X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু বাজেট: স্বচ্ছতাই চ্যালেঞ্জ

আমীন আল রশীদ
১৮ জুন ২০১৮, ১৬:২৩আপডেট : ১৮ জুন ২০১৮, ১৬:৩০

আমীন আল রশীদ অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে এখন একটু বেশি বৃষ্টি হলেই আমরা বলি, এটা জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। বজ্রপাত বেড়ে গেছে, বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। গ্রীষ্মকাল দীর্ঘায়িত হচ্ছে, মানে গরম বাড়ছে। বলছি জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। অর্থাৎ যত দোষ এখন এই জলবায়ু পরিবর্তনের। বিজ্ঞানীদের মধ্যেও এ নিয়ে মতদ্বৈধতা আছে যে, সবকিছুকে এরকম জলবায়ু পরিবর্তনের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া যৌক্তিক কিনা?
তবে প্রভাব ও বিস্তৃতি নিয়ে মতভিন্নতা যাই থাকুক, জলবায়ু পরিবর্তন যে এখন নির্মম বাস্তবতা এবং বাংলাদেশ যে এর ইনোসেন্ট ভিকটিম বা নিরপরাধ শিকার, সে বিষয়ে কোনও বিতর্ক থাকার কথা নয়। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সরকারের জাতীয় অভিযোজন কর্মসূচির (২০০৯) তথ্যমতে, ২০৩০ এবং ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যথাক্রমে ১৪ এবং ৩২ সেন্টিমিটার বাড়বে। আর জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেল-আইপিসিসির হিসাবে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে এই শতাব্দীতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে ৯ থেকে ৮৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। জাতীয় সংসদে ২০১০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী জানান, সমুদ্রের উচ্চতা বাড়ার ফলে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ অন্যান্য উপকূলীয় এলাকার অনেক ভূমি পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে। প্রসঙ্গত, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৮ শতাংশ লোকই উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করেন।

প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের পেছনে প্রধানত দায়ী করা হয় মানুষকেই। আরও পরিষ্কার করে বললে শিল্পায়ন আর নগরায়নের নামে অতিমাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে নিঃসরণ হয়। যে কারণে শিল্পোন্নত দেশগুলোকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়। সে কারণে বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় এবং যারা এই সংকটের জন্য দায়ী নয়, তারা দায়ী রাষ্ট্রগুলোর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। এ নিয়ে জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মেলন, বিশেষ করে আইপিসিসির কোপ বা কনফারেন্স অব পার্টিতে এই দাবি তোলা হয়। তা নিয়ে তর্ক হয়। দেনদরবার হয়। যদিও জলবায়ু অর্থায়নের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে অর্থ পাওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং। জলবায়ু অর্থায়নের জটিল কাঠামো বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য অর্থপ্রাপ্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অর্থ সরবরাহ পদ্ধতি উন্নয়নশীল দেশ ও জোগানদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল প্রাপ্তি ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তৈরি করে।

কিন্তু এই বৈশ্বিক তহবিল কী পাওয়া গেছে, যাচ্ছে বা যাবে সেই ভরসায় বসে থাকলে যেহেতু সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি থেমে থাকবে না বা সূর্য একটু কম উত্তাপ ছড়াবে না, সে কারণে প্রায় এক দশক ধরেই বাংলাদেশ এই বিপদ মোকাবিলায় সীমিত সক্ষমতার ভেতরেও নিজস্ব অর্থায়ন করে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকার প্রতিবছর প্রায় এক বিলিয়ন বা একশ’ কোটি মার্কিন ডলার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে অর্থাৎ অভিযোজন খাতে ব্যয় করছে, যা বার্ষিক জাতীয় বাজেটের শতকরা ৬ থেকে ৭ ভাগ। প্রসঙ্গত, দেশে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের বিনিয়োগের তিন-চতুর্থাংশ আসে নিজস্ব রাজস্ব থেকে, বাকিটা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। যদিও সেখানে মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই পয়সা খরচের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে দেখা যাক, গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জাতীয় সংসদের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, সেখানে তিনি জলবায়ু খাতে কী রাখলেন?

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ২০টি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৮ হাজার ৯৪৮ কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দের অঙ্কের দিক দিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে যথাক্রমে অবকাঠামো এবং সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। যদিও সবচেয়ে কম বরাদ্দ রাখা হয়েছে জ্ঞান ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদারকরণ খাতে। বাস্তবতা হলো, জলবায়ু পরিবর্তন যেহেতু সরাসরি পরিবেশ ও আবহাওয়া বিজ্ঞানের বিষয় এবং জলবায়ু ব্যবস্থাপনায় প্রচুর কারিগরি বিষয় রয়েছে, ফলে জ্ঞান ও দক্ষতাবৃদ্ধিতে আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। মাঠপর্যায়ে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, বন, পরিবেশ ও পানি মন্ত্রণালয়সহ আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত কর্মকর্তাগণের এ বিষয়ে তাত্ত্বিক ও কারিগরি জ্ঞান বাড়ানো খুবই জরুরি। তাদের প্রকৌশল জ্ঞানও থাকা দরকার।

২০১৩-১৪ সালে আমি উপকূলীয় এলাকায় সরকারের জলবায়ু তহবিলের অর্থ কোথায় কীভাবে খরচ হচ্ছে, তা অনুসন্ধান করি। তখন উপকূলের গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাই। বিশেষ করে গৃহহীন মানুষের জন্য যে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল, সেখানে দেখা গেছে চারপাশে দেয়াল আর উপরে ছাদ ঠিকই আছে, কিন্তু কোনও দরজা-জানালা নেই। অনুসন্ধানে জানা যায়, দরজা-জানালার জন্য কোনও বরাদ্দ ছিল না। প্রশ্ন হলো, যারা ওই বাজেট তৈরি করেছিলেন, তা কী করে দরজা-জানালা ছাড়া একটি ঘর কল্পনা করলেন? এ বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যখন কথা বলি তখন তারা জানান, ওই ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছিল পার্টনারশিপের ভিত্তিতে। অর্থাৎ সরকার কিছু টাকা দেবে, আর যারা ওই ঘরে থাকবেন, অর্থাৎ সুবিধাভোগী, তারাও অংশ নেবেন। প্রশ্ন হলো, যে গরিব মানুষের জন্য ওই ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল, তাদের সেই আর্থিক সক্ষমতা আছে কিনা? বস্তুত ওই প্রকল্পে প্রচুর অর্থ লুটপাট হয়েছে। মাঠপর্যায়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি সম্পর্কে তারা খুব বেশি পরিষ্কার নন বা এ বিষয়ে তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণও নেই।

তবে মাঠকর্মীদের এই দক্ষতা ও জ্ঞানের চেয়েও বড় প্রশ্ন জলবায়ু তহবিল খরচের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংগঠন টিআইবিও বিভিন্ন সময়ে এই খাতে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে সরকার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে। এরপর এই তহবিলে প্রতিবছরই কমবেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বেশি নজর দেওয়ার কথা যে কক্সবাজারে, অর্থাৎ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে সরকারের বরাদ্দ কত তা জানা যায়নি। গত বছরের আগস্ট থেকে মিয়ানমার থেকে দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে থাকলে বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় ক্যাম্প নির্মাণ করে আশ্রয় দেয়। এতে উজাড় হয় প্রচুর বনভূমি, ধ্বংস হয় হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণির আবাসস্থল, ন্যাড়া হয় পাহাড়। এসব কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এখানে পাহাড় ধসের মতো বিপদ নেমে এলে হাজারো মানুষের প্রাণহানি হবে। যার কিছুটা ইঙ্গিত এরইমধ্যে পাওয়া গেছে।

রোহিঙ্গা সমস্যাটি আন্তর্জাতিক। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের মতো তারও সরাসরি ভিকটিম হচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকার প্রয়োজনেই রোহিঙ্গাদের কারণে হয়ে যাওয়া ক্ষতিপূরণে এবারের বাজেটে ওই এলাকায় পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে বাজেট আলোচনায় নিশ্চয়ই স্থানীয় এমপিরা দাবি তুলবেন। আর যেহেতু রোহিঙ্গা সংকটের দায়  কোনোভাবেই বাংলাদেশের নয়, তাই মিয়ানমারের কাছ থেকেই এর ক্ষতিপূরণ আদায়ে আন্তর্জাতিক তদবির জোরালো করা দরকার।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সারা বিশ্বেই যেভাবে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, একইভাবে তাদের জন্য গৃহীত সকল কর্মসূচিতে সরকারি অর্থ খরচে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা, সরকারি অর্থের নয়ছয়ের অভিযোগ আমাদের জনপ্রতিনিধি, আমলা, মাঠপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রকৌশলী, ঠিকাদার এবং স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। ফলে শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ দেওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং কোন অর্থ কোথায় কীভাবে খরচ হচ্ছে, তার ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের কী উপকার হচ্ছে এবং হবে, তা খুব পরিষ্কার থাকা দরকার। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন তহবিলের অনেক অর্থ যেহেতু উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আসে, তাই এখানে আরও বেশি স্বচ্ছতার দাবি রাখে। কেননা, ভবিষ্যতে এই তহবিলে আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হবে। কিন্তু যদি তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও তসরুপের অভিযোগ ওঠে, তাহলে দাতাগোষ্ঠী ও উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশকে এই খাতে কোনও সহায়তা দিতে কুণ্ঠিতবোধ করবে।  

‘টেকসই উন্নয়নে জলবায়ু অর্থায়ন’ শীর্ষক সরকারের একটি ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বার্ষিক শতকরা ৪ ভাগ পর্যন্ত কমতে পারে। সে কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো ক্রমবর্ধমান হারে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উৎস থেকে অর্থ জোগাড় করছে এবং তা জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যবহার করছে। ইউএনএফসিসিসির (The United Nations Framework Convention on Climate Change) প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য ২০৩০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক জিডিপির ০.৩ থেকে ০.৫ শতাংশ এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগের ১.১ থেকে ১.৭ শতাংশ অতিরিক্ত বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রবাহ দরকার। অর্থাৎ বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এবং দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা দেশ একদিকে যেমন জনসংখ্যার চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে, তারওপর রোহিঙ্গা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিপদ-আপদও একটার পর একটা আছড়ে পড়ছে। ফলে ভবিষ্যতে এসব খাতে প্রচুর অর্থপ্রবাহ প্রয়োজন হবে এবং যার জন্য প্রয়োজন টেকসই ও শক্তিশালী অর্থব্যবস্থা ও পদ্ধতি–যার মূল কথা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি।

লেখক: সাংবাদিক

/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ