দীর্ঘ পাঁচ বছর পর হতে যাচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। আগামী ২৬ অক্টোবর শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নেতৃত্বের এ পালাবদল ঘিরে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, নানা কারণে যারা সমালোচিত হয়েছেন, তারা বাদ পড়ে এবার সৎ ও যোগ্যরা নেতৃত্বে আসবেন।
উল্লেখ্য, সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। কে হচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে এখন শ্রীপুর পৌরসভার বিভিন্ন বাজার ও চা স্টলে চলছে আলোচনা-গুঞ্জন। সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। পদ-পদবি দাবি করে প্রার্থীদের সমর্থকেরা পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে ফোরামের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। কিছু কিছু জায়গায় সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করতে দেখা গেছে।
সম্মেলনকে সামনে রেখে ১২ অক্টোবর শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় একটি প্রস্তুতিমূলক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির হিমুকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জুলহাস উদ্দিন মাস্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক কফিল উদ্দিন মণ্ডল ও শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক জানান, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত ও দলীয় কর্মকাণ্ডে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদেরই শীর্ষ দুই পদে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও ইমেজ খারাপ– এমন কেউ নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। যারা আসবেন তাদের অবশ্যই সৎ, অভিজ্ঞ ও সাংগঠনিকভাবে যোগ্য হতে হবে।’
মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ কমিটিতে ত্যাগী, নির্যাতিত ও দক্ষদের গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মাদক সেবনকারী ও মাদকের সঙ্গে জড়িত কোনও নেতাকর্মী দলে প্রবেশ করে সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে পারবে না। আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি।’
সম্মেলন প্রসঙ্গে কথা হয় শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে আমরা ইতোমধ্যে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছি। স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েই কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সারা শ্রীপুরে নেতাকর্মীসহ শ্রীপুরবাসীর মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আর এ সম্মেলনের মাধ্যমে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীরাই কমিটিতে স্থান পাবেন।’
আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি পদে সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন– সাবেক শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, শ্রীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আমজাদ হোসন, নূরে আলম মোল্লা ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ।
সভাপতি প্রার্থী নূরে আলম মোল্লা বলেন, ‘আমি মনে করি, নেতৃত্বে যেই আসুক তার যেন অবশ্যই দলে অবদান, সততা, স্বচ্ছতা ও প্রতিশ্রুতি থাকে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায় উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কমিটি গঠনের কাজ শেষ হয়েছে। এতে দল আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।’
সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে ওয়ার্ড কমিটিগুলো আরও সুসংহত হবে বলে আশা করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।