবে।

 

৫.১৪ কোনওরকম আতঙ্ক বা লোকলজ্জা সৃষ্টি না করে অসুস্থ শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের নিজ গৃহে অবস্থান করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য পরামর্শ প্রদান করতে হবে।

গাইডলাইন-৬

সুস্থতা ও সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে স্বাস্থ্য সূচকগুলো সক্রিয়ভাবে মনিটর করতে হবে। শিখন-শোখানো পদ্ধতিকে আরও গতিশীল করবে হবে, দূরশিক্ষণসহ মিশ্র শিখন-শেখানো পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। রোগ প্রতিরোধে সংক্রমণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কিত তথ্য পাঠে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

কার্যক্রম

৬.১ বিদ্যালয় চলাকালীন শিক্ষক, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে হবে। সকাল ও দুপুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে এবং ‘প্রতিদিনের প্রতিবেদন’  এবং ‘শূন্য প্রতিবেদন’ পদ্ধতি প্রবর্তন করতে হবে।

৬.২ শ্রেণি পাঠদানের পাশাপাশি দূরশিক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।  ভবিষ্যতে কোনও সময়ে সময় বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হলে সে ব্যাপারে দ্রুত প্রস্তুতির জন্য; যেখানে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে, সেখানে শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া জোরদার করতে এবং যেখানে বিদ্যালয়গুলো আংশিকভাবে খোলা রয়েছে অথবা পরিবর্তিত সময়সূচিতে চলছে অথবা অসুস্থতার কারণে কোয়ারেন্টিনের কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না সেসব জায়গায় মিশ্র পদ্ধতিতে শিক্ষা পরিচালনা করতে হবে।

গাইডলাইন-৭

৭) শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যোগাযোগ ও সমন্বয় প্রক্রিয়া এবং কৌশলগুলোকে আরও জোরদার করতে হবে, যাতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্থানীয় জনগণ, অভিভাবক ও শিশুদের সম্পৃক্ততা ও মতবিনিময় বাড়ানো যায়।

কার্যক্রম

৭.১ স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি  ও অভিভাবকদের এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করতে হবে। যোগাযোগের সুবিধার্থে প্রধান শিক্ষক ও এক বা একাধিক শিক্ষকের মোবাইল নম্বর প্রকাশ্য স্থানে ঝুলিয়ে রাখেতে হবে।

৭.২ প্রত্যেক উপজেলা শিক্ষা অফিসে তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে যাতে অভিভাবকসহ স্থানীয় জনগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন।

 

/এসএমএ/এমআর/
সম্পর্কিত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুজিবনগর দিবস পালনের নির্দেশ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই ধাপে কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালনের নির্দেশ
টেস্ট পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি নিলে ব্যবস্থা
সর্বশেষ খবর
ঢাকায় চীনের ভিসা সেন্টার, প্রয়োজন হবে না দূতাবাসে যাওয়ার
ঢাকায় চীনের ভিসা সেন্টার, প্রয়োজন হবে না দূতাবাসে যাওয়ার
থাইল্যান্ড ও ভারতের বক্সারকে হারিয়ে সুরো কৃষ্ণর ৬০০ ধাপ উন্নতি
থাইল্যান্ড ও ভারতের বক্সারকে হারিয়ে সুরো কৃষ্ণর ৬০০ ধাপ উন্নতি
রেকর্ড বৃষ্টির তৃতীয় দিনেও স্থবির দুবাই
রেকর্ড বৃষ্টির তৃতীয় দিনেও স্থবির দুবাই
বাংলাদেশের সাবেক কোচকে নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের সাবেক কোচকে নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট
তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট