X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১
১৪ দলের তিন দফা বৈঠক

আসন বণ্টন এখনও চূড়ান্ত হয়নি, যা বললেন শরিকরা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:২৯আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:২৯

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে তিন দফা বৈঠক হলেও, এখন পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। দু-এক দিনের ভেতরেই চূড়ান্তভাবে ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীদের তালিকা জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন শরিক দলগুলোর নেতারা।

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সংসদ ভবন এলাকার এমপি হোস্টেলে আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদকের কার্যালয়ে রাত ৯টার দিকে বৈঠকে বসেন জোট নেতারা।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ একটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেটা হচ্ছে সিট সমঝোতা। তারা (আওয়ামী লীগ) বলেছে আলোচনা করবে। আমার কাছে মনে হয়েছে তারা এখনও প্রস্তুত করতে পারেনি।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৪-দলীয় জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে। জোটের যারা প্রার্থী হবেন, তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। আসন বণ্টনের বিষয়টি এখনও তারা বিবেচনা করছেন। আজ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসন বণ্টনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। তারা আরও দু-এক দিন সময় চেয়েছে। এর ভেতরেই চূড়ান্ত হলে ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীদের তালিকা আমরা দেশবাসীকে জানাতে পারবো। রাজনৈতিকভাবে ১৪ দল একসঙ্গে আছে, একসঙ্গে নির্বাচন করবে।

তিনি আরও বলেন, ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা এখনও নিষ্পত্তি করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। কোন দলের কে প্রার্থী হবেন, কোন আসন থেকে কে হবেন— সেই তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত আসনগুলো ছাড়া বাকি আসনগুলো উন্মুক্ত থাকবে। প্রতিটি দল তাদের প্রতীকে নির্বাচন করবে।

বৈঠক শেষে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, আমাদের অনেকগুলো লিস্ট দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর সঠিক সমন্বয় এখনও আসেনি। সেই লিস্টগুলো নিয়ে এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আমরা যারা চারজন সংসদে আছি, নিশ্চিত তারা নৌকা নিয়েই নির্বাচন করবেন। একটু সমস্যা হয়েছে, সেটা হচ্ছে মেনন ভাই কোথায় করবেন? তবে আমরা সবাই জানি তিনি কোথায় করতে পারেন। এই চারজনের সঙ্গে যারা যুক্ত হবেন, সেটা নিয়েই সমস্যা হচ্ছে। লিস্টটা ছিল লম্বা, সেখান থেকে আমরা শর্ট করে নিয়ে এসেছি। যাদের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো চূড়ান্ত করতে দুই-তিন দিন সময় নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, কোথায় কে জিতবেন, এটাও দেখার বিষয় এবং বর্তমান বিষয়টাও দেখতে হবে। আমি মনে করি যথার্থ ও সুন্দর আলোচনা হয়েছে। একটা জিনিস পরিষ্কার করা হয়েছে, নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবো।

নির্বাচনের পর বহির্বিশ্বের অবস্থান বিষয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে নজিবুল বশর বলেন, ১৪-দলীয় জোটের প্রয়োজনীয়তা আছে। এই প্রয়োজনীয়তার কারণেই জোটকে যতটুক সম্ভব সমন্বয় করা হবে।

তিনি বলেন, ১৪ দলের জোটের তালিকা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী চারবার ভোট করেছেন। প্রধানমন্ত্রী খবর নিয়েছেন, কোথায থেকে কে উঠে আসতে পারেন। এগুলো নিয়েই একটু যাচাই-বাছাই করে দু-এক দিনের মধ্যে বলে দেবেন।

তিনি আরও বলেন, এটা ভুললে চলবে না, নির্বাচনের পর একটা কঠিন সময় আসছে। ওই সময় জোটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমি মনে করি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত হওয়া দরকার এবং ১৫ তারিখের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

বেঠকে আমির হোসেন আমু ও ওবায়দুল কাদের ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

জোটের নেতাদের মধ্যে আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীণ আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ নির্বাচনের জন্য ২৯৮ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু (কুষ্টিয়া-২) ও জাতীয় পার্টি সেলিম ওসমানের (নারায়ণগঞ্জ-৫) আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেনি আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া ১৪-দলীয় শরিকদের সাত আসনেও প্রার্থী দেয় ক্ষমতাসীন দলটি।

আসন ভাগাভাগি নিয়ে জোটের নেতাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হলে ৪ ডিসেম্বর তাদের সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সমন্বয় করতে জোটের মুখপাত্র আমির হোসেন আমুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে আমুর বাসায় বৈঠক করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে দল দুটির সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যরা। বৈঠকে আসন ছাড়ের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে জোটের সমন্বয়ককে বোঝানোর চেষ্টা করেন তারা। বিষয়টি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানাবেন এবং ওবায়দুল তা শেখ হাসিনাকে জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন আমু।

/এমআরএস/এনএআর/
সম্পর্কিত
ভারতের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আ.লীগকে আমন্ত্রণ বিজেপির
ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি অনিক, সম্পাদক জাওহার
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
সর্বশেষ খবর
ওটিটিতে উঠলো মস্কোজয়ী ‘আদিম’
ওটিটিতে উঠলো মস্কোজয়ী ‘আদিম’
গাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪০০ ইসরায়েলি হামলা
গাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪০০ ইসরায়েলি হামলা
উ. কোরিয়ার হুমকির মুখে কূটনৈতিক সতর্কতা বাড়ালো দ. কোরিয়া
উ. কোরিয়ার হুমকির মুখে কূটনৈতিক সতর্কতা বাড়ালো দ. কোরিয়া
অবশেষে সমুদ্রশহরকে ভিজিয়ে দিলো স্বস্তির বৃষ্টি
অবশেষে সমুদ্রশহরকে ভিজিয়ে দিলো স্বস্তির বৃষ্টি
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
মে দিবসে ফুঁসে উঠলেন সিনেমা শ্রমিকরা
মে দিবসে ফুঁসে উঠলেন সিনেমা শ্রমিকরা