হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রয়াত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনায় বরিশালের কাউনিয়া মহাশ্মশানে দুই রাত ও এক দিনব্যাপী উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারত, নেপালসহ অন্যান্য দেশ থেকেও মানুষ বরিশালের এই দীপাবলি উৎসবে যোগ দিয়েছেন।
বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় ২০০ বছর আগে পাঁচ একর ৯৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় মহাশ্মশান। এ শ্মশানে পাকা ৩০ হাজার সমাধিসহ মোট সমাধি প্রায় ৫০ হাজার। সেখানে রয়েছে ভারত থেকে নিয়ে আসা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের সমাধি। এছাড়া বিপ্লবী দেবেন্দ্র নাথ ঘোষসহ অবিভক্ত বাংলা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক গুণী ব্যক্তির সমাধি রয়েছে এ শ্মশানে।
মঙ্গলবার দিনগত মধ্যরাত থেকে মোমবাতির আলোয় আলোকোজ্জ্বল হয়ে ওঠে পুরো শ্মশান এলাকা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া এ উৎসব শেষ হয় বুধবার দিনগত মধ্যরাতের পর পর্যন্ত। এ সময় শ্মশান কালীর পূজাসহ অন্যান্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানও পালিত হয়।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুণ্ডু বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও ভূত চতুর্দশীর পুণ্যতিথিতে মঙ্গলবার শুরু হওয়া দুই রাত একদিনব্যাপী শ্মশান দীপালি উৎসব শেষ হয় বুধবার রাত ১২টা ২ মিনিটে। এরপর অনুষ্ঠিত হয় শ্মশান কালীপূজা।’
প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবকে ঘিরে তোরণ নির্মাণসহ ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হয়। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় বসানো হয় ২০টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। পুরো উৎসব নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা হাতে নেয় মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং উৎসব কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা।
দীপাবলি উৎসবে প্রিয়জনের আত্মার শান্তি কামনার জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিশ্বের বিভিন্নস্থান থেকে স্বজনরা এখানে ছুটে এসেছেন। ফলে মহাশ্মশান এলাকা দেশ-বিদেশের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে মহাশ্মশানের একপাশে হরেক রকমের পণ্যের পসরা নিয়ে দুইদিনের মেলাও বসেছে।
আরও পড়ুন- আজ শ্যামা পূজা