ছয় হাজার বস্তা সরকারি চাল নিয়ে মোংলার পশুর নদে ডুবে যাওয়া বাল্কহেড থেকে চাল উত্তোলন শুরু হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে স্থানীয় ডুবুরির মাধ্যমে এই উত্তোলনের কাজ শুরু করে সোনারগাঁও শিপিং নামে চাল পরিবহনে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
তবে চালভর্তি বাল্কহেড ডুবে গেলেও চুক্তি অনুযায়ী সরকারি এই চালের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। একই সঙ্গে পানিতে ডুবে যাওয়া এই চাল কোনোভাবে মোংলা খাদ্য গুদামে ঢোকানোর চেষ্টা করা হলেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান আঞ্চলিক খাদ্য গুদাম খুলনার খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী।
তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব ও অসহায়দের জন্য মোংলা খাদ্য গুদামে ৩০০ টন চাল মজুত করার লক্ষ্যে গত ২৬ মার্চ খুলনার মানিকতলার মহেশ্বরপাশা সিএসডি (সেন্ট্রাল স্টোরেজ) থেকে ১২৫ টন চাল মোংলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাদের নিবন্ধিত পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুর রশিদ এন্টারপ্রাইজ এবং সোনারগাঁও শিপিং এই চাল পৌঁছে দেয়। বাকি ১৭৫ টন চাল নিয়ে ‘এমভি সাফিয়া’ নামক বাল্কহেড জাহাজ সোনারগাঁও শিপিং নামের পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রবিবার (৩১ মার্চ) ভোরে খুলনার মানিকতলাস্থ মহেশ্বরপাশা সিএসডি ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। পথিমধ্যে ওই দিন দুপুরের পর মোংলার পশুর নদের ত্রিমোহনায় দুর্ঘটনার শিকার হলে ১৭৫ টনের ছয় হাজার বস্তা চাল নিয়ে নৌযানটি ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
তবে চুক্তি অনুযায়ী একই মানের এই ছয় হাজার বস্তা চাল তাদের সরকারি গোডাউনে পৌঁছে দিতে হবে। এক্ষেত্রে চাল পরিবহনের সময় সব ধরনের দুর্ঘটনার দায়দায়িত্ব ওই পরিবহন ঠিকাদারকে নিতে হবে উল্লেখ রেখে তাদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যেকোনও দুর্ঘটনার ৪৫ দিনের মধ্যেই একই মানের চাল তাদের গোডাউনে শতভাগ পৌঁছে দিতে হবে বলেও জানান আঞ্চলিক খাদ্য গুদাম খুলনার খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী।
এদিকে সরকারি চাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বাল্কহেড (এক সুকান বিশিষ্ট) জাহাজ ব্যবহারে কতটা ঝুঁকিমুক্ত তা জানতে খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কন্ট্রোলার মুভমেন্ট মশিয়ার রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বাল্কহেড (এক সুকান বিশিষ্ট) জাহাজ ব্যবহার করা যাবে কিনা এই মুহূর্তে বলতে পারবো না। তবে চাল পরিবহনে ধারণক্ষমতার বাইরে কোনও নৌযান ব্যবহার হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রবিবার সোনারগাঁও শিপিং চাল পরিবহনে ধারণক্ষমতার বাইরে কোনও নৌযান ব্যবহার করেছে কিনা, সেটি লোড পয়েন্টে খোঁজ নেবো।’ এতে কোনও গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সরকারি চাল পরিবহনে গাফিলতির বিষয়ে জানতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁও শিপিংয়ের ব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, রবিবার খুলনা থেকে আসার সময় ছয় হাজার বস্তা সরকারি নিয়ে ‘এমভি সাফিয়া’ নামে একটি বাল্কহেড জাহাজ মোংলার পশুর নদের ত্রিমোহনায় ডুবে যায়। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব ও অসহায়দের জন্য মোংলা খাদ্য গুদামে এই চাল মজুত করার কথা ছিল।
আরও পড়ুন:
ঈদে গরিবদের জন্য আনা ৬ হাজার বস্তা সরকারি চাল নিয়ে ডুবলো জাহাজ!