লোকবল সংকটসহ নানা কারণে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ভেলুরপাড়া রেলস্টেশনের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় চার বছর ধরে স্টেশন মাস্টার নেই সেখানে। ফলে অফিসের দরজা খোলা হয় না, বাজে না ঘণ্টাও। দুটি মেইল ট্রেনের স্টপেজ থাকলেও কেউ বিষয়টি জানেন না। ফলে এ স্টেশন থেকে মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এলাকাবাসী এ স্টেশনে অবিলম্বে লোকবল নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৩৭ সালে ভেলুরপাড়া স্টেশন স্থাপন করা হয়। এখানে দুজন স্টেশন মাস্টার, একজন সিগন্যালম্যান, একজন গেটকিপার ও একজন পয়েন্টম্যান থাকার কথা। সেখানে আছে শুধু গেটকিপার ও সিগন্যালম্যান। স্টেশন মাস্টার আজাহার আলী ২০১৫ সালের ২৯ জুন অবসরে যান। এরপর আর কোনও মাস্টার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে একজন মাস্টারকে প্রায় বছরখানেকের জন্য ডেপুটেশনে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে স্টেশন মাস্টারের ঘর বন্ধ রয়েছে।
স্টেশনের পাশে একটি ডিগ্রি কলেজ, দুটি মাদ্রাসা, একটি উচ্চবিদ্যালয়, ৩-৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮-১০টি চাতাল ও ব্যাংক-বীমার অফিস আছে। অথচ মাস্টারের অভাবে যাত্রীদের মালামাল বুকিং বা টিকিট কাটার সুযোগ নেই। ফলে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্টেশন মাস্টারের ঘরে পার্শ্ববর্তী মসজিদের বৈদ্যুতিক মোটরের ও বাতির সুইচ থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্টেশনে বাজানো হয় না ঘণ্টা। ট্রেন আসে চলে যায়। বৈদ্যুতিক বাতি না জ্বলায় সন্ধ্যার পর পুরো স্টেশন চত্বর অন্ধকার থাকে। পুরো এলাকা চলে যায় মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের দখলে। স্টেশনে রেলের দুটি লাইন থাকলেও প্রায় দুই বছর ট্রেনের ক্রসিং বন্ধ রয়েছে। সিগন্যাল ছাড়াই কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। তাই যেকোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
এলাকাবাসী জানান, এ ব্যাপারে রেল বিভাগের কারও নজরদারি নেই।
বগুড়া রেলস্টেশনের মাস্টার বেঞ্জুরুল ইসলাম জানান, নিয়োগ বন্ধ থাকায় আপাতত ভেলুরপাড়া স্টেশনে মাস্টার দেওয়ার সম্ভবনা নেই। বেসরকারি কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে থাকে। আর ওইসব ট্রেনের কর্মচারীরা টিকিট প্রদান ও মালামাল বুকিং করে থাকে।