নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের পরের দিন হাজি সেলিমের বাড়িতে র্যাব অভিযান পরিচালনা করে তার কাউন্সিলর ছেলেকে দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার করে। মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়া হয় তাদের। সাধারণ মানুষেরর ধারণা ওই কর্মকর্তাকে মারধরের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতেই র্যাব এই অভিযান পরিচালনা করেছে।
তবে র্যাব বাদী হয়ে যে মামলা করেছে, সেই মামলায় অভিযানের কারণে বলা হয়েছে, ২৬ দেবীদাস ঘাট লেনের ওই বাড়িতে মাদক রয়েছে র্যাবের কাছে এমন গোপন তথ্য ছিল। তাই অভিযান চালানো হয়েছে।
২৭ অক্টোবর রাতে ওই অভিযানের বিষয়ে চকবাজার থানায় চারটি মামলা করেছে র্যাব। অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা এসব মামলায় অভিযানের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, র্যাব-৩ এর একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হামপাতালের সামনে অবস্থানের সময় ২৬ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে জানতে পারে যে, ঢাকা মহানগরীর চকবাজার থানাধীন দেবীদাস ঘাট লেন ২৬, চান সর্দার দাদা বাড়ী ভবনে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ কয়েকজন ব্যক্তি অবস্থান করছে। এরপর বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ওই টিম মাদকের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেলা সাড়ে ১২টায় ওই বাড়ির সামনে যায়। র্যাবকে দেখে দুজন লোক দৌঁড়ে বাড়ির ভেতরে চলে যায়। পরবর্তীতে র্যাব বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে। এরপর বাড়ি তল্লাশি করে সাক্ষীদের সামনে জাহিদ মোল্লা ও ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার কর। তাদের দুজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়।
গত ২৫ অক্টোবর রাতে রাজধানীর কলাবাগানে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান নামে এক কর্মকর্তাকে মারধর করে হাজি সেলিমের ছেলে ও ডিএসসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষীরা। এই ঘটনায় ইরফান সেলিমের গাড়ি ও চালককে রাতেই আটক করে পুলিশ। পরের দিন ভোরে (২৬ অক্টোবর) ওয়াসিফ বাদী হয়ে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ দিয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইরফান সেলিমসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে এবং বাকি আরও দুই তিন জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
২৬ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাজি সেলিমের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লাকে। উদ্ধার করা হয় মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র। দুজনকে র্যাবের মোবাইল কোর্টে এক বছর করে সাজা দেয়।
অভিযানের বিষয়ে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. ক. আশিক বিল্লাহ জানিয়েছেন, র্যাব সব সময় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। প্রতিটি অভিযানই সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই করা হয়।