ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের আসন্ন সম্মেলনে বিএনপিকে দাওয়াত করা হবে। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি কূটনীতিকদেরও দাওয়াত দেওয়া হবে। যেহেতু মুজিববর্ষে বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, তাই এবারের সম্মেলনে কোনও বিদেশি মেহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে দলে পদ নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘জয়ের ইচ্ছার ব্যাপারও আছে। নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) বললে তিনি জানান, ‘জয় তো আসতে চায় না। এখনও তার আসার আগ্রহ নেই।’ এটি পার্টির সভাপতি, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বিষয়। জয়েরও ইচ্ছার ব্যাপার। আমি নেত্রীকে বলে আসছি জয়কে পরবর্তীকালের জন্য গ্রুমিং করার বিষয়টা। জয় যেভাবে আছেন সেভাবেই আপাতত থাকতে চান। পীরগঞ্জে তাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি ছিল, কিন্তু তিনি রাজি হননি। কাজেই এখানে জয়ের ইচ্ছারও ব্যাপার আছে। জয় যখন দেশে আসবেন, তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।’’ দলে শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ অপরিহার্য নয় বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দলের সাধারণ সম্পাদক পদেও নেত্রী যা করবেন সেটাই হবে। তিনি পরিবর্তন চাইলে হবে। আমাদের এখানে কোনও প্রতিযোগিতা নেই। কারও কারও ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষাও থাকতে পারে। সাধারণ সম্পাদক পদেও প্রার্থী থাকতে পারে। কোনও অসুবিধা নেই। যদি মনে করি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ হতে পারবেন না—এটা তো ঠিক না। এটা ডিসাইড করবেন নেত্রী। তবে প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবার আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কমিটির কলেবর বাড়ানোর চিন্তাভাবনা নেই। কমিটি ৮১ জনেরই থাকবে। বর্তমান কমিটিতে একটি সদস্যপদ ও সভাপতিমণ্ডলীর দুটি সদস্যপদ খালি আছে। সেগুলো এখন আর পূরণ হবে না। সম্মেলনেই আমরা পুরো কমিটি করবো।এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।’
ওবায়দুল কাদের জানান, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন কোনও এমপি উপজেলা পর্যায়ে প্রার্থী হতে পারবেন না। এটা আমরা নিরুৎসাহিত করছি। সংসদ সদস্যদের আমরা অনুরোধ করছি, তারা যেন উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে না এসে ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের একটা সুযোগ করে দেন। তাদেরও অধিকার আছে। তারা এমপিও হতে পারেনি, দলে নেতৃত্বও পাবেন না, এটা তো হয় না।’
জাতীয় সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন কাউন্সিল অধিবেশন হবে। যদি ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রে কোনও সংশোধনী থাকে, সেটার অনুমোদন নেওয়া হবে। ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর ব্যাপারে এরমধ্যেই আমরা জেলা শাখাগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছি। তাদের কোনও প্রস্তাব আছে কিনা সে ব্যাপারে তাদের আমরা চিঠি পাঠাতে বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বর্তমান মঞ্চে জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নৌকার আদলে মঞ্চ হচ্ছে। সম্মেলন জাঁকজমকপূর্ণ হবে না। তবে মুজিববর্ষ জাঁকজমকপূর্ণ হবে। সম্মেলনে দেশের প্রবীণ রাজনীতিকদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ সেখানে তরুণদের মধ্যে বসাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা হয়। এটা বড় কিছু নয়।’
পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই তুরস্ক, মিসর থেকে পেঁয়াজ আসবে। এ সংকট সাময়িক।’
বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনের মাধ্যমে চায় না অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘তারা আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করুক। এটা দেখার অপেক্ষায় আছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
