করোনা সংকটকালে স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতার কথা তুলে ধরেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। সোমবার (১১ মে) এক ভিডিও বার্তায় হানিফ বলেন, ‘ব্যাপক উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠার মধ্যেই ধীরে ধীরে দেশের সব প্রান্তে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। জীবন ও জীবিকা, দুটোই আজ বিপন্ন। জীবন ও জীবিকার জন্য আমরা লড়াই করে যাচ্ছি। করোনাভাইরাসের প্রকোপ যত বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাও ততটাই প্রকাশ পাচ্ছে। প্রকাশ পাচ্ছে আমাদের সামর্থ্যের ঘাটতি ও সমন্বয়ের অভাব।’
ভিডিও বার্তায় তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করে মানবিক হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।
হানিফ বলেন, ‘চেষ্টা করা হচ্ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে ওঠার। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আমাদের ভরসার জায়গা একটাই, সেটা হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি শুরু থেকেই এই করোনাভাইরাসের দুর্যোগ মোকাবিলায় সীমিত সামর্থ্য নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন। সব সময় প্রতিটি কাজ তদারকি করছেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন মনিটরিং করছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জীবন রক্ষা এবং জীবিকার ব্যাপারে অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিয়েছেন। মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এই সংকটকালে জাতির প্রত্যাশা ছিল এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাই আন্তরিক এবং মানবিক হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই কঠিন সময়েও করোনা নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হয়নি। চলছে পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ, চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। কিন্তু কেন এই কাদা ছোড়াছুড়ি? কেন এই দোষারোপের রাজনীতি? দেশের মানুষ তো সব রাজনৈতিক নেতাকে চেনেন, তাদের জানেন, তাদের অতীত এবং বর্তমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও দেশবাসী সজাগ আছেন। ক্ষমতাসীন দলের সরকার পরিচালনায় অভাবনীয় সফলতা, ব্যাপক উন্নয়ন, অগ্রগতি যেমন তারা দেখেছেন, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের দুর্বলতাও তাদের চোখে পড়েছে। আর ক্ষমতার বাইরে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের দেশ পরিচালনার সীমাহীন ব্যর্থতা, অযোগ্যতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনীতি দেশের মানুষ দেখেছেন। তাহলে এসব কাদা ছোড়াছুড়ি করে কী লাভ?’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্ষমতার বাইরে যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ, অযথা সরকারের দোষ খোঁজার চেষ্টা না করে আপনাদের যদি কোনও ভালো পরামর্শ থাকে দুর্যোগ মোকাবিলায়, সেটা প্রকাশ করুন। সরকার অবশ্যই যেকোনও ভালো পরামর্শ গ্রহণ করবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি দলসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি অনুরোধ, অহেতুক অপ্রয়োজনীয় পরচর্চা থেকে বিরত থাকুন।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই দুর্যোগকালে চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট সেবা কর্তৃপক্ষের মতামত এবং তাদের সিদ্ধান্ত, এই বিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করুন। যার মাধ্যমে দেশের জনগণ উপকৃত হবেন। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের নামে পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপের রাজনীতি দেশবাসী এখন আর দেখতে চায় না। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করার সময় এখনও হয়নি। আগে দুর্যোগ কেটে যাক। তারপর সরকারের প্রতিটি কর্মকাণ্ড, প্রতিটি পদক্ষেপের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই মূল্যায়ন করা যাবে, সমালোচনাও করা যাবে। এই দুর্যোগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলুন।’
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মানবিক হোন, মানবতার হাত বাড়িয়ে দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন।’