X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিকল্প প্রস্তাব অনার্স স্তরের বেসরকারি শিক্ষকদের

এস এম আববাস
০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৮:৪২আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৮:৪২

বিকল্প প্রস্তাব অনার্স স্তরের বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকরা সরকারি বেতন-ভাতার অংশ পেলেও অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা সে সুবিধা পান না। বিগত ২৮ বছর ধরে বঞ্চনার শেষ সমাধান হিসেবে জনবল কাঠামোতে পদ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিলেও সে দাবি বাস্তবায়নের কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।  আর সে কারণে সম্প্রতি সরকারের কাছে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষকদের দুর্দশা ঘোচানোর প্রস্তাব দিয়েছেন নেতারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কয়েক দফা বৈঠক করে অনেক বিষয় চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে সংশোধনের কোনও পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের পদ জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার কোনও সিদ্ধান্ত নেই।

বেসরকারি কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের পদ জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) ও নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক মোমিনুর রশিদ আমিন বলেন, ‘ডিগ্রিস্তর পর্যন্ত নীতিমালায় রয়েছে। অনার্স শিক্ষক তো নেই। যা রয়েছে সেগুলোই সংশোধন হচ্ছে।’

 দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে বঞ্চিত অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।  গত ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা বিষয়ক রিপোর্টারদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষক ও জনবল কাঠামো নিয়ে ভাবছি। এর সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত, তাদের সঙ্গে কিছুটা কথা হয়েছে। আমরা বসবো এই বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই সমাধান করার জন্য। ’

কিন্তু জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখে বঞ্চিত শিক্ষকরা মূল দাবিসহ বিকল্প প্রস্তাব করেন সরকারের কাছে। এর আগে জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার এক দফা দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষক নেতারা। 

জনবল কাঠামোতে পদ অন্তর্ভুক্ত করতে দাবি জানিয়ে আসা শিক্ষক নেতরা সর্বশেষ গত ২৯ নভেম্বর একটি স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেন। বাংলাদেশ নিগৃহীত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. ইমদাদুল হক মিলন এবং সাধারণ সম্পাদক এম মিল্টন মণ্ডল স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বিকল্প চারটি প্রস্তাব করা হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, কর্মরত শিক্ষকদের মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ক্ষমতাবলে এমপিও প্রদান এবং পরবর্তীতে শিক্ষক নিয়োগে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ ও নতুন করে কোনও শিক্ষক নিয়োগ না করার নির্দেশনা জারি করতে হবে।  এতে ভবিষ্যতে অনার্স ও মাস্টার্স স্তর নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ হয়ে যাবে। 

বৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করে অন্য কলেজে বদলি করতে হবে। একইসঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স স্তর শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া। 

কলেজে কারিগরি ট্রেড খুলে এসব শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা। সেক্ষেত্রে শর্ট কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সাধারণ বিষয়গুলোর শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্ত করা।

যদি এই তিন প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য না হয় সেক্ষেত্রে বেসরকারি অনার্স কলেজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত জাতীয়করণ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জনবল কাঠামো অনুযায়ী ডিগ্রিস্তর পর্যন্ত পরিচালিত এমপিওভুক্ত কলেজগুলোয় ১৯৯৩ সালে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের অনুমোদন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিধিবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত স্কেলে শিক্ষকদের মূল বেতন দেওয়ার শর্তে অনার্স-মাস্টার্সের বিষয় অনুমোদন নেয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কলেজের টিউশন ফি থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দেয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এই কারণে কলেজগুলোর জনবল কাঠামোতে স্থান পায় না অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের পদ। ফলে সরকারি বিধিবিধানের আলোকে এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হন তারা। আর বিগত ২৮ বছরেও এই সমস্যার সমাধান হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর থেকে বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স স্তর তুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর সে কারণে অনার্স ও মাস্টার্স স্তরের পদ জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  এই পরিস্থিতিতে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা