দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। উৎসবমুখর পরিবেশ ও নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত সম্পন্ন করতে সেখানে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এটি হবে ১৯২তম ঈদুল আজহার জামাত। সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ঈদের জামাত। ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ।
এবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সাজানো হচ্ছে পুরো আয়োজন। ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে।
ঈদের জামাত আয়োজনের তোড়জোড় চলছে শোলাকিয়ায়। জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং পৌরসভা শোলাকিয়ার জামাতকে সফল করতে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলাসহ শোলাকিয়া মাঠকে জামাতের উপযোগী করার কাজ শেষ হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা ও টয়লেট। চলছে শহরের শোভাবর্ধনের কাজও। প্রস্তুত রাখা হেয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিক্যাল টিম। দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
পৌর মেয়র পারভেজ মিঞা বলেন, ‘মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, মেডিক্যাল টিম, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি এবারের জামাতেও কিশোরগঞ্জসহ জেলার আশপাশের অন্যান্য জেলার মুসুল্লিরা নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করবেন।
জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘আশা করছি বরাবরের মত এবারও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দেশের সবচেয়ে বড় জামাত শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে।’
পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ‘নামাজের সময় দুই প্লাটুন বিজিবি, ৯ শতাধিক পুলিশ, র্যা ব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিশ্ছিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোষাকে নজরদারি করবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এছাড়াও মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। সুনির্দিষ্ট ৮টি গেট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করবে মুসল্লিরা। সবমিলিয়ে শোলাকিয়া মাঠে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলয় থাকবে।’
রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শটগানের ৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি, এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে জামাত শুরুর সঙ্কেত দেওয়া হবে।
জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।