অতিবৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে নগপাড়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। বুধবার (১৩ জুন) বেলা ১১টা থেকে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়। এতে ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সড়কের ওপর জমে থাকা পানি ঘরমুখো যাত্রী, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সব পেশাজীবীর দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিস, অনুপম সুপার মার্কেট, সড়ক পরিবহন অফিস, রহমান শপিংমল, ইসলাম প্লাজা, মসজিদ মার্কেটের সামনে পানি জমে আছে। পানির মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনা ও রিকশা রাখা আছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনের নোংরা জমে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পানি ও দুর্গন্ধের মধ্যে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে পথচারীদের।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ছুটি শুরু হয়েছে। ছুটি পেয়ে পোশাক শ্রমিকরা গাজীপুর ছাড়তে শুরু করেছেন। কিন্তু সকালে বৃষ্টিপাত, রাস্তায় গাড়ি ও যাত্রীর চাপ থাকায় ঘরমুখো এসব শ্রমিক চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
আলমগীর হোসেন নামে একজন পথচারী বলেন, ‘মহাসড়কের পাশ দিয়ে তৈরি করা পানি প্রবাহের ড্রেন সরু হওয়ায় দ্রুত পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। ফলে রাস্তায় পানি জমে থাকছে এবং যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ভোগড়া-বাইপাস মোড়ে পানি জমে থাকায় যানবাহন চালাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
স্থানীয় ইসলাম প্লাজার একজন ব্যবসায়ী মোতাহার খান জানান, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করায় যাত্রীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি ফুটপাতের পথচারী ও ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে।
অনুপম সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী এমদাদুল হক বলেন, ‘অল্প বৃষ্টিতে মহাসড়কের পাশে পানি জমে যাওয়ায় অনেক সময় আশপাশের দোকানে পানি উঠে যায়। ১০ মিনিট বৃষ্টি হলে জমে থাকা পানি সরতে লাগে ৪-৫ ঘণ্টা। ক্রেতারা মার্কেটে আসতে পারেন না। এতে বেচাকেনায় প্রভাব পড়ে।’
ফুটপাতের ব্যবসায়ী কাজল মিয়া বলেন, ‘রহমান শপিংমলের সামনে প্রতিদিন দুই শতাধিক হকার বসেন। বৃষ্টি নামলে জলাবদ্ধতার কারণে দোকান বসানো যায় না। সামনে ঈদ। এ অবস্থায় ছেলেমেয়েদের পোশাক কিনে দেওয়া তো দূরের কথা, সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা দ্রুত সমস্যার সমাধান চাই।’
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজা বলেন, ‘ঢাকা- জয়দেবপুর সড়কটি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটি) প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। জলাবদ্ধতার জন্য ড্রেন নির্মাণসহ সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে সমস্যা থাকবে না।’
পুলিশ জানায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সকাল থেকে পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মহাসড়কের উভয় পাশে অবৈধ দোকানপাট বসতে দেওয়া হচ্ছে না এবং কোনও ধরনের যানবাহন পার্কিং করতেও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে সড়কের এক লেন দিয়ে থেমে থেমে যানবাহন চলছে।
গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মহাসড়কে যানজট এড়াতে পুলিশ, আনসার ও ট্রাফিক সদস্যরা দুদিন ধরে কাজ করছে। বৃষ্টিপাতের কারণে মহাসড়কের পাশে পানি জমে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটা সাময়িক। পানি সরে গেলে যানজট থাকবে না। এখন গাড়ি মোটামুটি স্বাভাবিকভাবে চলছে।’