X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিপক্ষের গুলিতে চবি ছাত্র খুন: ৫ বছরেও বিচার পায়নি তাপসের পরিবার

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
১০ অক্টোবর ২০১৯, ২২:৩৭আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:২০

তাপস সরকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র তাপস সরকার। ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সামনে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর কেটে গেছে পাঁচ বছর। কিন্তু এখনও বিচার পায়নি তাপসের পরিবার। তিন বছর আগে তদন্ত কর্মকর্তা ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর এখন থমকে আছে এই মামলার বিচার কাজ।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাপসের ছোট ভাই শ্রাবণ সরকার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ভাই খুন হয়েছেন পাঁচ বছর পার হতে চললো। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের কোনও বিচার হয়নি। দীর্ঘদিন মামলাটি স্থবির হয়ে পড়ে আছে। আদৌ ভাই হত্যার বিচার পাবো কিনা জানি না। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভাইয়ের শোকে আমার মা পাগলের মতো হয়ে আছেন। প্রতিদিন ভাইয়ের জন্য কান্না করেন। অথচ ক্যাম্পাসে বুক উঁচু করে হেঁটে বেড়ান আসামিরা।’

১৪ ডিসেম্বর তাপস গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তার সহপাঠী হাফিজুল ইসলাম হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় ২০১৬ সালের ২ মে চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান। অভিযোগপত্রে ২৯ জনকে আসামি করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, তাপস হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশা। তার গুলিতে তাপস নিহত হন। বাকি ২৮ আসামির মধ্যে তিন জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা এবং ২৫ জনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের মধ্যে আশরাফুজ্জামানসহ ১৫ আসামি পলাতক। বাকি ১৪ আসামি জামিনে আছেন।

মামলার অগ্রগতি নিয়ে তেমন কিছু জানাতে পারেনি মামলার বাদী হাফিজুল ইসলাম।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাফিজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চার্জশিট দেওয়ার পর মামলার আর কোনও অগ্রগতি নেই। এখন কী অবস্থায় আছে আমি জানি না।’


আসামিরা তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেন জানিয়ে হাফিজুল বলেন, ‘শুরু থেকে প্রধান আসামি পলাতক রয়েছেন। অন্য আসামিরাও জামিনে বের হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কয়েকজন আসামি ক্যাম্পাসে এখনও ঘোরাফেরা করেন। তারা আমাকে বেশ কয়েকবার মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার কাজ ছিল তদন্ত করে চার্জশিট দেওয়া, আমি চার্জশিট জমা দিয়েছি। এরপর এটি আদালতের বিষয়। আদালতে যদি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকে আমি যাবো। মামলাটি কেন থেমে আছে সেটি আদালতই ভালো বলতে পারবেন।’
তাপস সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠন সিএফসি’র কর্মী ছিলেন। ওই গ্রুপের নেতা রেজাউল হক রুবেল বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল হক রুবেল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাপস হত্যা মামলার বিচারকাজ কেন থেমে আছে আমার জানা নেই। এই হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ হোক আমরা সেটি চাই। যারা তাপসকে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিচার থমকে আছে এটি আমাদের যতটুকু কষ্ট দেয়, তার চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট পাই যখন দেখি তাপসের খুনিরা ক্যাম্পাসে দাপট নিয়ে ঘুরে বেড়ান।’

 

/এআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিক্রির জন্য সবজি কিনে ফেরার পথে দুই ব্যবসায়ী নিহত
বিক্রির জন্য সবজি কিনে ফেরার পথে দুই ব্যবসায়ী নিহত
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
রাজধানীতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ
রাজধানীতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ
প্রচণ্ড গরমে দই-ফলের এই ডেজার্ট বানিয়ে খান
প্রচণ্ড গরমে দই-ফলের এই ডেজার্ট বানিয়ে খান
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি