জিম্বাবুয়েকে আমার কাছে ব্যাটিং নির্ভরশীল একটি দল মনে হয়। ম্যাচ জিতে এর আগে তারা অনেক ম্যাচেই সেটা প্রমাণ করেছে। তবে তাদের উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের কোনও একজন বড় একটা ইনিংস খেলতে না পারায় দুই প্রান্তেই উইকেট হারিয়েছে। সাম্প্রতিককালে তাদের বিপদের ত্রাণকর্তা হওয়া সিকান্দার রাজা দ্রুত আউট হওয়ায় জিম্বাবুয়েকে ৪৪ ওভারেই ১৯৮ রানে গুটিয়ে যেতে হয়েছে।
একটি জয়ের সফলতা দলকে আরেকটি ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনার পথ দেখায় এবং চাপে থাকা লঙ্কানদের আরও চাপ দিতে গিয়ে সেটা উল্টো তাদের ব্যাটসম্যানরা নিজেরাই নিয়ে ফেলেছে। একই মাঠে ম্যাচ যত হবে, পরিচর্যার সময়ের অভাবে ধীরে ধীরে পিচ ততই মন্থর হবে। আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৯০ রান করার সফলতা থাকায় আজ এই পিচ থেকে কত রানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে তারা নেমেছিল, জানি না। তবে একটি বড় ইনিংস, দুটি ভালো জুটি ও পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারলে ২৫০ থেকে ২৬০ রান না করার কোনও কারণ আমি দেখি না।
তবে এর কৃতিত্ব দিতে হবে বর্তমানে লঙ্কানদের অন্যতম ত্রাণকর্তা থিসারা পেরেরাকে। বল ও ব্যাট হাতে সম্প্রতি আস্থা ও সফলতার একটি প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বল হাতে ছিলেন অসাধারণ। হ্যামিলটন মাসাকাদজা ও সেট ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলরের দুটি উইকেট ছিল সবচেয়ে উপযোগী।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ম্যাচে লাকশান সান্দাকানকে একাদশে না দেখে অবাক হয়েছিলাম। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের লেগ স্পিনার প্রীতি উপেক্ষা করে হাসারাঙ্গার জায়গায় সান্দাকান এসে ফিরিয়ে দিয়েছেন ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাকে। আর সেখানেই জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন হয়। যার শেষটা করেন নুয়ান প্রদীপ।
জয়ের জন্য সেরাটা ঢেলে দিতে আজ শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়রা নিশ্চয়ই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। মাঠে সেটা তারা করে দেখিয়েছে। সম্ভবত প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। নইলে ১৯৯ রানের সহজ টার্গেট অন্য কোনও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে তারা পেতো না।
ব্লেসিং মুজারাবানি, কাইল জার্ভিস ও দলনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার ছাড়া অন্য কারও বোলিং আমার ভালো লাগেনি। ঘাসহীন পিচে তেন্দাই চেতারা ততটা কার্যকরী নয় ও সিকান্দার একজন সাদামাটা অফ স্পিনার। কাজেই ১৯৯ রানের লক্ষ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে হোঁচট খেলেও লঙ্কানরা পরবর্তী পর্যায়ে অভিজ্ঞতার আলোকে ভালো সামাল দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার এই জয়ে টুর্নামেন্টে দুই দলের জন্যই এখনও সমান সুযোগ থাকছে ফাইনাল খেলার।
টুর্নামেন্টকে আকর্ষণীয় করে রাখতে কুশল পেরেরাকে আহত হয়ে মাঠের বাইরে বসে থাকার দৃশ্য মোটেই ভালো লাগবে না, বর্তমান ক্রিকেটে তিনি দর্শকদের জন্য চমৎকার বিনোদন।