সোমবার আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত (সিএএস) মানচেস্টার সিটির দুই বছরের ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ম্যানচেস্টারের ক্লাবটিতে এই রায় বইয়ে দিয়েছে খুশির বন্যা। কিন্তু তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবগুলো এ রায়কে ভালোভাবে নেয়নি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের চোখে এটি, ‘ফুটবলের জন্য খারাপ দিন’, টটেনহামের কোচ জোসে মরিনিয়ো বলেছেন, সার্কাসের দরজা খুলে গেছে আর এতে ধনী ক্লাবগুলো ইচ্ছেমতো টাকা ঢালবে। রায় পক্ষে আসার পর থেকেই উজ্জীবিত সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা দুজনের দিকেই তোপ দেগেছেন।
স্কাই স্পোর্টসকে গার্দিওলা বলেছেন, ‘তারা যদি কথা বলতে চান, আসুন, আমি তো আছি। তিনজন নিরপেক্ষ বিচারের দেওয়া রায়টা পরিষ্কার। কিন্তু তারা যদি আমার টেলিফোন নম্বর চান, আমার সঙ্গে কথা বলতে চান আমি তাদের বুঝিয়ে বলবো। আমার কোনও সমস্যা নেই।’
গার্দিওলা নিজেই আবার বলছেন তার কোনও কথা বলার দরকার নেই, ‘রায়টা পরিষ্কার। আমরা প্রতারণা করেছি, মিথ্যে বলেছি- এই যে কথাগুলো বলা হচ্ছিল সেগুলো ঠিক নয়। আমরা স্বচ্ছ, আর সেটা তারাই (আদালত) বলে দিয়েছেন।’
সিএএসের এই রায় নিয়ে মঙ্গলবার কথা বলতে গিয়ে ক্লপ কোনও আড়াল রাখেননি, সোজা-সাপ্টা বলে দিয়েছেন, ‘আমার মনে হয় না ফুটবলের জন্য ভালো কিছু হলো। এফএফপি (ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে) ধারণাটা দারুণ। দলগুলো ও ফুটবলকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই এটার প্রচলন, যাতে কেউ বেশি ব্যয় করতে না পারে এবং বৈধ উৎস থেকে অর্থটা আসে।’
ক্লপের মতে, ‘এটা হলো ফর্মুলা—১-এর মতো, আপনি যদি প্রাইভেট জেটকে নামিয়ে দেন, অ্যারোপ্লেনই জিতবে। আর গাড়িটা নির্দিষ্ট রাস্তায় থাকলে সেরা ড্রাইভার জিতবে। এটাই তো প্রতিযোগিতা, যেখানে নির্দিষ্ট আইন থাকবে এবং আমাদের সবাইকে তা মেনে চলতে হবে।’
মরিনিয়ো আরেকটু বেশি আক্রমণাত্মক সুরে বলেছেন, এফএফপি আইনটা এখন মৃত এবং তার কাছে বোধগম্য নয় কেন সিটিকে মুক্ত করে দিয়ে তাদের আবার ১০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হলো। ‘এটা একটা দু:খজনক রায়। ম্যান সিটি যদি দোষী না হয়, তাদের কয়েক মিলিয়ন জরিমানাটাও তো অপমানজনক। আপনি দোষী না হলে আপনার শাস্তিও হবে না। অন্যদিক দিয়ে যদি তারা দোষী হয়, তাদের নিষিদ্ধ হতে হবে। যেভাবেই দেখুন না কেন এ রায়টা একটা বেইজ্জতি ব্যাপার।’
মরিনিয়ো তার মতো করেই রসিয়ে রসিয়ে আরও বলেছেন, ‘আমি মনে করি এফএফপি আইনটার কবর হয়ে গেছে। এখন সার্কাসটা উন্মুক্ত করে দিন, সব মানুষকে উপভোগ করতে দিন। কোনও পয়সা-কড়ির দরকার নেই, ভেতরে ঢুকুন, বেরিয়ে আসুন। ভাঁড়ের শো দেখার জন্য ভেতরে থাকুন, ঘোড়ার কসরৎ আমি দেখবো না। কোনও কিছুর নিয়ন্ত্রণই আর নেই। মানুষকে স্বাধীনতা ভোগ করতে দিন।’