X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০

পাঁচ বছরে বেসরকারি বিনিয়োগ এক শতাংশও বাড়েনি

গোলাম মওলা
১৮ জুলাই ২০১৭, ২১:৫০আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৭, ০৯:০২

বিনিয়োগ গত পাঁচ বছরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ নিয়ে বহু আলোচনা হলেও এই খাতের কোনও উন্নতি হয়নি। এ সময়ে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এক শতাংশও বাড়েনি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৭-তে এ চিত্র উঠে এসেছে। সরকারি এ পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কতটা নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। অথচ এই খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোকে কেন্দ্র করে বছরের পর বছর নানা রকম সেমিনার, কর্মশালা ও আলোচনা হয়েছে কিন্তু এই খাতে  সত্যিকার অর্থে বিনিয়োগ বাড়েনি।

অর্থনৈতিক সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে জিডিপির ২৩ দশমিক ০১ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন ব্যাংক ঋণে সুদ হার কম ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিও শান্ত। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। কারণ, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে এখনও আস্থার সংকট কাটেনি। তবে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ পেলে শুধু দেশি উদ্যোক্তা নয়, বিদেশরাও এই দেশে বিনিয়োগ করতে আসবেন।’

সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২২ দশমিক ০৩ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২২ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

তবে আশা কথা হলো, দেশে সরকারি বিনিয়োগ জিডিপিতে প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে সরকারি বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সেটি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশে।
জানা গেছে, বিনিয়োগ স্থবিরতা কাটাতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন পাস হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগের জন্য একটি দফতর থেকেই ১৬ ধরনের সেবা মিলছে। তারপরও বিনিয়োগ বাড়ছে না।

এদিকে বিনিয়োগে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করায় দেশের ব্যাংকিং খাতে অলস টাকার পাহাড় জমছে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য অর্থাৎ বিনিয়োগযোগ্য অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৭ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। অথচ উদ্যোক্তারা ঋণ নিচ্ছেন না। সুদের হার কমানোর পরও ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

উদ্যোক্তরা বলছেন, দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি। তাই, ব্যাংক ঋণ নিয়ে ঝুঁকিতে পড়তে চান না তারা। এ প্রসঙ্গে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাশেম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের অবস্থা সন্তোষজনক না হওয়ার পেছনে অবকাঠামোগত দুর্বলতাই বড় কারণ। জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে ৮ শতাংশ উন্নীত করতে হলে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কোনও বিকল্প নেই। অবকাঠামোতে বিনিয়োগ জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অথচ বিনিয়োগ প্রয়োজন জিডিপির ৬ থেকে ৮ শতাংশ। তবে জ্বালানির অপ্রতুলতাও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় বাঁধা।’

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্যাস সংকট। এছাড়াও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও উপযুক্ত জমি পাওয়া যায় না।’

অর্থনৈতিক সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে স্থানীয় বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এটি দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এটি ৬১ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

/এসএনএইচ/এপিএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘বিএনএমের সদস্য’ সাকিব আ.লীগের এমপি: যা বললেন ওবায়দুল কাদের
‘বিএনএমের সদস্য’ সাকিব আ.লীগের এমপি: যা বললেন ওবায়দুল কাদের
ভাটারায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে লোহার পাইপ পড়ে হোটেল কর্মচারীর মৃত্যু
ভাটারায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে লোহার পাইপ পড়ে হোটেল কর্মচারীর মৃত্যু
সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউনের কয়রা সফর সম্পন্ন
সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউনের কয়রা সফর সম্পন্ন
২০২৩ সালে বায়ুদূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ
২০২৩ সালে বায়ুদূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
দিন দিন নাবিকদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করছে দস্যুরা
দিন দিন নাবিকদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করছে দস্যুরা
পদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
একীভূত হলো দুই ব্যাংকপদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ আর নেই
‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ আর নেই