X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে এক কৃষি কর্মকর্তার সংগ্রাম

নয়ন খন্দকার, ঝিনাইদহ
১৩ নভেম্বর ২০১৭, ১২:১৬আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:১৮

অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে এক কৃষি কর্মকর্তার সংগ্রাম কোনও ধরনের কৃত্রিম সার, রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। তাই এই অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

তার পরামর্শে ইতোমধ্যে উপজেলার কয়েক’শ কৃষক চাষাবাদ করছেন জৈব পদ্ধতিতে। এমনই একজন কৃষক সদর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের ইদ্রিস আলী। আগে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে চাষাবাদ করলেও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি এখন জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। এতে সফলও হয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে গ্রিনচাষি খেতাব অর্জন করেছেন ইদ্রিস। তার উৎপাদিত সবজি বা ফসলাদির চাহিদা রয়েছে ওই এলাকায়।

আর একজন কৃষক সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের দুদুমিয়া। তিনি ইতোমধ্যে তার কয়েক বিঘা জমিতে শুরু করেছেন জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ। সেক্সফেরোমন ট্র্যাপ ব্যবহার, কেচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন তার জমিতে।

কৃষক দুদুমিয়া বলেন, কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামানের পরামর্শে আমি রাসায়নিক সার ব্যবহার বাদ দিয়ে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছি। এতে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেমন জৈব সারের প্রয়োজন তেমনি উৎপাদিত সবজি মানব দেহের জন্যেও নিরাপদ ও সুস্বাস্থ্য রক্ষা হতে পারে। তাই রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে জৈব সার ব্যবহার করছি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বাজার থেকে আমরা যেসব খাবার-দাবার ও সবজি কিনে খাই, তার প্রায় সবগুলোর মধ্যেই বিভিন্ন কৃত্রিম সার, রাসায়নিক মিশ্রিত থাকে। এর ক্ষতিকারক প্রভাব আমাদের সবার ওপর পড়ছে। কৃত্রিম সার, রাসায়নিক দ্রব্য, ফরমালিন ইত্যাদির ব্যবহারে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, লিভারের ক্ষতিসহ নানা ধরনের রোগব্যাধির প্রকোপ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই অর্গানিক খাবার ও শাক-সবজি আমাদের নিজেদের জন্য তো দরকারই, শিশুদের জন্য এর প্রয়োজন আরও বেশি। এ কারণেই সদর উপজেলাকে বিষমুক্ত চাষাবাদের মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও সদর উপজেলায় ২৮০টি সিআইজি গ্রুপ ও ৩২০টি এসএফজি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এই কৃষক সংগঠনের মাধ্যমে কৃষকদের জৈব চাষে উঠান বৈঠক ও মাঠ দিবসের মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল এবং সবজির উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব৷ জৈব সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন খরচ রাসায়নিক সারের চেয়ে শতকরা ৫০-৬০ শতাংশ কম হয়৷ অর্গানিক খাবার ও শাক-সবজি হয়তো সামান্য ব্যয়বহুল। তবুও ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে আমাদের রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বর্জন করতে হবে। আর এতে সব থেকে বেশি প্রয়োজন সচেতনতা। তবেই আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বিষমুক্ত দেশ গড়তে পারবো।’

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঘোড়াঘাটে মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত
ঘোড়াঘাটে মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত
নির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের
শনিবার জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভানির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের
১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক
১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক
থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ