X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:২৩আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:২৭

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আজ ১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাকিস্তানি সেনা এবং তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল-শামস বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে মুক্ত করে। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর, গোলাম নবী সাটুসহ নাম না জানা লাখ লাখ শহীদ মরণপণ যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করে উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ।

মুক্তিযুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিলো ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন। ৭ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন লে.কর্ণেল কাজী নুরুজ্জামান চেীধুরী। তার নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় এই অঞ্চলে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে শুত্রু মোকাবেলার যুদ্ধ। ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহুকুমায় ছিল ২টি সাব সেক্টর। একটি মোহদিপুর সাব সেক্টর অন্যটি দলদলী সাব সেক্টর। মোহদিপুর সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এবং দলদলী সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন লে. রফিক।

৭১’র মার্চ মাসে যুদ্ধ শুরু হলেও প্রথমদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যুদ্ধের তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। ১৯ এপ্রিল রাতে শহরে বোমা বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পাকবাহিনী। শহর দখল করে ব্যাপক ধ্বংষযজ্ঞ চালায় তারা। তারপরই পাকবাহিনীকে প্রতিহত করতে সংগঠিত হতে থাকে মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় প্রশিক্ষণ নিতে ভারতেও পাড়ি জমান অনেকে। শেষের দিকে জেলার বেশ কিছু স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে আহত ও নিহত হয় অনেকে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ নভেম্বর লে. রফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মকরমপুর ও আলীনগর পাকা ঘাটিতে অতর্কিত আক্রমণ চালালে ৫ পাক সেনা নিহত হয় ও অন্যরা মহানন্দা নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। অপরদিকে ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চর বাগডাঙ্গা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য অগ্রসর হয় এবং পাক সেনাদের বাংকার দখল করে নেয়। ১৩ ডিসেম্বর যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং ওই দিন  মুক্তিযোদ্ধারা সাড়াশি আক্রমণ চালায় পাকসেনাদের বিরুদ্ধে। সেইদিন রাতে হরিপুর ব্রিজের কাছে সংঘটিত যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর নায়েক নবির উদ্দীনসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা। এতে ৯ জন গ্রামবাসীও নিহত হয়।

দেশ শত্রুমুক্ত হবার দুই দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর জেলা শহরের মহানন্দা নদীর পাদদেশ রেহাইচর এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর গুলিতে বীরের মত নিহত হন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। এই খবর পেয়ে ৭ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং পরে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দীন, লে. রফিকুল ইসলাম, লে. আব্দুল কাইয়ুম খান স্ব-স্ব বাহিনী নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর বিকালে আবারও তুমুল যুদ্ধে নেমে পড়েন। গভীর রাতে শেষ হয় সেই যুদ্ধ। পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্ধার করা হয় ক্যাপ্টেনের লাশ এবং তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদে নিয়ে গিয়ে তার লাশ সমাহিত করেন মুক্তিযোদ্ধারা এবং শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর। 

/এসএসএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ধানক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে বুনো হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত
ধানক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে বুনো হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত