জুন ও জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, সরকারের হাতে এখন যে সংস্কারকাজ আছে, সেটা করতে এক মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (১৪ জুন) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটা গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের লড়াই, গণ-অধিকারের লড়াই, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষার লড়াইয়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি গড়ে উঠেছে গত ২১ বছর ধরে। এই লড়াইয়ে আমাদের অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন, প্রাণ হারিয়েছেন। পাশাপাশি এই লড়াইয়ে আমাদের অসংখ্য মামলা-মোকদ্দমার শিকার হতে হয়েছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে হাতে গোনা যে কয়েকটি দল রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছিল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সেখানে অন্যতম। ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বরের পরও যখন অনেকে পুলিশের ভয়ে রাজপথে নামার সাহস পাননি তখনও আমরা বুক চিতিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছি। আমরা বলেছিলাম, এই ফ্যাসিবাদকে বিদায় দেবো এবং সেই কথা আমরা রক্ষা করেছি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানেও আমাদের নেতাককর্মীরা মাঠে থেকেছেন আহত হয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন। গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন যেকোনও মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা বলেছিলাম, আপনারা সোজা পথে হাঁটেন। আমরা বলেছিলাম, বিচারের কাজটাকে জোরদার করতে হবে। আমরা যেমন একাত্তরের হত্যাকারীদের বিচার চাই, তাদের যেমন পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই, তেমনই গত বছরের অভ্যুত্থানে যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদেরও বিচার করতে হবে। সরকারকে বলতে চাই, বিচারটা দৃশ্যমান করেন। কার্যকর করেন। একই সঙ্গে আমরা বলেছি, সংস্কারের বিষয়ে ইতোমধ্যে আপনারা অনেক লম্বা সময় নিয়েছেন, আমরা আশা করবো, এই জুন-জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজগুলো সম্পন্ন করবে। জুলাই সনদে যেন সব রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করতে পারে সে বিষয়ে আপনারা কার্যকর উদ্যোগ নেবেন। যে কাজ আপনাদের হাতে আছে তা করতে কোনোভাবেই একমাসের বেশি লাগার কথা না।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের বৈঠক নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা ও অবিশ্বাস অনেকখানি দূর করবে বলে আশা করা যায়। এ বৈঠককে সরকারের ‘বিলম্বিত বোধদয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে এ উদ্যোগ নেওয়া হলে রাজনৈতিক সংকট এড়ানো সম্ভব হতো। এই আলোচনার বিষয়বস্তু রাজনৈতিক দল ও জনগণের সামনে প্রকাশ করা জরুরি।
এ সময় তিনি একাত্তর থেকে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানান।
এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন মোশতাক, আনসার আলী দুলাল, আবু হাসান টিপু প্রমুখ।