স্থানীয় মাতব্বরদের বাধায় ইজিবাইক চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ছেলের লাশের জানাজা ও দাফন করতে পারেননি বাবা। আর তাই নিরুপায় হয়ে ছেলের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিতে বললেন তিনি। লাশটি ভাসিয়েও দেওয়া হয় নদীতে। পরে পুলিশ সেই লাশ উদ্ধার করে জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায়। চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাম প্রসাদ ভক্ত এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দিনগত রাতে গাজীরটেক ইউনিয়নের চর হোসেনপুর গ্রামে ইজিবাইক চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত হন হেলাল খাঁ (৩০)। শুক্রবার (১৯ মে) ময়নাতদন্ত শেষে হেলালের লাশ গ্রহণ করে পরিবার। কিন্তু মাতব্বররা লাশ দাফনে বাধা দেওয়ায় ওই দিন রাতেই আবার লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে। পরে শনিবার (২০ মে) দুপুরে ওই লাশ উদ্ধার করে পুলিশ জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করে।
নিহত হেলালের বাবা মোসলেম খা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ছেলের লাশ ওরা দাফন করতে দেয়নি। এই লাশ নিয়ে আর কী করব? তাই বাবা হয়ে আমি ছেলের লাশ নদীতে ফেলে দিতে বলেছি।’ পরে এলাকার মাতব্বররা লাশটি নদীতে ফেলে দেয় বলে জানান তিনি।
হেলালের মা শুক্কুরী বেগম বলেন, ‘শুক্রবার লাশটি দাফনের জন্য উপজেলার জাকেরের শুরা ভাঙ্গার মাথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের বাধায় তা আর দাফন করা যায়নি।’
এ বিষয়ে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাম প্রসাদ ভক্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে থানা থেকে নিহতের পরিবার লাশটি নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। পরে শনিবার এসআই আব্দুর রব ও এসআই মো. সাইদুর লাশটি উদ্ধার করে আবার ওই পরিবারের হাতে তুলে দেয়।’
ওসি রাম প্রসাদ আরও বলেন, ‘শনিবার দুপুরে হরিরামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়দুল বারী দিপু খানের সহযোগিতায় আরজখার ডাঙ্গী মৃধা বারী কবরস্থানে লাশটি দাফন করা হয়েছে।’
/এমএ/টিআর/