বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, ‘বিএনপির নেতারা খুলনা এবং গাজীপুরের নির্বাচনকে বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত করতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়েছে। বিএনপির নেতারা মোবাইলে তাদের ক্যাডার দিয়ে নির্বাচনি কেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়ে নির্বাচনকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বির্তক সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে। তারা হেরে গেলে বলে সুষ্ঠু হয়নি, আর জিতে গেলে বলে ফেয়ার হয়েছে।’
শুক্রবার বিকাল ৪টায় শহীদ হাদিস পার্কে মহানগর শ্রমিক লীগ আয়োজিত খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি)নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র যে অভিযোগ তুলেছে সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘আজ একটি দেশ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। যারা নিজেদের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে, তাদের অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা অগ্রহণযোগ্য। যারা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে নাই, তাদের মুখে বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র রক্ষার কথা মানায় না।’
হানিফ বলেন, ‘খুলনার মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বুঝিয়ে দিয়েছে, উন্নয়নের বিকল্প কিছু নেই। খুলনা তথা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন তালুকদার আব্দুল খালেককে নৌকায় ভোট দিয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ শেখ হাসিনা এবং নৌকার ওপর আস্থা রাখে। খুলনার মানুষ নির্বাচনের সুবাতাস সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই সুবাতাসের কারণেই গাজীপুরসহ সারা দেশে বিজয়ের ঝাণ্ডা নিয়ে মানুষ উন্নয়নের পক্ষে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই আস্থার জায়গাকে দুর্বল করতে বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।’
নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দেশ ও জনগণের কোনও উন্নয়ন হয় না। তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনার মেয়র থাকাকালীন ৭শ’ কোটি টাকা রেখে গিয়েছিলেন। সেই টাকা যথেচ্ছা খরচ করেছে অথচ নগরীর কোনও উন্নয়ন হয়নি। নগরীর উন্নয়ন বন্ধ রেখে সেই অর্থ লুটপাট করেছে। জনগণ এই লুটপাটের জবাব দিতেই খুলনা এবং গাজীপুরে নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখার রায় দিয়েছেন। এই রায়কে সামনে রেখে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে চতুর্থ বারের মতো দেশ পরিচালনায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে হবে।’
মহানগর শ্রমিক লীগ সভাপতি আবুল কাশেম মোল্লার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রনজিত কুমার ঘোষের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন। বিশেষ বক্তা ছিলেন সদর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাড. মো. সাইফুল ইসলাম।
নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘খুলনাকে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করতে ইতোমধ্যেই জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সাড়ে ১৪শ’ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছি। এই প্রকল্পের অনুমোদন পেলে খুলনাকে তিলোত্তমা নগরী গড়ার কাজ শুরু করবো ইনশাল্লাহ।’ তিনি আরও বলেন, ‘উন্নয়নবঞ্চিতহওয়ায় খুলনার মানুষ যেমন আমাকে ভোট দিয়েছে, ঠিক একই কারণে গাজীপুরের মানুষ জাহাঙ্গীর আলমকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেছে।’ তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করে শেখ হাসিনাকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করতে দলের নেতাকর্মী এবং খুলনাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।