১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ পাক হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধারা মানিকগঞ্জকে মুক্ত করে বিজয়ীর বেশে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে সমবেত হন। এখানে আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল হক চাঁন মিয়ার সভাপতিত্বে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধে ৫৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৯ জন মুক্তিসেনা পঙ্গু হয়ে যান।
১৯৭১ সালে মানিকগঞ্জ সিঅ্যান্ডবির ডাকবাংলো পাক হানাদার বাহিনীর সদর দফতর ছিল। সেখান থেকেই হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা বাঙালি নিধনযজ্ঞ পরিচালনা করত। মানিকগঞ্জের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ গোলাইডাঙ্গা যুদ্ধ। সিংগাইর থানার এ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন তোবারক হোসেন লুডু। গোলাইডাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প দখলের জন্য তিন শতাধিক পাকসৈন্য ১০-১২টি নৌকা নিয়ে সেখানে আসে। এই খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নেন। শত্রুরা আয়ত্তের মধ্যে আসার পর দ্বিমুখী আক্রমণে একজন কর্নেলসহ ৮১ পাকসেনা মারা যায়।
মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য মানিকগঞ্জে অ্যাডভোকেট খন্দকার চান মিয়াকে চেয়ারম্যান করে মো. মোসলেম উদ্দিন খান হাবু মিয়া, ক্যাপ্টেন ( অব.) আবদুল হালিম চৌধুরী, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, সৈয়দ আনোয়ার আলী চৌধুরী, মীর আবুল খায়ের ঘটু, মফিজুল ইসলাম খান কামাল– এই সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাদের নেতৃত্বে মানিকগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা হয়।