ওয়ালটন এখন দেশেই তৈরি করছে বিশ্বমানের নাট, বোল্ট ও স্ক্রু। ফলে এসব পণ্যের আমদানি নির্ভরতা কমে আসার পাশাপাশি এই খাতে উল্লেখযোগ্য সফলতাও দেখা দিয়েছে। ওয়ালটন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউশনস বিভাগের প্রধান আব্দুর রউফ জানান, বাজারে ওয়ালটনের তৈরি এসব পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা অন্তত তিন গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ঢাকার নবাবপুরে রয়েছে নাট, বোল্ট ও স্ক্রর মতো প্রকৌশল পণ্যের বিশাল বাজার। এর কথা মাথায় রেখে ওয়ালটনের কারখানায় বিশ্বের আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র সংযোজন করা হচ্ছে বলে জানান আব্দুর রউফ। এছাড়া বাড়ছে লোকবল। তার দাবি, বেশকিছু দেশীয় ফার্নিচার, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের কাছ থেকে নাট, বোল্ট ও স্ক্রু নিচ্ছে।
সূত্র মতে, বার্ষিক প্রায় ১৮০০ টন নাট, বোল্ট ও স্ক্রুর উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ওয়ালটনের। এর মধ্যে ওয়ালটনের নিজস্ব চাহিদা রয়েছে ৩৬০ থেকে ৪০০ টন।
নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাজারে বিপুল পরিমাণ নাট, বোল্ট ও স্ক্রু সরবরাহ করেছে ওয়ালটন। এসব পণ্য বিদেশেও রফতানি করা হবে। এ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্কসহ বেশকিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এখন আলোচনা চলছে।
বিভিন্ন শিল্প কারখানায় আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেক্ট্রিক্যাল, অটোমোবাইলসহ অসংখ্য পণ্য উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় নাট, বোল্ট ও স্ক্রু। এসব পণ্য আকারে ছোট হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলোর মানের ওপর সংশ্লিষ্ট পণ্যের দীর্ঘস্থায়িত্ব নির্ভর করে। বাংলাদেশে এই খাতের বিশাল বাজার রয়েছে।
এতদিন বেশি দাম দিয়ে বিদেশ থেকে এগুলো আমদানি করতে হতো। ওয়ালটন দেশেই উচ্চমানসম্পন্ন নাট, বোল্ট ও স্ক্রু তৈরি করায় ব্যবসায়ীরা যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। রাজধানীর জনসন রোডের নিউ নাসির হার্ডওয়্যার স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আগে নাট, বোল্ট ও স্ক্রু আমদানি করতাম। এতে সময় ও খরচ উভয়ই বেশি লাগতো। আমদানি করা পণ্যের মান নিয়েও পুরোপুরি সন্তুষ্ট ছিলাম না। কিন্তু ওয়ালটনের তৈরি এসব প্রকৌশল পণ্যের মান অনেক ভালো।’
ওয়ালটনের স্ক্রু আরএনডি (গবেষণা ও উন্নয়ন) বিভাগের প্রধান পৃথ্বিশ কুমার সাহা জানান, আন্তর্জাতিক মানের উৎপাদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটনের নাট, বোল্ট ও স্ক্রু। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মান প্রযুক্তির ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে এগুলোর আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ওয়ালটনের তথ্য অনুযায়ী— ফ্রিজ, এলইডি টিভি, এসি, কম্প্রেসর, বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রিক ফ্যান, রাইস কুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাস স্টোভ, সুইচ-সকেট, এলইডি লাইট ইত্যাদি পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার হচ্ছে নিজস্ব কারখানায় তৈরি নাট, বোল্ট ও স্ক্রু। সংশ্লিষ্টদের অভিমত, এর মাধ্যমে তৈরি হওয়া সম্ভাবনা দেশের শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করবে।
