X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসির ফল প্রকাশ, সারাদেশে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
০৬ মে ২০১৮, ১৮:১৭আপডেট : ০৬ মে ২০১৮, ২২:৪৫

এসএসসির ফল প্রকাশের পর সারাদেশে বইছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন একে-অপরকে। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের নেচে-গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। রবিবার প্রকাশ হওয়া এসএসসির ফলে সারাদেশে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬১৯ জন। পাসের হার ৭৭. ৭৭ শতাংশ। এদিকে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে শুধু গণিতেই প্রায় ১৯ হাজার পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একে অপরকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে যশোর: যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, অংক ও ইংরেজি বিষয় দুইটিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করায় মূলত পাসের হার কমেছে।মোট পাসের হার ৭৬ দশমিক ৬৪। এরমধ্যে মেয়েরা ৭৮.৮৭ এবং ছেলেরা ৭৪.৪৪ ভাগ। মানবিক বিভাগের পরীক্ষার খারাপ রেজাল্টই মূল ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। ২০১৭ সালে মানবিক বিভাগে পাসের হার ছিল ৭১.৬১। এই বছর ৬৭.৮৬। গত বছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৪৬০ জন এবার ৯ হাজার ৩৯৫ জন।

সিলেট: সিলেট বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ১৯১জন। এরমধ্যে ছেলে ১ হাজার ৭৮১ ও মেয়ে ১ হাজার ৪৭৩জন। সিলেট জেলায় ৩৮,৫৬৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৮,৪৬৩ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১হাজার ৭৮১জন। এরমধ্যে ছেলে ৮৮০ ও মেয়ে ৭৮১। সিলেটে পাসের হার ৭৩.৮০ ভাগ। হবিগঞ্জ জেলায় ২২হাজার ৩৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৫হাজার ৭১৭ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৯৮ জন।  এরমধ্যে ছেলে ২৯৮ ও মেয়ে ১৯১জন। হবিগঞ্জে পাসের হার ৭০.৩৪ শতাংশ। মৌলভীবাজার জেলায় ২৪ হাজার ৪৮২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৬ হাজার ৪০১ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬৭২ জন। এরমধ্যে ছেলে ৩৫৩ ও মেয়ে ৩১৯জন। পাসের হার ৬৬.৯৯ শতাংশ। সুনামগঞ্জ জেলায় ২৩হাজার ৫৩৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৬ হাজার ১২৯জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৬৯ জন। এরমধ্যে ছেলে ১৮৭ ও মেয়ে ১৮২জন। পাসের হার ৬৮.৫৩.৯৯ শতাংশ।

রাজশাহী: রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮৬.০৭। যা গতবার ছিল ৯০.৭০ ভাগ। সেই হিসেবে এবার রাজশাহীতে পাসের হার কমেছে ৪ দশমিক ৬৩ ভাগ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১৯ হাজার ৪৯৮ জন। রাজশাহী জেলায় ৮৭.৫৯, চাঁপাইনবাবঞ্জ জেলায় ৮৩.১৭, নাটোর জেলায় ৮২.৩০, নওগাঁ জেলায় ৮৬.৫৪, পাবনা জেলায় ৮৮.২০, সিরাজগঞ্জ জেলায় ৮৫.০৪, বগুড়া জেলায় ৮৬.৪১ ও জয়পুরহাট জেলায় ৮৮.৬২ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। পাসের হার কমে যাওয়ার ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আনারুল হক প্রাং বলেন, পরীক্ষার্থীদের ওপর নির্ভর করে রেজাল্ট। তবে প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব পড়েনি। কারণ এটা গুজব ছিল। 

ময়মনসিংহ: মহানগরীর নামীদামী স্কুলগুলোর মধ্যে শুধু ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ শতভাগ পাস করেছে। ৫০জন পরীক্ষার্থীর সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ শতভাগ জিপিএ- ৫ পেয়েছে। ৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল।ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল সাদিকুল বারী জানান, ক্যাডেট কলেজের মনোরম পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের অধ্যবসায়, সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের সচেতনতা আর শিক্ষকদের একান্ত প্রচেষ্টাই ভাল ফলাফলের মূল কারণ।

কুমিল্লা জিলা স্কুলে আনন্দ গোপালগঞ্জ: জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে গোপালগঞ্জ এস এম মডেল গভঃ হাই স্কুল। ২১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ২১১ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৮.৬ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৩ জন।

দিনাজপুর: দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬২ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৭৫৫ জন শিক্ষার্থী। দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর রহমান জানান, শতভাগ পাস করা বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮৪টি। আর একজনও পাস করেনি এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫টি। বিদ্যালয়গুলো হলো- দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার নলবাড়ী গার্লস হাই স্কুল, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সারবানাদা গার্লস হাই স্কুল, একই জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার থুটিয়াপুকুর গার্লস হাই স্কুল, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভাদাই দক্ষিন পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীরহাট উচ্চ বিদ্যালয়। তিনি জানান,শুধু গণিতেই অকৃতকার্য হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর ৮৩ দশমিক ৯৯জন পাস করেছিল। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৯৪ জন। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ৩৪৪জন। বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাওয়ারিক আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরে পাসের হার বেশি। ৮৫ দশমিক ২২ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। মহানগর ছাড়া চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৭৭ দশমিক ২৬ শতাংশ। কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৭৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া তিন পাবর্ত্য জেলার রাঙামাটিতে পাসের হার ৬২ দশমিক ৭২ শতাংশ, খাগড়াছড়ি জেলায় পাসের হার ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং বান্দরবান জেলায় ৫৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত বারের মতো এবারও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বেশি পাস করেছে। এবার বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৯০ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও মানবিক বিভাগে পাসের হার মাত্র ৬০ দশমিক ১৩ শতাংশ।

মোবাইলে ফল পেয়ে দিনাজপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর উচ্ছ্বাস কুমিল্লা: কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার, জিপিএ-৫ ও শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। ৮০.৪০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৮৬৫ জন। শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৪টি। গত বছর পাসের হার ছিল ৫৯.০৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪হাজার ৪৫০জন। শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৪টি। এ বছর ১ কোটি ৮২ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। কৃতকার্য হয় ১ কোটি ৪৬ হাজার ৮৯৭ জন। বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৯৪.৩৮, মানবিকে ৬৭.৮৫, ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ৭৮.৮৫ শতাংশ। পাসের হারে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা এগিয়ে।

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আছাদুজ্জামান জানান, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের ছয় জেলার প্রাপ্ত ফলাফলে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছে চাঁদপুর জেলায়। এ জেলায় পাসের হার ৮৫.৮৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০২৫ জন। এছাড়া ফেনী জেলায় পাসের হার ৭৬.০৬, জিপিএ-৫ পায় ৬৩২; লক্ষ্মীপুরে পাসের হার ৭৭.৬৬, জিপিএ-৫ পায় ৩১০; নোয়াখালী জেলায় পাসের হার ৭৯.৯৯, জিপিএ-৫ পায় ৯৭৪; কুমিল্লা জেলায় পাসের হার ৮০.৮১, জিপিএ-৫ পায় ৩,০২২ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় পাসের হার ৭৮.৫২, জিপিএ-৫ পায় ৯০২ জন শিক্ষার্থী। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের মোট ১,৭০৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ।

প্রফেসর ড. মো. আছাদুজ্জামান জানান, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ, গণিত ও ইংরেজিতে পাসের হার বৃদ্ধি, গত বছর ফল খারাপ হওয়ার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সমন্বয়ে নিয়মিত মতবিনিময় সভা এবং নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার ফলে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে এ বছর পাসের ২০.৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বরিশাল: বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ১১ ভাগ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৪ শত ৬২ জন শিক্ষার্থী। গত বছর এ বোর্ডের পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ২৪ ভাগ। গত বছরের চেয়ে এ বছর পাসের হার কমেছে দশমিক ১৩ ভাগ,  তবে জিপিএ ৫ বেড়েছে  ১১৭৪  টি। গত বছর এ বোর্ডের পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ২৪ ভাগ এবং জিপিএ-৫ ছিল ২২৮৮। তবে এবারও পাসের হার এবং জিপিএ-৫-- এ উভয় ক্ষেত্রেই মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল আজিম জানান, বিভাগের ৬ জেলার মধ্যে ৮৩ দশমিক ০২ পয়েন্ট নিয়ে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। এরপর যথাক্রমে ১১ বিদ্যালযের সব পরিক্ষার্থীসহ ৮১.৭০ পাসের হার নিয়ে বরগুনা, ৪ বিদ্যালযের সব পরিক্ষার্থীসহ ৮০.৭২ পাসের হার নিয়ে পিরোজপুর, ১৬ বিদ্যালযের সব পরিক্ষার্থীসহ ৭৬.৯৫ পাসের হার নিয়ে বরিশাল, ৬ বিদ্যালযের সব পরিক্ষার্থীসহ ৭৪.৬২ পাসের হার নিয়ে পটুয়াখালী এবং ৩ বিদ্যালযের সব পরিক্ষার্থীসহ ৬২.২৫ পাসের হার নিয়ে ঝালকাঠি জেলা রয়েছে। তবে ঝালকাঠি জেলার নলছিটির একটি বালক (১৭জন) ও একটি বালিকা (৫জন) বিদ্যালয় এবং পটুযাখালীর দুমকীর একটি বালক বিদ্যালয়ের (৭জন) কোনও পরিক্ষার্থীই পাস করেনি।

 

 

/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ