পাইলট প্রজেক্ট ও আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট হিসেবে গত চার বছর ধরে চলছিল এএফসি নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। এবার সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এশিয়ান শীর্ষ ফুটবল সংস্থা প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ আয়োজন করতে যাচ্ছে। ক্লাব দলগুলোকে নিয়ে এই আয়োজনে দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারতের ওডিশা এফসি জায়গা করে নিলেও নেই বাংলাদেশের কোনও ক্লাব!
এবার যারা এএফসির শর্ত পূরণ করতে পারবে, তাদের নিয়ে হবে বাছাই পর্ব। সেখান থেকে ১২টি দল তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ৬ থেকে ১২ অক্টোবর খেলবে। তিন গ্রুপ সেরা ও রানার্সআপ এবং সেরা দুই তৃতীয় দলসহ মোট ৮ দল নিয়ে ২০২৫ সালের মার্চে হওয়ার কথা নক আউট পর্ব।
এএফসি বাংলাদেশের কাছেও প্রস্তাব পাঠিয়েছিল নারী ক্লাব দলের নাম পাঠাতে। তবে সেই সঙ্গে কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। যে ক্লাবের নাম পাঠানো হবে, তাদের ক্লাব লাইসেন্সিং ও লিগে কমপক্ষে ১০টি করে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই শর্তাবলির মধ্যে আরও আছে নারী লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের নামও দিতে হবে।
কিন্তু এএফসির কোনও শর্তই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। একে তো বাংলাদেশে নারী লিগ এখন সৌখিনতার পর্যায়ে আছে, নেই কোনও পেশাদার ক্লাব, লিগ হচ্ছে সিঙ্গেলভিত্তিক। সেখানে ৮টির বেশি ম্যাচ পাচ্ছে না কোনও দল। গতবারের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এবার লিগে থাকলে হয়তো সুযোগ নেওয়া যেতো।
কিন্তু কিংস না থাকায় ২ মের মধ্যে এএফসির কাছে বাংলাদেশ থেকে নারী লিগের কোনও ক্লাবের নাম পাঠানো যায়নি।
বাংলাদেশ নারী উইং কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ এই প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমাদের এখানে এখনও নারী লিগ পেশাদারিত্বের মর্যাদা পায়নি। যখন ছেলেদের লিগে খেলা বড় দলগুলো নারীদের ফুটবলে নিয়মিত খেলবে। তখনই আমরা এএফসির নারী লিগে আবেদন করতে পারবো। এছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।’
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারও প্রায় একই কথা বললেন, ‘এএফসি নানান শর্ত দিয়েছিল। ক্লাব লাইসেন্সিং থাকতে হবে। ডাবল লিগ পদ্ধতিতে খেলা হয় কিনা। এছাড়া আরও কিছু বিষয় ছিল। যা আমরা পূরণ করতে পারিনি। যদি বসুন্ধরা কিংস এবার থাকতো, তাহলে হয়তো একটা সুযোগ নেওয়া যেতো। তাই আমরা এবার প্রথমবারের মতো লিগে খেলার জন্য এএফসির কাছে আবেদন করতে পারিনি।’
নারী ফুটবল লিগে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসানও দেখেছেন এএফসির নারী লিগের নতুন ফরম্যাট। তার কথা, 'আমরা তো এবার নানান কারণে খেলিনি। হয়তো খেললে আবেদন করার সুযোগ ছিল। তবে সামনে নিশ্চয়ই খেলার সুযোগ থাকবে।'
এমনিতে নারী ফুটবলারদের বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ কম। এএফসি নারী লিগে কোনও দল খেলতে পারলে তাতে করে সাবিনা-কৃষ্ণা-সানজিদাদের জন্য অন্যরকম অভিজ্ঞতা অর্জনেরই সুযোগ হতো। এখন অপেক্ষা সামনের দিকে।